সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক, যৌতুক ও দুর্নীতি বিরোধী মহাসমাবেশ বৃহস্পতিবার

0

সিটি নিউজঃ আগামীকাল বৃহস্পতিবার নগরের লালদিঘী ময়দানে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, মাদক, যৌতুক ও দুর্নীতি বিরোধী মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।এছাড়া অনুষ্ঠানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রয়ন অধিদপ্তরের মহা পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন আহমদ ও সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ মাহাবুবর রহমান বিপিএম,পিপিএম অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি প্রতিরোধে কাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য লালদীঘির মহাসমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এই সমাবেশে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ও সিএমপি কমিশনার অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

আজ বুধবার (৫ জানুয়ারী) বিকেলে টাইগারপাসে চসিক সম্মেলন কক্ষে মহাসমাবেশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চসিক আইন শৃংখলা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এইচএম সোহেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মোহাম্মদ জাবেদ, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবিদা আজাদ,চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আখতার ও জাহানারা ফেরদৌস প্রমূখ। সিটি মেয়র বলেন, ‘মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতিকে না বলুন” নিরাপদ ও বাসযোগ্য চট্টগ্রাম গড়ে তুলুন’ স্লোগান এ মহাসমাবেশের আয়োজন করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এই সমাবেশে সকল পেশার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি প্রতিরোধে শপথ পাঠ করানো হবে। তিনি বলেন, জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধান অন্তরায় মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি। এই সকল বাধা সমূহ দূরীকরনে ২০১৭ সালে চসিকের ৫ম নির্বাচিত পরিষদের ২০ তম সাধারন সভায় কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে ৩০ এপ্রিল ২০১৭ সালে থিয়েটার ইনস্টিটিউটে এক সভার মাধ্যমে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের তালিকা পুলিশ কমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে সভা করে অক্টোবর ২০১৯ এর মাধ্যমে ওয়ার্ড পর্য্যায়ে সভা সমাপ্ত হয়। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চসিক মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতির মত কালো ব্যাধি থেকে সমাজ ও নগরকে মুক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প বাস্তবায়নে প্রতিটি ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণের সাথে এই সভার আয়োজন করে।

মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি জাতীয় অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখিন। উন্নয়নের অগ্রযাত্রার অন্যতম শক্তি দেশের তরুন সমাজ। মাদক, সন্ত্রাসের ভয়াবহতা দূর্নীতি ও জঙ্গিবাদের ছোবল তরুন সহ সমগ্র সমাজের সর্বনাশ ডেকে আনছে। এমতাবস্থায় দেশকে এগিয়ে নিতে হলে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিকে দমন করার কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

তারই প্রেক্ষিতে চসিক প্রত্যেক ওয়ার্ডে সমাবেশ করে এবং এইসব সমাবেশে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং মাদক অধিদপ্তরে প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন শৃংখলা বাহিনীর ভূমিকা অনস্বিকার্য। তারই প্রেক্ষিতে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে এই মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা পুলিশ প্রশাসনকে প্রদান করা হয়।

ফলে তালিকাভুক্ত অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে পুলিশ আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়। এই সমাবেশের মাধ্যমে সাধারন মানুষের সাথে পুলিশ প্রশাসনের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পায়। ওয়ার্ড ভিত্তিক মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি বিরোধী সভা করার ফলে সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সাথে মতবিনিময়,তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমে গতি সঞ্চার হয়েছে। তিনি বলেন, এর ফলে মাদকের বেপরোয়া অবস্থা থেকে নগরে পরিবর্তন এসেছে।

মাদক কারবারিদের আস্ফালন নেই। চসিকের সেবার পরিধি বাড়ানোর অংশ হিসেবে এই সমাবেশ করা হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বছরে মুজিব জন্মশত বার্ষিকীর ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। এই মুজিব বর্ষকে উপলক্ষ করে চসিক তার নগরকে মাদকমুক্ত নগর গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মেয়র বৃহষ্পতিবারের মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, যৌতুক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ সমাবেশের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে বলেন, স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ আয়োজনের উদ্যোগে নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।

এতে ব্যানার, ফেষ্টুন, প্লে-কার্ড নিয়ে ৪১ ওয়ার্ডে সন্ত্রাস,মাদক,জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি বিরোধী গঠিত কমিটির আহ্বায়কের নেতৃত্বে ‘সন্ত্রাস,মাদক,জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিকে না বলুন, নিরাপদ ও বাসযোগ্য চট্টগ্রাম গড়ে তুলুন’ শ্লোগান সম্বলিত মিছিল সহকারে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণসহ সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, কলামিষ্ট, সাংবাদিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং সর্বস্তরের নগরবাসী এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন।

সমাবেশের জন্য লালদিঘীর দক্ষিণ অংশে একটি বৃহৎ আকারের পেন্ডেল, মঞ্চে কার্পেট, ভিআইপি টেবিল বক্স, বক্তব্য ডাইস, কুসুম চেয়ার, কাঠের চেয়ার, ভিআইপি সোফাসহ মাঠে মহিলা ও মুরব্বিদের জন্য ৭ হাজার চেয়ার বসানো হবে। তবে সড়কে থাকবেন পুরুষরা।

সমাবেশে আগতদের দেখার সুবিধার্থে মাঠের ভিতরে ৫টি বড় এলইডি স্কিন, কোতোয়ালী মোড়, জেলা পরিষদ মার্কেট, সোনালী ব্যাংক, লালদিঘীর পূর্ব পাশ ও সিনেমা প্যালেস মোড়ে এলইডি স্কিন বসানো সহ আন্দরকিল্লা ও নিউমার্কেট মোড় পর্যন্ত পর্যাপ্ত মাইক বসানো হবে বলে উপস্থিত সাংবাদিকদের অবহিত করেন। এই সমাবেশ সফল ও সুষ্ঠ প্রচারে মেয়র সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.