আসামীর জামিনের পরই পুলিশের রিমান্ড আবেদন
সিটি নিউজঃ চট্টগ্রামে সাংবাদিক গোলাম সওয়ার গত ২৯ অক্টোবর অপহরণের পর উদ্ধার হয় ১ নভেম্বর। অপহরণের পর তার অন্যান্য জিনিসপত্রের সাথে দামী মোবাইলটিও খোয়া যায়। অপহরণ ঘটনার পর সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের জোরালো আন্দোলনের মুখে সীতাকুণ্ডে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। চিকিৎসার পর ৪ নভেম্বর রাতে কোতোয়ালী থানায় গোলাম সরওয়ার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এর পর থেকে মামলার তদন্ত চলে। এরই মধ্যে তার খোয়া যাওয়া মোবাইলটি সিমসহ উদ্ধার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। মোবাইলের সাথে সম্পৃক্ত ২ জন আসামীকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। থানা পুলিশ আসামীদের আদালতে চালান দেন। বিজ্ঞ আদালত আসামীদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ৩ তফা আবেদন করে আসামীরা জামিন পান। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের রিমান্ডের আবেদন করে আসামীদের জামিনের পরদিন।
থানায় মামলার পরে আসামীসহ বাদীর মোবাইল উদ্ধার, আমাসীদের আদালতে চালান দেওয়া, কিছুই জানলেন না মামলার বাদী গোলাম সরওয়ার। অথচ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে প্রায়ই কথা হয় বাদীর।
এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ধর্মেন্দু দাশ বলেন, এ মামলায় ২ জন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইল ও সিম উদ্ধার করেছি। তবে আসামীদের কাছ থেকে অপহরণ সংক্রান্ত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। আসামীদের জামিন হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জামিন হয়েছে।
আদালত থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে নগরীর আলমাস সিনেমার কাছে গুলশান ক্লাবের সামনে থেকে অপহৃত হন গোলাম সরওয়ার। ১ নভেম্বর সীতাকুণ্ডের পাহাড়ী এলাকায় তাকে পাওয়া যায় অজ্ঞান অবস্থায়। অপহরণের পর সাংবাদিক সমাজ প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেন। এসস কর্মসূচীতে বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে হারিয়ে যাওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে গত ৯ ডিসেম্বর কাজীর দেউড়ী নূর আহাম্মদ সড়কের যাত্রী ছাউনির পাশ থেকে জনৈক মোহাম্মদ শাহিন নামে একজনকে গ্রেফতার করে। এবং তার কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ২ হাজার টাকায় মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামে একজনের কাছ থেকে মোবাইলটি ক্রয় করেছে। পরে মোবাইল বিক্রেতা ইব্রাহিমকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন দুইজনকে আদালতে হাজির করলে আদালত কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, গ্রেফতারের ৪ দিনের মাথায় আদালতে জামিনের আবেদন করেন। জামিন আবেদনের উপর শুনানীর জামিন নামঞ্জুর হয়। এরপর ১৭ ডিসেম্বর আবারও জামিন চাওয়া হয়। এবার আবেদন নামঞ্জুর হয়। ২০ ডিসেম্বর আবারো জামিন আবেদন হলে আদালত জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এবং ঐদিনই মোহাম্মদ শাহীনের জামিন হয়। পরদিন ২১ ডিসেম্বর জামিন হয় ইব্রাহিমের। দুই আসামীর জামিনের পর ২২ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের রিমান্ডের আবেদন করেন।
আলোচিত এ মামলার বিষয়ে বাদী গোলাম সরওয়ার জানান, আমার সাথে তদন্ত কর্মকর্তার প্রায়শই কথা হচ্ছে। তিনি সবসময় তদন্তের ব্যাপারে আমাকে সহযোগীতা করতে বলেন। আমার মোবাইল ও সিম কার্ড উদ্ধার হল, এর সাথে সম্পৃক্ত দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করল অথচ আমি জানতে পারলাম না। রিমান্ডের আবেদন আদালতে আসার আগের দিনই আসামীর জামিন হয়ে গেছে। এ তথ্য আদালত থেকে জানার পর আমি হতবম্ব।
সিটি নিউজ/ডিটি