স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার চক্রান্ত হয়েছিল- প্রধানমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :  ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাস, স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্ল্যাহের সভাপতিত্বের আলোচনা সভায় অন্যানের‌ মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বজলুর রহমান। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অন্য মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের বিভিন্নস্তরের নেতৃবৃন্দ, দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন জিয়াউর রহমান। তার শাসনামলেই দেশে গুম খুনের সংস্কৃতি শুরু। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বার বার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাস মুছে ফেলার চক্রান্ত হয়েছিল।বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। খালেদা জিয়াও খুনিদের সংসদে এনে পুরস্কৃত করেছেন।

জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখলকে উচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছে, ফলে বিএনপির সৃষ্টিও অবৈধ হয়ে যায় বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

দেশে গুম খুনের সংস্কৃতি শুরু করেছিল বিএনপি ও জিয়াউর রহমান এই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সে সময় সব নেতাদেরই কিন্তু গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং তারা কারাগারেই ছিল। ৩ নভেম্বর ওই কারাগারে হত্যাকাণ্ড ঘটে। ৭৫ সাল থেকে ৮৯ সাল পর্যন্ত আমাদের সকল নেতা-কর্মীরা কারাগারে বন্দি। বিভিন্ন জায়গায়, আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়। বহু নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে গেছে, অত্যাচার করেছে, তার পরিবার লাশটাও পায় নি। আজকে তারা গুম-খুনের কথা বলে, এই দেশে গুম-খুনের কালচারটা শুরু করেছিল জিয়াউর রহমান।

জিয়ার বিএনপি আমলে নিজ দলের নেতা-কর্মীদের হত্যার বিষয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজ বাবু তাকে যে তুলে নিয়ে গেল, তার পরিবার তো আর তার লাশ পায় নি। চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দকে ধরে নিয়ে টর্চার করে মেরে ফেলে দিল, তার ঠিকানাও কেউ পায় নি। বগুড়ার যুবলীগ নেতা- পটল, তাকেও এইভাবে খুন করলো। একইভাবে একে একে যদি খোঁজ করে দেখা যায়, আমাদের অগুনিত নেতা-কর্মীদের তারা এইভাবে তুলে নিয়ে গেছে, নিয়ে যাওয়ার পর অত্যাচার করেছে, পঙ্গু করে দিয়েছে, অসুস্থ করে দিয়েছে, লাশ গুম করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শুধু যে রাজনৈতিক দলের ওপর এই জুলুম অত্যাচার তা নয়, সেনাবাহিনীতে যারা মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ছিল, যারা একদিন জাতির পিতার ডাকে সারা দিয়ে যুদ্ধ করেছিল, তাদের নির্মমভাবে একের পর এক হত্যা করেছে। ৭৫’এর পর একের পর এক ১৯টা ক্রু হয়েছে। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী শত শত অফিসার, সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অনেকে জানেই না তাদের কি অপরাধ। তাদের অপরাধ নিয়ে তারা জানতো না, তেমনি নিজের আত্মপক্ষ সমর্থন করারও কোন সুযোগ ছিল না। দিনের পর দিন ফাঁসি দিয়ে যেমন মেরেছে, গুলি করেও মেরেছে। শোনা যায়, জিয়াউর রহমান টেবিলে বসেই কাঁটা চামচ দিয়ে খেত আর এ ধরনের মৃত্যুদণ্ডের ফাইলে স্বাক্ষর করতো। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যারা ছিল, তারা বলতে পারবে, এমন এমন রাত, ৮ জন-১০ জন করে জোড়ায় জোড়ায় ফাঁসি দিয়েছে এবং তাদের চিৎকার কান্নায় বাংলার আকাশ ভারি হয়েছে। তাদের পরিবার জানতেও পারে নি। তার চরিত্রটাই এ ধরনের খুনের।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা হয়েও যারা কোন না কোনভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যার চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত তারা কিন্তু ঠিকই পরবর্তীতে মোশতাকের পরে জিয়ার সাথেই গেছে, এখনও অনেকে বেশ বড় বড় কথাও বলে কিন্তু তারা সে এ চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত তাতে কোনও সন্দেহ ছিল না এবং আজকে না প্রমাণিত হয়।

তিনি বলেন, সামরিক স্বৈরচারী শাসকরা যখন ক্ষমতা নেয় তখন তাদের মধ্যে এক সুপ্ত বাসনা থাকে, রাজনৈতিক নেতা হওয়ার। যদিও তারা রাজনৈতিক নেতাদেরই গালি দেয়। মোশতাক বেঈমানি করে ক্ষমতায় গিয়েছিল, আড়াই মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারে নাই। ঠিক যেভাবে মীর জাফর বেঈমানি করে সিরাজ-উদ-দৌলাকে পরাজিত করেছিল, মীর জাফরও কিন্তু ২ মাসের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারে নি। মীর জাফর নামটাই বেঈমান হিসেবে পরিচিত। ঠিক মোশতাকের ভাগ্যেও তাই ঘটলো, সেও থাকতে পারলো না। কিন্তু এই মোশতাকই কিন্তু জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে ৭১ এর মত হত্যা নির্যাতন চালিয়েছে। জঙ্গীবাদ, অর্থপাচারসহ দেশজুড়ে অস্থিরতা চালিয়েছিল বিএনপি।তিনি বলেন, এখন আর কেউ বাংলাদেশকে পিছনের দিকে ঠেলে দিতে পারবে না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.