চাকরি করব না, চাকরি দেব- যুবসমাজের এই চিন্তা থাকতে হবেঃ প্রধানমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন,  ‘চাকরি করব না, চাকরি দেব’ যুবসমাজের এই চিন্তা থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে কেউ বেকার থাকবে না। যুবসমাজের কর্মসংস্থানের বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার তরুণদের জন্য প্রশিক্ষণ ও ঋণদানসহ বিভিন্ন সহায়তার ব্যবস্থা করেছে। তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সৃষ্টি ও বিভিন্ন শিল্প স্থাপনেও কাজ চলছে।’

আজ যে ২৭ জন যুবককে পুরস্কার দিলাম, তারা সবাই অনেকের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। এভাবে যুবকরা আত্মকর্মী হলে আগামীতে বাংলাদেশে কেউ বেকার থাকবে না। যুবকরাই হবে বাংলাদেশের কর্ণধার।

আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে সফল আত্মকর্মী ও যুব সংগঠনের মাঝে ‘জাতীয় যুব পুরস্কার ২০১৯’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আখতার হোসেন। এ ছাড়া সারাদেশে প্রথম স্থান অধিকারী আত্মকর্মী মো. প্রকৌশলী আতিকুর রহমান এবং নারীদের মধ্যে প্রথম হওয়া পারভিন আক্তার বক্তব্য দেন। যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে প্রশিক্ষণ নেয়া ২৭ জন সফল আত্মকর্মীকে অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুবসমাজকে আত্মনির্ভরশীল এবং কর্মময় করে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে যুব উন্নয়ন অধিদফতরের অধীনে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় যুবকদের বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু যুব উন্নয়ন নয়, অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অধীনেও যুবকদের ট্রেনিং দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হচ্ছে। আমরা যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক করেছি। যেখান থেকে তারা বিনা জামানতে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা স্কুল থেকেই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে চাই। শিশু ও তরুণদের সৃষ্টির একটা ক্ষমতা আছে। তা বিকশিত করার জন্য আমরা এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ ছাড়া তাদের আলাদা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছি। এর মাধ্যমে স্কুল জীবন শেষ করে যারা কলেজ বা উচ্চশিক্ষা নিতে পারে না তারা বিভিন্ন কর্ম করে খাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সারাদেশে দুই হাজার ৮০০ ডিজিটাল সেন্টার করা হয়েছে। যেখান থেকে তরুণ ও যুবকরা ট্রেনিং নিয়ে তারা নিজেরাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে এবং আত্মকর্মী হয়ে উঠছে। এ ছাড়া আমরা অনেকগুলো রেডিও-টেলিভিশনের অনুমতি দিয়েছি। এখানেও অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে ট্রেনিং নিয়ে অনেকেই এখন উদ্যোগী হয়ে সফলতা অর্জন করেছে। তারা নিজেরা তো সফল হয়েছে, আরও ১০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।’

‘আজ যাদের আমি পুরস্কার দিলাম তাদের জীবনী এবং তাদের সফলতা ও আত্মকর্মী হয়ে ওঠার পেছনে গল্প শুনে আমার খুব ভালো লাগল। এভাবে যুবকরা নিজেদের আত্মকর্মী তৈরি করতে পারে, তাহলে আগামীতে বাংলাদেশ আর কেউ বেকার থাকবে না। কোনো বেকার খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

‘আজ ফ্রিল্যান্স করে অনেকে দুই থেকে তিন লাখ টাকা ইনকাম করছে। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রেনিং নিয়ে আজ নিজেদের কর্মসংস্থান করে নিয়েছে। শুধু চাকরি করলেই ইনকাম করা হয় আর ফ্রিল্যান্সিং করলে ইনকাম করা হয় না, এই চিন্তা-চেতনা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিতে হবে। একজন যুবক ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে ৩-৪ লাখ টাকা ইনকাম করলে সেটাও একটা কর্মসংস্থান, এটাই ধরে নিতে হবে।’

‘আমরা গ্রামের তৃণমূল দরিদ্র মানুষের জন্য আমার বাড়ি আমার খামারের যে প্রকল্প গ্রহণ করেছি, সেই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে আজ হাজার হাজার মানুষ আত্মকর্মী হয়ে উঠছেন। তারা নিজেরা গরু, ছাগল, হাঁস ও মুরগি পালনসহ সেলাই এবং অন্যান্য কর্ম করে সচ্ছলভাবে জীবিকা নির্বাহ করছে। তাছাড়া আমার বাড়ি আমার খামারের মাধ্যমে শাকসবজি উৎপাদন করে তারা স্বাবলম্বী হচ্ছে’,- যোগ করেন শেখ হাসিনা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.