ভারতীয় মন্ত্রীর মন্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ, ও লজ্জারঃ রিজভী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ভারতীয় মন্ত্রী কান্ড জ্ঞানহীন বক্তব্য দিয়েছেন যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য লজ্জাকর ও অপমানজনক।

তিনি বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি বলেছেন, ভারতের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলে অর্ধেক মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে দেবে। ভারতীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও কাণ্ডজ্ঞানহীন; যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য লজ্জাকর ও অপমানজনক।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের কথিত স্লোগানের আড়ালে গত এক দশকে বাংলাদেশ হারিয়েছে তার সকল অর্জন আর মর্যাদা। গুম খুন অপহরণের ফলে উদ্ভূত ভয়ে জনগণকে পরিণত করা হয়েছে একটি আত্মমর্যাদাহীন জাতিতে।

আজ সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে, অসংখ্য মা বোনের সম্মান- সম্ভ্রমের বিনিময়ে ৭১ সালে আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলাম পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে এসে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আশায় নয়। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে দেশের দামাল ছেলেরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, স্বাধীন ও মর্যাদাবান রাষ্ট্র ও নাগরিক হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশে মাথা উঁচু করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য। অথচ, আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বাংলাদেশের জনগণ সম্পর্কে ভারত সরকারের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীর এমন উদ্ভট মন্তব্যের পরও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এতোদিনেও কোনরকমের প্রতিবাদ জানানো হয়নি।

রিজভী বলেন, গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কে ভোট দিলো, কে দিলো না তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ। এই বক্তব্যের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন, তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য কিংবা সরকার গঠনের জন্য দেশের জনগণ কিংবা জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় নিশিরাত আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। জনগণের প্রতি, জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি এমন অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ মন্তব্য একমাত্র সরকারপ্রধান এবং তার দল আওয়ামী লীগের পক্ষেই সম্ভব।

কারণ সুষ্ঠু ভোট তাদের জন্য আতঙ্ক, তাদের মসনদ উল্টে যাওয়ার ভয়ে তারা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্ষমতা প্রয়োগ করছে। এই কারণেই আমরা বলি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের জনগণ ক্ষমতাহীন হয়ে যায়। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকলে জনগণ দেশে অনিরাপদ আর বিদেশে আত্মমর্যাদাহীন হয়ে যায়।

রিজভী আরো বলেন, বিতর্কিত এবং ক্রুটিপূর্ন হওয়ার কারণে সারাবিশ্বে নিষিদ্ধ ইভিএম বাংলাদেশে আমদানি করতে রাষ্ট্রের খরচ হয়েছে শত-শত কোটি টাকা। এবারের ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, ইভিএম হলো মহা ভোট চুরির শান্তিপূর্ণভাবে-নিরাপদে-ঝামেলামুক্ত যন্ত্র। অথচ, এই ভোট চুরির মেশিনের পক্ষে সাফাই গেয়েই চলছেন সিইসি। কারণ, তাদের ভোটের দরকার নেই, তাদের দরকার ইভিএমের নামে মানুষের ভোটাধিকারের সঙ্গে রঙ্গতামাশা করা আর ইভিএম কেনার নামে রাষ্ট্রের শতশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করা।

তিনি বলেন, একটি সভ্য দেশ হলে নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল, নির্বাচন কমিশনের প্রতি, নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। সেটি না কোরে সিইসি এখন রাজনৈতিক নেতাদের মতো বক্তৃতা দিচ্ছেন।

রিজভী বলেন, আমরা বলতে চাই, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ শোডাউন ভোটের প্রচার কার্যক্রমেরই তিনি বলেন, খারাপ মানুষ যাতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে না পারেন, এ জন্য নির্বাচন কমিশনের উচিত সময়োপযোগী আইন ও বিধি তৈরি করা এবং নির্বাচনের এমন পরিবেশ নিশ্চিত করা জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে। সিইসি সেটি না করে তিনি সারাবিশ্বে নিষিদ্ধ ইভিএম নিয়ে দেশে হেড মাস্টার সেজেছেন।

সিইসির ক্ষমতা পেয়েই নিজের অখ্যাত ভাগ্নেকে যিনি এমপি বানানোর লোভ সামলাতে পারেন না তার মুখে আর ভোট নিয়ে কোনো কথা মানায় না। ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটাররা ইভিএম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলেও সিইসি চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ডিজিটাল কারচুপির এই যন্ত্র ব্যবহার করার আবারও ঘোষণা দিয়েছে। তার মানে ঢাকার মতো একই কায়দায় চট্টগ্রামে ভোট ডাকাতির সুযোগ তৈরির জন্য এটা করা হচ্ছে। সিইসির এই সিদ্ধান্তকে আমরা ধিক্কার জানাই।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.