কারিগরী প্রশিক্ষণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমানে উন্নয়ন ঘটাবেঃ সুজন
সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিগরী প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করার আহ্বান জানিয়েছেন। শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করলে দেশের বেকারত্ব ঘুচবেনা এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতাও অর্জন করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে কৃষি কাজ ও কারিগরী বিদ্যার কোন বিকল্প নাই। দক্ষ জনশক্তিই হচ্ছে একটি দেশের বড় সম্পদ।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর টাইগারপাস বাটালীহিলস্থ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কনফারেন্স রুমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন (এলইউপিসি) প্রকল্পের সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, প্রশাসকের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, পরিবার পরিকল্পনা, জেলা সমাজসেবা দপ্তরস্থ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পূর্ববর্তী সভার রেজুলেশন উপস্থাপন করা হলে, আলোচনা শেষে তা পাশ করা হয়। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে (এলইউপিসি) যে প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেই তহবিলের যোগানদার হলো স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ইউকেএইড, ফরএইন কমন ওয়েলথ ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিইউ) এই প্রকল্পের অধীনে নগরের ৩৯ লাখ দরিদ্র প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের টাউন ম্যানেজার মোহাম্মদ সারোয়ার হোসেন খান তাদের কার্যক্রমের সচিত্র প্রতিবেদন প্রশাসক ও সভায় উপস্থিত সকলের সামনে উপস্থাপন করেন।
এ সময় আগামী জানুয়ারি মাসে ৭শ গর্ভবর্তী নারীকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে বলে জানানো হয়। এরমধ্যে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ৮৪ হাজার ৬শ সাবান বিতরণ, প্রতি জনের মাঝে ১ হাজার ৫শ টাকা করে ২০ হাজার ১ শত ৪৮ জনের মাঝে মোট ৩ কোটি ২ লাখ ২২ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
প্রকল্পের অধীনে এই কার্যক্রম ২৪টি ওয়ার্ডে চলবে। স্থানীয় সরকারের সহায়তায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোশিও ইকোনমিক ও পুষ্টি নিশ্চিতে ব্যবসার নিশ্চয়তা ও পারিবারিক আয় বৃদ্ধি, যুব সমাজের কারিগরী দক্ষতা বৃদ্ধি, বাল্যবিবাহ রোধ, গর্ভবর্তী মা’দের পুষ্টি নিশ্চিতে মোট ১৫ কোটি ২৫ লাখ ব্যয় হবে বলে সভায় জানানো হয়। স্থায়ী অগ্রগতি ও কমিউনিটি ইাউজিং এর উন্নয়নে কিস্তিতে শৌচাগারের উন্নয়ন ফুটপাত, বিশুদ্ধ পানির সুবিধা, নালা, স্ল্যাভ ও কমিউনিটি হাউজিং এর উন্নয়নে ৬২ জনকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা যায়। এসব কাজে মোট ৬০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পের অধীনে এবারের বাজেট ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
প্রকল্পের প্রকৌশল বিভাগের সূত্রে জানা যায়, বাজেটের অধীনে ২২ হাজার ৯ শত ৪০ মিটার ফুটপাত, ৭ শত ২৫ মিটার নালা, ১৮ টি গভীর নলকূপ, ৮৯টি সোলার লাইট, ১টি কালভার্ট ১৫ মিটার সিঁড়ি নির্মাণ করা হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন আরো বলেন, মোগল, পাঠান, ব্রিটিশরা আমাদের দীর্ঘদিন শোষন করে দমিয়ে রাখতে পারেনি। জমি আছে, আমাদের এই প্রিয় স্বদেশে কখনো খাদ্য ঘাটতি ছিলোনা। যা বঙ্গবন্ধু জীবদ্দশায় বলে গেছেন। সরকার কৃষিখাতে ভর্তুকি দিলে শষ্য ভান্ডারে ও ফুলে ফলে দেশকে স্বনির্ভর করা যাবে। উন্নত বিশ্বের মধ্যে ফ্রান্স জাপানের মত দেশ কৃষিতে ভর্তুকি দিচ্ছে। এটা আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত। দেশের তরুণ যুব সমাজ যদি মোবাইল সেট মেরামত, সেলাই, সূচি কর্মের মত এ কারিগরী প্রশিক্ষণ নেয় তাহলে বেকারত্বও ঘুচবে, দেশের অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।