ভারত-বাংলাদেশে রকি বড়ুয়ার দৌরাত্ম্য : নেপথ্যে এমপি নদভী ?

0

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী : এক সন্ত্রাসী গ্রেফতারে দুই দেশেই চলছে সমধিক আলোচনা। ধর্মের পবিত্র বসনের অপব্যবহারকারি প্রতারক সন্ত্রাসী রকি বড়ুয়ার বাংলাদেশ-ভারত দৌরাত্ম্যের নেপথ্যের মানুষ কে বা কারা, তা খতিয়ে দেখছেন দুই দেশেরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মুক্তির দাবীতে বৈঠক করা সন্ত্রাসী রকি বড়ুয়ার সাথে সম্পর্কের নতুন আলোচনায় এলেন তারই এলাকার সংসদ সদস্য বহুলালোচিত আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। অবশ্য এই এমপি বলছেন ভিন্ন কথা।

দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া লোহাগাড়ার চরম্বা গ্রামে বৌদ্ধ ভান্তে(ভিক্ষু)হিসেবে গেরুয়া কাপড় পরা এই রকি বড়ুয়াকে ঘিরে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশেই প্রশ্নের শেষ নেই।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে প্রভাবশালী অনেকের সাথে বিভিন্ন সময়ে তোলা তার ছবি প্রদর্শনীর মাধ্যমে দু’দেশের নিজেকে ‘প্রভাবশালী ও ‘ক্ষমতাসীনদের সাথে ঘনিষ্ঠ’ বলে দাবি করে আসা এই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে, বিভিন্ন সময় ‘ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট’ হিসেবে নিজের পরিচিতি প্রদর্শন করে অনেক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিকে প্রভাবিত করত এই রকি।

অনুসন্ধানকালে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরম্বা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে এসএসসি’তে দুই বিষয়ে ফেল করা রকি এক নিকটাত্মীয়ের মাধ্যমে ভারত পাড়ি জমান। সেখানে দিল্লিতে জগৎজ্যোতি বিহারে আশ্রয় নেন ভিক্ষু সেজেই। কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশে এসে ধর্মীয় বিধি ভঙ্গ করে বিয়েও করেন চরম্বা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিবিবিলা গ্রামের বড়ুয়া পাড়ার এই অধিবাসী। জয় সেন বড়ুয়া ও রেনেকা বড়ুয়ার ৩৭ বছর বয়সে এই সন্তান নিজের এলাকায় ভূমি দখল, পুকুর, মৎস্য ঘের দখল সহ নানা দখলবাজিতে জড়িত হয়ে পড়েন।

চট্টগ্রাম ও ঢাকায় কয়েকটি বিলাসবহুল ফ্লাটের মালিকও হন।সর্বশেষ নিজ বাড়িতে গত ১ এপ্রিল গভীর রাতে যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদী পুত্র মাসুদ সাঈদী ও বিতর্কিত মৌলবাদী বক্তা তারেক মনোয়ার কয়েক জামায়াত নেতার সাথে বৈঠক করেন রকি । বৈঠকের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার লোকজন। আওয়ামীলীগের পুরনো ত্যাগী নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এরকম পরিস্থিতিতেও এলাকায় মাছের ঘের দখল সহ প্রতাপে জড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী ও আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীর সাথে তার বাহিনীর সংঘর্ষ হয়।

এরকম পরিস্থিতিতে একটি বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনা সাজিয়ে পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা করে এই সন্ত্রাসী। গোপন বৈঠকের ছবি ও বৌদ্ধ বিহার ভাংচুরের আগে রকির ফোনালাপের একাধিক অডিও ভাইরাল হয়েছে।

এথেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জামাল উদ্দিন কোম্পানি ও মাওলানা হেলাল উদ্দিনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর বিষয়টিও স্থানীয়দের কাছে দৃশ্যমান হলে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে। রকি তার বাহিনী নিয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে আশ্রয় নেয়।

মঙ্গলবার র‌্যাবের হাতে মদ, অস্ত্র ও সঙ্গিনী সহ গ্রেফতার হয় রকি। র‌্যাবের অভিযান থেকে বাঁচতে তিন তলা বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে দুই পা ফ্র্যাকচার হয় তার । এই সন্ত্রাসীর গ্রেফতারের পর দেশ-বিদেশে তার প্রভাবের নেপথ্যের নানা কাহিনী উঠে আসে।

প্রকাশ্য বক্তৃতায় পুলিশের আইজি, কমিশনার, এসপি সহ দায়িত্বশীলদের নিজের ‘চাকর’ দাবি করা এই সন্ত্রাসীর অতীত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, এস এস সি ফেল করার পর কিছুদিন ভবঘুরে জীবন যাপন ও চট্টগ্রামের নিউমার্কেটের একটি ভিডিও দোকানে চাকরি করেন রকি। বৌদ্ধভিক্ষুর বেশে কোরিয়া এবং আমেরিকা গিয়েও সেখানে বেশভুষা পরিবর্তন করায় ধরা খেয়ে পাড়ি জমান ভারতে ।

সেখানে দিল্লিতে যেই বিহারের আশ্রিত ছিলেন, সেটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ধর্মভীরু মহাথের রাজ্যেসভার সাবেক সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রীয় ছিলেন ধর্মভীরু। চট্টগ্রামের পটিয়ারই সন্তান হলেও ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে স্থায়ী হন। রকিও ভারতের নাগরিকত্ব নেন। ধর্মবীরের মৃত্যুর পর তার বিহারটিও দখলে নেন রকি।

এর আগেই ধর্মভীরু স্নেহ সান্নিধ্যের সুযোগে দিল্লির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের অনেকের সাথে রকি বড়ুয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অনেকের মত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথেও ছবি তোলার সুযোগ হয় তার ।

ধর্মভীরু মহাথেরো পিতা-মাতা ভ্রাতৃহারা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ৭৫ পরবর্তীতে ভারতে অবস্থানকালে সেখানটায় যোগাযোগ রাখতেন।‌সেই থেকে ধর্মভীরুকে প্রধানমন্ত্রী চিনতেন।

সেই পরিচয়ের সুবাদে ২০১৫ সালের নভেম্বরের দিকে ভারতীয় লোকসভার সফরকারী ৫ সদস্যকে নিয়ে ধর্মভীরু’র বাংলাদেশ সফর করলে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন ।

এসময় ধর্মভীরুর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে রকি বড়ুয়াও বাংলাদেশ সফরে এসে উচ্চপদস্থ অনেকের সাথেই যোগাযোগের বিস্তৃতি ঘটান। তখন থেকেই রকি’র সাথে সম্পর্কের সুচনা’ বলে দাবি তার জন্মস্থান সংসদীয় আসনের এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন নদভীর।

লক্ষণীয় যে, বাংলাদেশের প্রধানতম বৌদ্ধ ধর্মীয় বিহার গুলোতে কোন অনুষ্ঠানে তার সম্পৃক্ততা কিংবা বাংলাদেশের রাজনীতিতে সক্রিয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রভাবশালী নেতা সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া কিংবা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সাথে তার ঘনিষ্ঠতার কোন ছবি নেই।

২০১৫ সালের মধ্য নভেম্বরে লোহাগাড়া উপজেলায় একটি বৌদ্ধ মন্দিরের কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে ভারতীয় লোকসভার সফরকারী ৫ সংসদ সদস্য ও এক মন্ত্রী উপস্থিত হন। সেদিন চট্টগ্রামস্থ সেসময়ের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার ও কুষ্টিয়া-৪ আসনের এমপি আব্দুর রউফ ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার সহ ভারতীয় অতিথিগণ কঠিন চীবর দানে যোগ দেওয়ার আগে সাতকানিয়া লোহাগাড়ার এমপি নদভীর চট্টগ্রাম শহরের বাসায় নাস্তা সাড়েন। এমপি নদভী তার সংসদীয় আসনে যাত্রাপথে এই অতিথিদের মধ্যহ্নভোজ করান। এমপি নদভী’র এমন সমর্থনপুষ্ট আয়োজনের পর এলাকাটিতে প্রভাববলয় বিস্তার হতে থাকে রকি বড়ুয়ার।

এর মধ্যেই তার বিরুদ্ধে আদম পাচার, রীতি বহির্ভূতভাবে বিয়ে করেও গেরুয়া কাপড় পরিধান; আবার বাংলাদেশে এসে সেই কাপড় খুলে সন্ত্রাসী প্রভাব বিস্তারের তৎপরতা,বিশিষ্ট জনদের সাথে তোলা নিজের ছবির অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ পৌঁছে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের কাছে। ভারত সরকার তার পাসপোর্ট জব্দ করে তাকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ও করে।

কিন্তু এর আগেই বাংলাদেশের বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার নামে কয়েকজন বিত্তশালী প্রার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকাও নেয়ার অভিযোগ রয়েছে রকি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।ঠিক এমন তৎপরতার সময়ে দিল্লিতে গিয়েও সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের এমপি নদভী ও তার স্ত্রীর সাথে একটি হোটেলে ও সেখানকার এক রাজ্যের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর অফিসে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের ছবিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য নদভী আওয়ামী লীগের মনোনয়নে দু’দফা এমপি হলেও অতীতে তার বিরুদ্ধে জামায়াত ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। গোলাম আজম, সাঈদী,নিজামীসহ শীর্ষ জামাত নেতাদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ ছবি বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

জামায়াতের প্রণোদনায় পরিচালিত চট্টগ্রামের ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’র অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠাতা এই এমপি। তার স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরী জামায়াতের শীর্ষ নেতা ও মজলিসে শুরার সদস্য মমিনুল হক চৌধুরীর কন্যা। তাকে মহিলা আওয়ামীলীগে অন্তর্ভুক্তি করা, না করাকে ঘিরেও দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক তোলপাড় হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধে জড়িত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ফাঁসি দেওয়া জামায়াত নেতার গায়েবানা জানাজা পরান এই মমিনুল হক চৌধুরী।

তাই সব মিলিয়ে এই এমপি’র এলাকাতেই এমন করনাকালেও ‘প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে’ বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে লোহাগাড়ার বিবিবিলার গহীন গাঁয়ে সাঈদীপুত্র সহ সঙ্গীয়দের সাথে রকি বড়ুয়ার বৈঠক এবং এমপি নদভী ও তার স্ত্রী-কন্যার সাথে রকি বড়ুয়ার দেশ-বিদেশে ঘনিষ্ঠতার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় রাজনীতি সচেতন অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রী এমপিদের সাথে রকি বড়ুয়ার সংযোগে কিংবা এলাকায় অন্যায় প্রভাব বিস্তারে এমপি নদভী ‘সম্পর্কের সেতু’ হিসেবে রয়েছেন?- এমন প্রশ্নকে অবশ্য ‘অবান্তর’ বলেছেন সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী।

জানান, ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সাথে উপস্থিত থাকায় সৌজন্যতার জন্য যতটুকু সম্ভব রকি বড়ুয়াসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের পাশে ছিলেন তিনি।

যাত্রাপথে মধ্যন্হভোজ ও শহরে নিজের বাসায় ‘সকালের নাস্তা’ করানোর বিষয়টি স্বীকার করেই এই এমপি ২০১৮ এর জাতীয় নির্বাচনের আগে দিল্লিতে রকির সাথে হোটেল সহ একাধিক স্থানে বৈঠকের ছবি প্রসঙ্গে বলেন, সেসময় আমি পারিবারিকভাবে ভারতে সফরে গিয়েছিলাম। দিল্লি সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি।

প্রসঙ্গক্রমে চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নিজের বেয়াই ‘এস আলমে’র পরামর্শের সূত্র ধরে সেখানে একটি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার্থে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন এমপি নদভী। সেই সফরেই নয়াদিল্লিতে নিজের অবস্থানের হোটেলটিতে এবং রাজ্যের এক ‘স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী’র কার্যালয়ে পৃথক দফায় এসে দেখা করেন বলেও জানান এই এমপি।

অপরদিকে এমপি নদভীর সম্পর্কের সুবাদেই ইতোপূর্বে অন্য একাধিক সন্ত্রাসী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও প্রবেশের সচিত্র প্রমাণাদি সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরে ইতোমধ্যে অভিযোগ জানান তাঁরই এলাকার লোকজন।

ঠিক এমন করেই এই রকিও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পর্যন্ত পৌঁছে সামাজিক মাধ্যমে ছবি প্রকাশ করেছে কিনা , তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে এলাকায়। অবশ্য রকির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও সন্ত্রাসের অভিযোগ এবং পরবর্তীতে ভারতের ‘কালো তালিকাভুক্ত’ হওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে ছবি তোলার বিষয়ে ১০/১৫ দিন আগে পর্যন্তও কিছু জানতেন না- বলে জানান এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী।

‘তাহলে সাঈদী পুত্র ও তারেক মনোয়ার গংয়ের সাথে গভীর রাতে নিজ সংসদীয় এলাকায় কিভাবে রকি বড়ুয়া নিজ বাড়িতে বৈঠক করলেন, জানতে চাইলে ওই আসনটির এমপি নদভী বলেন, ‘আমার জানামতে জনৈক ‘সুন্দর মৌলভী’ রাত একটার দিকে সাঈদীপুত্র ও তারেক মনোয়ারদের রিসিভ করেন, সেখান থেকে রাত আড়াইটা-তিনটা পর্যন্ত বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।’
আলোচ্য ‘সুন্দর মৌলভী’র নাম আব্দুস সবুর। তিনি ৪/৫ বছর আগের সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা কাজে জড়িয়ে পড়েন’ বলেও জানান এমপি।

এক প্রশ্নের জবাবে এমপি বলেন, ‘রকি বড়ুয়ার সাথে ঘনিষ্ঠতার ছবি কিংবা সময়টুকুকে আমি অস্বীকার করছি না । তবে ভারতের প্রতিনিধিদলের হয়ে আসাতে আমি সহযোগিতা করেছি মাত্র।’

‘রকি নিজেকে ভারতীয় দূতাবাস ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের বিশ্বস্ত দাবি করতো’ বলেও জানান এমপি নদভী।রকি বড়ুয়ার এতদিনকার ভারত-বাংলাদেশ দৌরাত্ম্যের নেপথ্যের মানুষ গুলো কারা, তা আমাদের জাতীয় স্বার্থেই জানা দরকার।

এমন করোনাকালের সতর্ক নজরদারিতেও বিএমডব্লিউ ব্র্যান্ডের দামি গাড়ি নিয়ে যেয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চরম্বার বিবিবিলার গহীন গাঁয়ে সাঈদীপুত্র মাসুদ ও বিতর্কিত তারেক মনোয়ার সহ সঙ্গীয়দের সাথে যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মুক্তির লক্ষ্যে রকি বড়ুয়ার বৈঠকের বিষয়টি ভাবায়। কিভাবে নিরাপদ্রব পরিবেশে বৈঠক সম্পন্ন হল, তাও প্রশ্ন সৃষ্টি করে।

রকি বড়ুয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় ৪ মামলা
রকি বড়ুয়াসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় ৪ মামলা

দু’দেশের প্রভাবশালীদের রকি বড়ুয়ার ঘনিষ্ঠতার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর প্রশ্ল ওঠেছে, এমন সন্ত্রাসীর সাথে প্রভাবশালীদের ছবি তোলার মত স্থানে যেতে কারা সুযোগটি করে দিলেন, কিংবা এই প্রভাব বলয়ের সংযুক্তির ক্ষেত্রে ‘সম্পর্কের সেতু’ হিসেবে কে বা কারা ছিলেন ?

বৌদ্ধ ভান্তে(ভিক্ষু)’র পবিত্র গেরুয়া কাপড়কে প্রতারণার আশ্রয় করা এই দস্যুকে ঘিরে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশেই প্রশ্নের শেষ নেই।দুই দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা দরকার।

‌বর্ণচোরা রূপের রকি বড়ুয়াকে এমপি হিসেবে নিজের এলাকায় ‘প্রশ্রয়-প্রণোদনা দানের’ অভিযোগ অস্বীকার করলেও এমপি নদভীর আলোচ্য দৃশ্যমান তৎপরতাকে ঘিরে থাকা নানা প্রশ্নের যেন যবনিকা নেই।

লেখক : সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন / সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন ও আহ্বায়ক, চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.