চসিক নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের চেয়ে অনুসারীদের আগ্রহ বেশী
জুবায়ের সিদ্দিকী, সিটি নিউজঃ সামনে আসছে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন উৎসাহ বা প্রতিক্রিয়া নেই। করোনার প্রভাব ও নির্বাচনী প্রচারণায় ভাটা পড়ায় কাউন্সিলরদের অনুসারী ও প্রার্থীদের সমর্থকরা মাঠে নামার প্রস্তুতি থাকলেও সাধারণ মানুষে মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়া নেই।
এছড়া একতরফা ভোট, ভোটের আগের দিন সিল মেরে বাক্সভর্তি, ভোটারের উপস্থিতির আগেই ভোট সম্পন্ন ও ইভিএমে ভোট নিতে বিড়ম্বানসহ নানা কারনে নির্বাচন ব্যবস্থাপনার উপর মানুষের আস্থা হারিয়েছে ভোটাররা। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি নির্বাচনে ভোটের উপস্থিতি সন্তোষজনক যেমন ছিলনা তেমনি ভোট কাষ্টিং এর হার তলানীতে নেমেছে।
নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে এখন শুধু প্রার্থীদের অনুসারীরা ভোটের জন্য উৎসাহিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন উৎসাহ নেই। সাধারণ ভোটাররা মনে করেন, ভোট দিলেও যে ফল হবে না দিলেও তাই হবে। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটাররা মনে করেন, ভোট দিতে না গেলেও তাদের প্রার্থী বিজয় হবেন। এ জন্য ভোটের প্রতি সাধারনের অনিহা তৈরী হয়েছে। তবে অনাগ্রহ ও অনাস্থা কোনভাবেই ভালো লক্ষণ নয়। এটা অনভিপ্রেত ও গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। দেশের নির্বাচনী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পর পর যে কয়টি জাতীয় নির্বাচন হয়েছিল সেখানে গড় ভোটের হারছিল ৭৩ দশমিক ১ শতাংশ। আবার ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেকদল অংশগ্রহণ করেননি। যেখানে ১৫৩ জন সাংসদ বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হন। ভোটের গড়পড়তা হারছিল ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ। এ নির্বাচনকে নিয়ে অনেকে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন বলে মন্ত্রব্য করেছিলেন।
আবার ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবদলের অংশগ্রহণ করেছিল। ভোটাররা মনে করেছিল এটি একটি প্রতিদ্বন্ধিতামূলক এবং অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন হবে। কিন্তু ভোটের আগের দিন রাতে ব্যালটে সিল মেরার কারনে এ নির্বাচনেও ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিগত নির্বাচনও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আগের দিন রাতেই ব্যালটে পরিপূর্ণ হয়েছে ভোটের বাক্স। সকালে ভোট দিতে গিয়ে দেখেছেন, ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। সেই স্মৃতি এখনও তাড়া করে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এবারও কি সেভাবে হবে নাকি সচ্চ ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারবেন- এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।