শিক্ষাঙ্গণ : প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা অনুযায়ী জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তকরণসহ পাঁচ দফা দাবিতে ৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। এছাড়া দাবি আদায় না হলে ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের হুমকি দিয়েছেন শিক্ষকরা।
সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক কাইছারুল আলম।
প্রধান শিক্ষকদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো, প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা অনুযায়ী জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্তকরণ করে প্রত্যেক প্রধান শিক্ষকের নামে গেজেট প্রকাশ, প্রধান শিক্ষকদের সেলফ ড্রয়িং কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা প্রদানসহ ১ম, ২য় এবং ৩য় টাইম স্কেলপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের করেসপন্ডিং স্কেলে বেতন ফিক্সেশেনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা জারি, নতুন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করে যোগ্যতা ও বিভাগীয় পদোন্নতি পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক থেকে মহাপরিচালক পর্যন্ত শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিধান চালু, প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কিত বিভাগীয় নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের সাংগঠনিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত এবং অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পুর্নবহাল।
লিখিত বক্তব্যে কাইছারুল আলম বলেন, ‘২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন। একই দিন পদমর্যাদা উন্নীতের আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণমিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর দেড় বছর অতিক্রান্ত হলেও পদমর্যাদা ও পদমর্যাদা অনুযায়ী ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন হয়নি। মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বাই নেমে গেজেট প্রকাশ না করায় বেতন ফিক্সেশন ও বেতন দিতে পারছে না হিসাবরক্ষণ অফিস। ’
তিনি বলেন, ‘এক গবেষণায় দেখা যায় প্রাথমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ করলে মুনাফা পাওয়া যায় ৩৫ শতাংশ, মাধ্যমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ করলে মুনাফা পাওয়া যায় ৯শতাংশ এবং উচ্চ শিক্ষায় বিনিয়োগ করলে মুনাফা পাওয়া যায় ১১ শতাংশ। সুতরাং প্রাথমিক শিক্ষা বাদ দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি কল্পনা করা যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রাথমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ করে খুব শীঘ্রই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বিতা অর্জন করেছে। ’
কাইছারুল আলম বলেন, ‘আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের পাঁচদফা দাবি মেনে না নিলে ১ অক্টোর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকদের চেয়ার বর্জন, ৩ অক্টোবর থেকে ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি এবং ৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মবিতরতি পালন করবে শিক্ষকরা।
দাবি না মানলে আগামী ২২ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় বর্জনেরও ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রণজিৎ ভট্টাচার্য, নিপক কুমার লাল, কৃষ্ণা দাশগুপ্তা, নুরুল হুদা, রিংকু দাশ, তসলিম উদ্দিন, সাইফুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।