কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্ট নগরবাসী

0

ঢাকা :  ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত ৫৩২টি স্থানের সব পয়েন্টে পশু কোরবানিতে নগরবাসীর আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। বেশ কিছু স্থানে পশু কোরবানি হলেও সেখানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়নি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় বেশ কিছু নির্ধারিত স্থানে নগরবাসীকে জমায়েত হতে দেখা গেছে। অবশ্য নির্ধারিত সব স্থানে পশু কোরবানি না হলেও এবারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার চিত্র অতীতের বছরগুলোর তুলনায় সন্তোষজনক ছিল বলে মনে করছেন নগরবাসী।

রাজধানীতে ঈদের দিন ও পরদিন নগরীর বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির সিদ্ধান্তের সফলতা-ব্যর্থতা প্রসঙ্গে ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক বলেন, নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির এই সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জের বিষয়। তারা এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন সেটা করেছিলেন। তার পরও সব পয়েন্টে নগরবাসী পশু কোরবানি দেননি।

এবার কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য তারা ৪৮ ঘণ্টা সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু ২৭ ঘণ্টার মধ্যেই সব বর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছেন। এ জন্য সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। এ ছাড়া অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করা হয়েছিল। বিভিন্ন উদ্যোগের কারণেই দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজধানীকে কোরবানির বর্জ্যমুক্ত করা গেছে।

জানা গেছে, নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির ব্যাপারে দুই সিটি করপোরেশনের তেমন কোনো কড়াকড়ি ছিল না। পশু কোরবানির জন্য উপযুক্ত করে স্থানগুলো তৈরিও করে দিতে পারেনি সিটি করপোরেশন। বেশ কিছু স্থানে শামিয়ানা টাঙিয়ে দেওয়া হলেও বিস্তৃতি ছিল খুবই কম। কিছু স্থানে কাদাপানি থাকায় তা পশু কোরবানির সম্পূর্ণ অনুপযোগী ছিল। ঈদের আগের রাতে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানির ব্যাপারে শিথিলতার ঘোষণা দেওয়ার কারণে অনেকে ওই সব স্থানে পশু কোরবানি দিতে যাননি। এ জন্য ডিএসসিসির নির্ধারিত স্থানে অনেকেই পশু কোরবানি দিতে আগ্রহ বোধ করেননি।

তবে এ কারণে নগরবাসীর মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে বলে মনে করেন দুই সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা বলেন, বাড়ির আঙিনা বা রাস্তায় পশু কোরবানি করলেও তারা নিজ উদ্যোগে পানি দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করেছেন। পরে বি্লচিং পাউডার ছিটিয়ে দিয়েছেন। তার ওপর দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরবাসীর মধ্যে প্রায় ৪ লাখ পলিব্যাগ সরবরাহ করা হয়েছিল। এসব পলিব্যাগেও নগরবাসী বর্জ্য সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেছেন। এতে বর্জ্য সংগ্রহের কাজ সিটি করপোরেশনের কর্মীদের জন্যও অনেকটা সহজ হয়ে যায়।

গতকাল নগর ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমের সফলতা তুলে ধরে বলেন, নাগরিকদের সহযোগিতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সফল হয়েছে। এবার ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী দুই দিনের মধ্যে ১৬ হাজার টন বর্জ্য অপসারণে সক্ষম হয়েছে। ১৮ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করেছিল ডিএসসিসি। এর পরও কিছু বর্জ্য দুয়েকটি স্থানে থাকতে পারে। সেগুলো সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার না করা পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের বিশেষ অভিযান চলবে। তিনি বলেন, এ ছাড়া প্রতিদিনই নগরীতে বর্জ্য উৎপাদন হয়। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।

নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি না করা প্রসঙ্গে সাঈদ খোকন বলেন, ডিএসসিসির ৩২৮টি স্থানের মধ্যে ৩২৪টি স্থানে ছাউনি, পানিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। অনেকেই সিটি করপোরেশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেখানে গিয়ে পশু কোরবানি দিয়েছেন। তবে প্রায় লক্ষাধিক পশু কোরবানির জন্য ৩২৮টি স্থান নগণ্য। ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.