হজের দায়িত্ব সৌদি আরবের কাছেই থাকবে: বাদশা সালমান

0

মোরশেদ রানা, সৌদিআরব: সৌদি আরবের পবিত্র হজের সময় মিনায় দুর্ঘটনার হতাহতের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন হজ আয়োজনে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে। কিন্তু সোমবার সৌদি বাদশা সালমান এসব দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, হজ আয়োজনের বিষয়ে সৌদি আরবের ভূমিকা নিয়ে কোন পরামর্শ গ্রহণ করা হবেনা।

তিনি দাবি করেন, দায়িত্বহীন এসব বিবৃতির মাধ্যমে দুর্ঘটনা থেকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা চলছে ।তবে এগুলো হজে সৌদি আরবের ভূমিকাকে কোনভাবেই প্রভাবিত করবে না এবং সৌদি আরবের মূল দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহর অতিথিদের সেবা করা। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সিকে(এসপিএ) দেয়া এক বিবৃতিতে সালমান বলেন, আল্লহর অতিথিদের সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা,নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার জন্য সম্ভাব্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সৌদিআরব।

মিনার দুর্ঘটনার পর দেশটির হজ আয়োজকরা তাদের ভূমিকা এবং দায়িত্ব নিয়ে প্রচুর সমালোচিত হয়েছেন বিশেষ করে ইরানের কাছে।
বিদেশি কর্মকর্তাদের তথ্যানুযায়ী ওই দুর্ঘটনায় ৪৬৪ জন ইরানী ব্যক্তি নিহত হয়েছেন সংবাদমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশের পর ইরানের একজন ধর্মীয় নেতা হজ আয়োজনের দায়িত্ব সকল ইসলামী রাষ্ট্রকে দেয়ার দাবি তুলে ছিলেন।

আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ ইমামিকা সানি বলেন। হজ আয়োজনে সৌদিআরব অযোগ্য। দুর্ঘটনার দুই দিন পর ওই ঘটনার নিহতের সংখ্যাকে ৭৬৯ বলে জানালেও তার পর আর কোন হতাহতের তথ্য দেয়নি সৌদি আরব। এমনকি জাতীয়তার ভিত্তিতেও মৃতদের তথ্য তারা প্রকাশ করেনি।
হজের কয়েক দিন আগে ক্রেন দুর্ঘটনায় বিদেশিসহ নিহত হন ১০৯ জন।

তাছাডা, হজের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সৌদি আরবের হাতেই থাকছে বলে জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ তুর্কি আল ফয়সাল। গত রোববার দেশটির রাজধানী রিয়াদে এক প্রশাসনিক বৈঠক পরবর্তীতে যুবরাজ এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। পাশাপাশি হজের উপর সৌদি আরবের অধিকার এবং এরসঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্ব জড়িয়ে আছে বলেও তিনি জানান।
গত মাসে মক্কায় পদদলিতের ঘটনায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মারা যায়। সৌদি সরকারের হিসেব মতে, মৃতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়ায়নি। কিন্তু অ্যাসোসিয়েট প্রেসের মতে, মৃতের সংখ্যা ১৪০০’র বেশি। তাই দ্য অ্যাসোসিয়েট প্রেসের সঙ্গেই একমাত্র এবিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হন সৌদি রাজপরিবারের নেতৃস্থানীয় যুবরাজ তুর্কি।

মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব দেশটি প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই সাউদ পরিবার দেশটিকে শাসন করছে। আর এই কারণে গোড়া থেকেই হজ এবং ইসলামের পবিত্র স্থান মক্কা এবং মদিনার দেখভালের দায়িত্বও এই পরিবারটি ক্ষমতাবলে নিয়ে নেয়। পূর্বসূরীদের মতো সৌদি আরবের বর্তমান বাদশাও ‘কাস্টোডিয়ান অব দ্য টু হলি মস্কস’ বা ‘পবিত্র দুই মসজিদের অভিভাবক’ পদবী ধারণ করে আছেন। তবে গত মাসের ঘটনা পরবর্তীতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হজের রক্ষনাবেক্ষনে অনিয়ম এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়। আর তখনই প্রশ্ন আসে, বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে কেন হজের দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হবেনা।

এমন অবস্থায় যুবরাজ তুর্কি আল ফয়সাল বলেন, ‘চলতি বছর ধরে হজযাত্রীদের ভ্রমন সংক্রান্ত নানান বিষয় নিয়ে আমরা বাজে সময় অতিবাহিত করছি। আগের দিনেও রোগ এবং মানুষের ভিড় সামলাতে হয়েছে আমাদের। এই দুই মসজিদে আগত হজযাত্রীদের সেবা করার অধিকার আমরা ছাড়তে পারি না। মক্কার দায়িত্ব তারাই নিতে পারে কেবল, যারা এই অঞ্চলটি পুরোপুরি চেনে এবং জানে। আপনি চাইলেই মক্কার মানুষদের কাছ থেকে সে অধিকার কেড়ে নিতে পারেন না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.