শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় সরগরম বন্দর নগরীর অলিগলি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন

0

সিটি নিউজ চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের বাকি আর একদিন। প্রচারণাও তুঙ্গে।  মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শেষ মুহূর্তের প্রচারণায়। ভোটের দিন যত কাছে আসছে প্রচারণা তত জোরদার হচ্ছে।

নির্বাচনি গান, মাইকিংয়ের সঙ্গে পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীতে। কর্মী-সমর্থকেরা নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোটারদের মন জয় করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচন ঘিরে পাড়া-মহল্লায় ভোটাররাও এখন ব্যস্ত চুলচেরা বিশ্লেষণে। তবে দুয়েকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় প্রার্থীসহ ভোটারদের মধ্যে কিছুটা শঙ্কাও কাজ করছে। শেষ মুহুর্তের নির্বাচনে প্রচারের উচ্ছ্বাসে আচরণবিধিরও ধার ধারছেনা অনেক প্রার্থী। গণসংযোগ-পথসভার নামে তারা করেছেন বিশাল জনসভা। আজ সোমবার মধ্যরাতেই শেষ হচ্ছে প্রার্থীদের টানা ১৮ দিনের প্রচারণা।

স্থগিত হওয়ার পর নতুন করে ভোটের তারিখ ২৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করায় টানা ১৮ দিনের প্রচারণা শেষ হচ্ছে সোমবার মধ্যরাতে। এদিন থেকে শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় কোনও ব্যক্তি জনসভা বা কোনও অনুষ্ঠান আহ্বান, এসবে যোগদান কিংবা কোনও মিছিল, শোভাযাত্রা করতে পারবেন না।

এদিকে,আওয়ামী লীগ-বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি জমে উঠেছে চসিক নির্বাচনের প্রচারণা। বড় দুই দলের দুই প্রার্থীই শেষ মুহুর্তে চষে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন অলিগলি। এ সময় প্রত্যেকেই বাসযোগ্য নগরী গড়ার অঙ্গীকার করেন। বন্দরনগরীতে রোদের ঝিলিক যতটা না উত্তাপ ছাড়িয়েছে, তার চেয়ে ঢের বেশি উত্তাপ, চসিক নির্বাচনী মাঠে। দুই বড় দলের চার হেভিওয়েট প্রার্থীই রোববার সকাল থেকেই রয়েছেন নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায়।  সোমবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাড়া-মহল্লা ছেয়ে গেছে নির্বাচনি পোস্টারে।

রাস্তায়-রাস্তায় বাজছে নির্বাচনি গান। মাঝে মাঝে ভোটের  স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠছে বিভিন্ন এলাকা। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাদের কেউ কেউ পথসভা করছেন, কেউ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমর্থন চাইছেন, কেউ নিজ এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের মিছিল করে ভোট চাইছেন। কয়েকটি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন উৎসবের ভোটের প্রতিক্ষায় আছেন তারা। সাধারণ মানুষ তাদের পক্ষে আছেন বলে দাবি তাদের।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এলাকার ১৭,১৮ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, পোস্টারে পোস্টারে চট্টগ্রাম নগরী পড়েছে পুরো এলাকা। এই এলাকায় প্রার্থীদের প্রচারণার আওয়াজ তুলনামূলক কম, বরং বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। এর মধ্যে বিএনিপর মনোনীত প্রার্থী শঙ্কার কথা বললেও আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ অন্য প্রার্থীরা বললেন, পরিবেশ ভালোই আছে। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনিত কাউন্সিলর প্রার্থী একেএম আরিফুল ইসলাম ডিউক বলেন, আমার প্রচারণা চলছে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি আমি। গিয়ে উন্নয়নের কথা তুলে ধরে ভোট চাচ্ছি। নিয়মিতভাবেই প্রচারণা করছি। কিছু সমস্যা তো আছেই। প্রতিপক্ষের হুমকি-ধমকি, ক্যাম্প ভেঙে দেওয়া, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা। নির্বাচনের দিন এসব ঘটনা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। তবে এমন কোনও অভিযোগ নেই একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহীদুল আলম তিনি বলেন, পরিবেশ ভালো আছে। আগের চেয়ে অন্তত ভালো আছে। এই এলাকার কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে শঙ্কা যেমন আছে, তেমনি আছে নির্বাচনের আমেজও। তবে প্রার্থীদের প্রচারণার তীব্র আওয়াজে খানিকটা বিরক্ত তারা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের একজন ভোটার বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশটা উৎসবমুখরই হওয়া উচিত। তবে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা বাড়ে। প্রার্থীদের প্রচারণার সময় কিছুটা সহনীয় হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, যে কোনো সময়ের চেয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে। প্রার্থীরা তাদের প্রচার চালাচ্ছেন। আমাদের কাছে যেসব অভিযোগ আসতেছে,তা দ্রুত সমাধান করতেছি।

প্রসঙ্গত, চসিক নির্বাচনে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন ভোটার। পূর্বে নির্ধারিত ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চার হাজার ৮৮৬টি কক্ষে ভোটগ্রহণে দায়িত্ব পালন করবেন ৭৩৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, চার হাজার ৮৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও নয় হাজার ৭৭২ পোলিং কর্মকর্তা।

 

সিটি নিউজ/জিএস

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.