ইয়াবা গাঁজা খাবেন সত্য কথা লিখতে পারবেন
জুবায়ের সিদ্দিকী, সিটি নিউজঃ দিন দিন বাড়ছে মাদকসেবী। বাড়ছে মাদক বাণিজ্য। আসছে নতুন নতুন নামে নতুন মোড়কে মাদক। মরণ নেশায় আসক্ত হচ্ছে যুবক-যুবতীরা। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি থেকে শুরু করে খুনা খুনির ঘটনাও ঘটাচ্ছে তারা। নারীদের সংখ্যা বাড়ছে মাদক সেবনে। মাদক বাণিজ্যে ব্যবহার হচ্ছে শিশু-কিশোর।
দেশে বর্তমানে মাদকসেবীর সংখ্যা প্রায় ৬৮ লাখ। এরমধ্যে নারীদের সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ। সারাদেশে মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে প্রায় ৩ লাখ। গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবার পরে নতুনভাবে দেশে ছড়ানো হচ্ছে মরণনেশা আইস।
গত কয়েকবছর যাবত আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ীরা এটি ছড়াচ্ছে। মাদক নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসা গ্রহণকারী নারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বেশীর ভাগই ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে সৃষ্ট হতাশা থেকে মাদকে আসক্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রামে একটি বেসরকারী কলেজে লেখাপড়া করেন, নাজমা জাহান (ছদ্মনাম)। বাবা ব্যবসায়ী। মা চাকুরীজীবি। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। বড় হয়েছে নগরীর একটি অভিজাত এলাকায়। ছোটবেলায় খেলার সাথী ছিল গৃহকর্মী। কলেজ জীবনে গিয়ে ধুমপানে আসক্ত হন। এরপর প্রেম হয় এক সহপাঠীর সাথে। দুজনে শিক্ষা সফরসহ নানা স্থানে আড্ডা দিতেন। কক্সবাজারেও ছিলেন কয়েকদিন সহপাঠীর সাথেই। তারা দুজনে গাঁজা সেবন শুরু করেন। একসময় প্রেমিক তাকে ছেড়ে চলে যায়। এরপর থেকে ইয়াবায় বুঁদ হয়ে থাকে এই তরুনী। বাড়তে থাকে আসক্তি। টাকার জন্য মায়ের উপর হাত তোলে নাজমা। এরপর তাকে ভর্তি করানো হয় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে। এখনও চিকিৎসা চলছে।
সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে নাজমা বলেন, আপনি যখন সাংবদিক, তাহলে ইয়াবা বা গাঁজা খাবেন। তাহলে সত্যকথা লিখতে পারবেন। এখানে সুস্থ হতে এসেছেন এসব কথা বলছেন কেন? জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ভাল হতে এসেছি ভাল, তবে সেই সুখ আপনি পাবেন শুধু জানালাম।
এভাবে নগরীতে অসংখ্য শিক্ষিত নারী মাদকাসক্ত। বিশেষ করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণী দিন দিন মাদকাসক্ত হয়ে উঠেছেন। অভিজাত ঘরের বখে যাওয়া তরুণ-তরুণী বন্ধু-বান্ধবের পাল্লায় পড়ে মাদকের প্রতি ঝুঁকছে।
মহানগরী থেকে মফস্বল সর্বত্র মাদকের হাট ও মাদকের বিস্তার ক্রমাগত বাড়ায় অভিভাবক মহল যেমন শংকিত, উদ্বিঘ্ন তেমনি আইনশৃংখলা বাহিনী মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও আশানুরূপ কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।