রাজনীতি যখন বুর্জোয়াদের দখলে
জুবায়ের সিদ্দিকী, সিটি নিউজঃ দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে রাজনীতির ধরণ পাল্টে গেছে। রাজনীতি এখন বুর্জোয়াদের দখলে। এতে করে ত্যাগী ও মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মূলধারা থেকে ছিটকে পড়ছে। অনেকে কোন যোগ্যতা ছাড়াই উত্তরাধিকার সূত্রে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন। আবার অনেকে রাজনীতির ধারাপাত না পড়েই রাজনীতিবিদ। আর এরাই ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করে। কিন্তু যারা দীর্ঘদিন রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে মামলা-হামলা ঠেকিয়ে দলকে বুকে আগলে ধরে আছে তারা কোনভাবে রাজনীতির সিঁড়িতে পা রাখতে পারেননা।
আবার দেখা যায়, কথা নেই, বার্তা নেই, হঠাৎ মাটি ভেদ করে নির্বাচনের সময় একজন প্রার্থী হয়ে গেছেন। বড় দুটি দলেই এই ব্যাধি এখন স্থায়ীভাবে বাসা বেঁধেছে। সরকারীদল বা বিরোধীদল সব দলেই অনুপ্রবেশকারী, নব্যনেতা, সুযোগ সন্ধানীরা নেতাদের আশীর্বাদ নিয়ে ঢুকে পড়ে। এরাই দলকে বিভিন্ন সময়ে বিপদগামী করে। নেতাকর্মীদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। সব দলেই চামচা-চাটুকারদের মালিশের রাজনীতি শেষতক জিন্দাবাদ হয়ে দাঁড়ায়।
একবার শ্রদ্ধাভাজন প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেছিলেন, রাজনীতিকে চামচারাই নিয়ন্ত্রণ করে। যার কারণে নেতারা ঘোরের মধ্যেই হোক বা বিভ্রান্তির মধ্যে চোরাবালীতে পা রাখেন। বিএনপির এক শীর্ষ নেতাকে কথা প্রসঙ্গে বলছিলাম আপনি কি রাজাকার ছিলেন? তিনি বললেন, এটা কি বললেন, রাজাকার হতে যাবো কেন। নিজের গায়ের গন্ধ অনেকে নিজে জানেনা।
কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, আমরা সবাই পাপী/আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি। রাজনীতিবিদদের মধ্যেও এই ব্যাধি এখন চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। একে অন্যকে বা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিজের দলের হোক বা অন্যকোন দলের হোক ঘায়েল করতে বিভেদ, অনৈক্য বা কোন্দলে জড়িয়ে রাজনীতির সুষ্ট পরিবেশ কলুষিত করছে।
দেশের রাজনীতিতে সরকারীদল হোক বা বিরোধীদল হোক বুর্জোয়ারা নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতি। যে কারনে ছিটকে পড়ছে তৃণমূলের পোড়খাওয়ারা। যে কারনে রাজপথে ও আন্দোলন সংগ্রামে থাকা সাধারণ নেতাকর্মীরা পদ পদবী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এলাকায় নেই, সাংগঠনিক কোন কাজে নেই, ফেইসবুক মাষ্টার হয়েই নেতা হয়ে যাওয়ারাই পাচ্ছে পদ-পদবী। এতে করে ক্ষোভের সঞ্চার শুধু সরকারীদলেই নয়, বিরোধীদলেও রয়েছে।