পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম হবে আদর্শ শহরের মডেলঃ মেয়র

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, তার কার্যকাল পাঁচ বছরে চট্টগ্রাম আদর্শ শহরের মডেল হিসেবে দাঁড়াবে। এ বিষয়ে কারও পরামর্শ নিতে সংকীর্ণতা নেই।

আজ সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে চসিকের দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, তার কথা ইশতেহারে বলে দিয়েছিন। অনেকে মনে করে, চট্টগ্রাম শুধু মেয়রের। তিনি সেই পুরনো ধারণা ভেঙে দিতে চান । এ চট্টগ্রামে অনেক জ্ঞানী, সাংবাদিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী, বিশেষজ্ঞ আছেন। তাদের মেধা তিনি কাজে লাগাতে চান। রাস্তার যানজট থেকে বিভিন্ন সমস্যা মেয়রের ওপর এসে পড়ে। এ শহর আমার আপনার সবার। তাই সবার সঙ্গে পরামর্শ করতে চান, মেধা কাজে লাগাতে চান। চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে চান। কারণ ব্যক্তির চিন্তা চেতনায় ভুল থাকতে পারে। সামষ্টিক চিন্তায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি শুধু মুখপাত্র, প্রতিনিধি। ভোটের জন্য দুয়ারে দুয়ারে গেছি৷ পাঁচ বছরও সবার সঙ্গে পরামর্শ করে এগিয়ে যাবো। আমি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি পেশার সবার সহযোগিতা চাই। আমার পরিষ্কার কথা হচ্ছে, যে সেবা সংস্থা গাফিলতি করবে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। অনেক সমম্বয় সভা হয়েছে, কিন্তু কার্যকর সেবা পায়নি। মেয়রের নির্বাহী ক্ষমতা থাকা উচিত। জনভোগান্তি যেমন কমবে টাকারও অপচয় হবে না।

জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে চট্টগ্রামের উন্নয়নভার নিয়েছেন। টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন হচ্ছে। আমি জননেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। জনগণ জননেত্রীর উন্নয়নের ওপর আস্থা রেখেছেন বলে নৌকাকে জয়ী করেছেন। চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্য ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। সফলতা আমাদের আসবে। চট্টগ্রাম আদর্শ শহরের মডেল হিসেবে দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, প্রথমে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবো। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খলায় আনবো। মানুষ শান্তি চায়। ১০০ দিনে সব রাস্তা হয়ে যাবে তা আবেগের কথা। যান চলাচলের উপযুক্ত করার চেষ্টা করবো। যেকোনো মূল্যে খাল উদ্ধার করবো। পাঁচ বছরে শহর জলাবদ্ধতামুক্ত হবে। আসুন চট্টগ্রামকে গড়ে তুলি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি আমরা এ শহরে চাই না। আমরা শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমরা চাই যিনি নগরপিতা হিসেবে দায়িত্ব নেবেন তার কাছে অপরাজনৈতিক শক্তি ও যারা সন্ত্রাস করে তাদের স্থান হবে না। সন্ত্রাসমুক্ত খুন-খারাবিমুক্ত চট্টগ্রাম চাই।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সবাইকে সাথে নিয়ে, সমন্বয়ের মাধ্যমে কোনো ধরনের আমাদের প্রতিযোগিতার প্রয়োজন নেই, বিবাদের প্রয়োজন নেই, বিরোধের প্রয়োজন নেই, সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এ শহরের সব নাগরিক, সব জনপ্রতিনিধি সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে পারি। মানুষের চাহিদা সীমিত। যদি সবাই সহযোগিতা করেন তাহলে শতভাগ প্রত্যাশা পূরণ হবে।

সমাবেশে চসিকের বিদায়ী প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ৬ মাস আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। যতদিন আইন করে সিটি করপোরেশনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন প্রত্যাশা থাকবে বেশি, কাজ হবে কম। মহাসমস্যা চসিকের আয়। যে প্রতিষ্ঠান লাভবান হচ্ছে তাদের কাছ থেকে সারচার্জ আদায় করতে হবে। নগরবাসী ২০ শতাংশ ব্যবহার করে, বাকি অংশ ব্যবহার করে বন্দর, কাস্টম, ইপিজেড, বড় বড় কারখানা। তারা করিমুদ্দিন আলিমুদ্দিনের মতো ট্যাক্স দিলে হবে?

মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ, চবির সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ারুল আজিম আরিফ, চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চুয়েট উপাচার্য ড. রফিকুল আলম, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ হারুন, নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন, রেড ক্রিসেন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম, আইইবির সভাপতি প্রবীর কুমার সেন, চবির সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, নগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ প্রমুখ।

সিটি নিউজ/ডিটি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.