চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের অবস্থান

0

শিক্ষাঙ্গণ : ফাঁসকৃত প্রশ্নে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্ত্বরে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।

‘ফাঁসকৃত পরীক্ষায় ডাক্তার হলে, রোগী মরবে গণহারে’, ‘প্রশ্ন যদি হবে ফাঁস, পড়ব কেন বারো মাস’, ‘শিক্ষার্থীদের শ্রম, মেধা, স্বপ্ন ও যোগ্যতা নিয়ে আর কত ছিনিমিনি’, ‘শিক্ষা কারো বাপের মাল নয়, অর্থ দিলে সব হয়’, ‘প্রশ্ন ফাঁস বারো মাস, এই আমাদের বাংলাদেশ’, ‘ফাঁসকৃত প্রশ্নে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস, এমন লেখা সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ইসলাম রাফি জানান, ‘যে দেশে পিএসসি, এসএসসি, বিসিএস, মেডিকেলসহ সকল পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়, সেদেশে মেধার মূল্যায়ন হবে কীভাবে। সরকারের মন্ত্রীরা অনেক বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করে না। সারাবছর পড়ালেখা করা কি আমাদের অপরাধ। টাকা থাকলে যদি সবকিছু হয়, তবে মেধা ও শ্রমের কী দরকার। সরকার প্রশ্ন ফাঁসের দায় কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। ’

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ বড়ুয়া বলেন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস-বিডিএস পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আমাদের এ আন্দোলন। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে নেওয়া পরীক্ষার পাতানো ফলাফল আমরা বাতিলের দাবি করছি। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে। ’

????????????????????????????????????

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, ২০০৬ সালের পর এবার এত বড় মাত্রায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। যারা দিনে ১৭-১৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল, তারা আজ পরাজিত হয়ে গেছে অসৎ লোকের অর্থশক্তির কাছে। তাদের স্বপ্নের সঙ্গে করা হয়েছে প্রতারণা। তাদের স্বপ্ন আর পরিশ্রম বৃথা গেছে। স্বাস্থ্য খাতে চলে আসা এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান এবং আমাদের প্রাণের দাবি ফাঁসকৃত প্রশ্নে নেয়া পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেয়া হোক।

চট্টগ্রাম কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছেন তানজীনা বেগম। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায়ও তানজীনা জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। মেয়ের সঙ্গে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন অভিভাবক নাজনীন আক্তার। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে কষ্ট করে পড়ালেখা করেছে। ভালো নাম্বারও পেয়েছে। কিন্তু ফাঁসকৃত প্রশ্নে যারা পরীক্ষা দিয়েছেন তারাই এবার মেডিকেলে পড়ার যোগ্য হয়েছে। তাহলে আমাদের প্রশ্ন টাকা থাকলেই কি সব সম্ভব।

আরেক অভিভাবক নাসরিন সুলাতানা বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের মতো এবার ফলাফলটাও পাতানো। মেডিকেলের ফলাফল দেওয়া হয় তিনদিন পর। এবার এতো তড়িঘড়ি করে কেন ফলাফল দেওয়া হয়েছে। ফলাফলে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এ অভিভাবক।

কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন অনিরুদ্ধ বড়ুয়া, সাকি, আহেমদ রাকিব, রিয়াদ আশরাফ।

কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূর আহমদ বলেন, ‘সড়কের এক পাশে শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। সড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ’

শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হয়, যাতে অংশ নেন ৮৩ হাজার শিক্ষার্থী। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে ফল ঘোষণা করেছে, তাতে ভর্তির যোগ্য শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে ৪৮ হাজার ৪৪৮ জন।

এ পরীক্ষার ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসে’ জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে পরীক্ষার্থীরা। বিএনপিও পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.