নীরবতা ভেঙে রাজপরিবার ছাড়ার নেপথ্যের সত্যিটা জানালেন হ্যারি

0

ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে হ্যারি ও মেগানের বেরিয়ে যাওয়ার খবর অনেকেই মর্মাহত হয়েছেন। দুই সপ্তাহ আগে একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তারা এ ঘোষণা দেয়ার পর রানি এলিজাবেথ সেটি সিদ্ধান্ত অনুমোদনও দিয়েছেন। এখন থেকে রাজউপাধিও ব্যবহার করবেন না তারা। ঘোষণা দেয়ার পর এ নিয়ে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে মুখ খুলেছেন হ্যারি।

রবিবার সন্ধ্যায় লন্ডনে আইভি সেলসিয়া ক্লাবে নিজের দাতব্য প্রতিষ্ঠান সেনটেবলের একটি অনুষ্ঠানে হ্যারি বলেন, আমি চাই আপনারা আমার কাছ থেকে সত্যিটা জানুন। যতটুকু আমি বলতে পারি- রাজপুত্র হিসেবে নয়, ডিউক হিসেবে নয়, শুধু হ্যারি হিসেবেই, আমি আপনাদেরই একজন, গত ৩৫ বছর ধরে আপনাদের সামনেই বেড়ে উঠেছি। ব্রিটেন আমার বাড়ি এবং ভালোবাসার জায়গা। বেড়ে উঠায় এ সময়টাতে আমি আপনাদের সহযোগিতা অনুভব করেছি। আপনারা খোলামনে মেগানকে স্বাগত জানিয়েছেন, আমি আমার সারাজীবনের কাঙিক্ষত ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছি। সেই নারীকেই আমি স্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছি যে আমার মতো একই মূল্যবোধ ধারণ করে। সে একই নারী আমি যার প্রেমে পেয়েছি। দেশের পতাকা সমুন্নত রাখতে এবং দেশের দায়িত্ব পালন করতে আমরা সবকিছু করি। যখন আমি মেগান বিয়ে করেছিলাম, আমরা রোমাঞ্চিত ছিলাম, আশাবাদী ছিলাম, আমরা সেবা করার জন্যই এখানে ছিলাম। এসব কারণই আমার মধ্যে বিশাল হতাশা নিয়ে এসেছে যার কারণে আজ এই পরিস্থিতি (রাজপরিবার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত) তৈরি হয়েছে। সরে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত আমি এবং আমার স্ত্রী নিয়েছি, তা হালকাভাবে নিইনি। বহু বছরের প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হওয়ার পর কয়েকমাস ধরে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। জানি, আমি সবকিছু সঠিক করতে পারি না, কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমার কাছে আর কোনো ‘অপশন’ ছিল না। জনগণের অর্থায়ন ছাড়া আমরা রানী, কমনওয়েলথ, আমার সামরিক প্রতিষ্ঠানের সেবা করতে চেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটি সম্ভব নয়।

অনুষ্ঠানে রাজপরিবার ছেড়ে এখন শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন হ্যারি। তিনি দাতব্য প্রতিষ্ঠান ও সামরিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখারও অঙ্গীকার করেছেন।
বক্তৃতা দেয়ার সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন হ্যারি। এসময় তিনি মা ডায়ানার কথা দুইবার উচ্চারণ করেন। হ্যারি আরও বলেন, দাদির (রানি) প্রতি আমার সবসময় পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা থাকবে, আমার কমান্ডার ইন চিফ তিনি, তার প্রতি এবং আমার পরিবারের বাকি সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, মেগান ও আমার প্রতি গত কয়েক মাসে তারা যে সহযোগিতা দেখিয়েছে তার জন্য। আমি সেই একই মানুষ থাকবো যে নিজের দেশকে হৃদয়ে ধারণ করে এবং দেশের প্রয়োজনে উৎসর্গকৃত প্রাণ। আপনারা সবাই আমাকে জীবনযাপনের বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। এবং এই ভূমিকা সঠিক পথের বিষয়ে আমাকে আরও বেশি শেখাবে এমনকি আমার কল্পনার চেয়েও বেশি। আমরা বিশ্বাসের পথ গ্রহণ করছি- জীবনের এই পদক্ষেপে সাহস জোগানোর জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।

সূত্র: মিরর ইউকে

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.