পাঠানটুলীতে পুকুর ভরাট, সুপারভাইজার বদলী

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ পেলেন নগরীর ২৮নং পাঠানটুলী ওয়ার্ডে নজীর ভান্ডার (র.) মাজার লেইন এলাকায় একটি বড় পুকুরে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে।

আজ শনিবার বেলা ১২ টায় প্রশাসক অভিযোগরে সত্যতা যাঁচাইয়ের জন্য ছুটে যান এই এলাকায়। সরেজমিন পুরো এলাকা হেঁটে পরিদর্শন শেষে পুকুরে ময়লা আবর্জনা ফেলার অভিযোগের সত্যতা দেখতে পান।

প্রশাসক এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, পাঠানটুলী ওয়ার্ডের পুকুরে ময়লা ফেলে ভরাটের যে চিত্র প্রত্যক্ষ করলাম তা রীতিমত বেআইনি কর্মকান্ড। পুকুর-জলাশয় রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) এর আইন রয়েছে। কেউ ইচ্ছে করলেই পুকুর ভরাট করা পারে না। পাঠানটুলী ওয়ার্ড এমনিতে গিঞ্জি এলাকা অগ্নিকান্ড ও বৃষ্টির দিনে পানি ধরে রাখতে পুকুর জলাশয়ের প্রয়োজন রয়েছে।

তিনি বলেন, এলকায় অগ্নিকান্ডের মত দুর্ঘটনা ঘটলে অগ্নিনির্বাপনে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ী ঢুকতে সমস্যা হবে। তাই আগুন থেকে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি ও অতিবৃষ্টিতে জলাবন্ধতা থেকে রক্ষা ও পানি ধারণ ক্ষমতার উৎস হলো পুকুর জলাশয়। আশ্চর্যজনক হলো নগরীর কিছু মানুষের চিন্তা শক্তি লোপ পেয়েছে। তারা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলছে। প্রশাসক বলেন, নগরে বসবাসকারীদের নাগরিক হয়ে উঠতে হয়, না হলে দূর্ভোগের শেষ হবে না।

তিনি পুকুরে ফেলা সকল আবর্জনা দ্রুত পরিস্কারে কর্পোরেশনের অতিরিক্ত পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এসময় তিনি ওই এলাকার রাস্তায় পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নিয়মিত ঝাড়ু দেয়না বলে প্রশাসককে অভিযোগ দিলে তিনি তাৎক্ষনিক ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন সুপারভাইজারকে ভর্ৎসন করে, তাঁকে তৎক্ষনিক ওই এলাকা থেকে শাস্তি স্বরূপ বদলী করতে প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে ওয়াকিটকির মাধ্যমে নির্দেশ দেন।

পরে তিনি পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার যোগাযোগ করে ‘বড় পুকুরটি’ রক্ষায় আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। পরিদর্শনকালে এলাকার রাস্তার উপর বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা দেখে তা অবিলম্বে সরিয়ে নিতে বলেন, না হয় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জেল জরিমানা করা হবে বলে ভাসমান হকার-ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেন।

প্রশাসক বলেন, নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সব শ্রেণি পেশার নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। কর্পোরেশনের কর্মীরা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কাজে গাফেলতি করলে ব্যবস্থা নিব। কিন্তু যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলাতো দন্ডনীয় অপরাধ। গৃহস্থালী ময়লা আবর্জনা সংরক্ষণে ঘরে ঘরে কর্পোরেশনের বীন দেয়া আছে। বীন ময়লা-আবর্জনা সংরক্ষণের পর কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন সেবকদের দিলে তারা তা নিয়ে যান। অথবা নির্দিষ্ট ডাষ্টবিনে আবর্জনা ফেললে হয়। কিন্তু সরাসরি পুকুরে ফেলে তা ভরাট করে ফেলা এটাতো দন্ডনীয় অপরাধ। পরিবেশের জন্যও ক্ষতি। এই পুকুরের পানি পানের ফলে যেকোন সময় পেটের পীড়া ডায়রিয়া-টাইফয়েডের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়ে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়তে পারে। কাজেই সমাজের মঙ্গলের স্বার্থে নিজের আশ-পাশ রাস্তা ঘাট পরিস্কার রাখবেন এটাই প্রত্যাশা।

খোরশেদ আলম সুজন আরো বলেন, নগরীর পাঠানটুলী, কদমতলী, বাইতুশ শরফ মাদ্রাসা ও দেওয়ানহাট এলাকায় ব্যবসাীয়গণ দোকানের সামনে ফুটপাতের উপর তাদের মালামাল টায়ার, টিউব, গাড়িার যন্ত্রাংশ রেখে অবৈধভাবে ফুটপাত দখল করে রেখেছেন। এতে জনসাধারণ ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে না পেরে রাস্তা দিয়ে চলাচল করে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন। প্রশাসক ব্যবসায়ীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুটপাত হতে তাদের মালামাল অপসারণ করে জনসাধারণের চলাচলের পথ সুগম করার নির্দেশ দেন। অন্যথায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে জেল জরিমান করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.