কোরিয়ায় দেড় কোটি ওন আত্মসাৎ, বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মামলা

0

অসীম বিকাশ বড়ুয়া, দক্ষিণ কোরিয়া থেকেঃ দক্ষিণ কোরিয়ায় আজিজুল হক নামে এক বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সই জাল করে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি ওন ( বাংলাদেশেী টাকায় ৭ লাখের বেশি) অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠেছে।  আজিজুল হক ইপিএস (এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম) কর্মী।

এ বিষয়ে দেশটির রাজধানী সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসে লিখিত অভিযোগ করেছেন আরেক ইপিএস কর্মী প্রয়াত শহীদুল ইসলামের (৩০) স্ত্রী নাজমিন আক্তার। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোরিয়ায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের ২৫ জুন রাতে কোরিয়ায় মারা যান শহীদুল ইসলাম। তার বাবার নাম আব্দুল বাসেত। তিনি ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দেশটির হোয়াসংসির মাদুমিয়োংয়ের একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার দেশের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিয়াটি থানার পারকি ইউনিয়নের রোহা নামক গ্রামে।

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মৃতের মামা আজিজুল হক দ. কোরিয়ার স্যামসাং বীমা কোম্পানিতে ভুয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দাখিল করে ক্ষতিপূরণের অর্থ ও কৌশলে ব্যাংকে সঞ্চিত অর্থ আত্মসাৎ করেন।

আজিজুল হকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শহীদুল ইসলামের স্ত্রী নাজমিন আক্তার বাংলাদেশ দূতাবাসে আবেদন করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামীর কোরিয়ান ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১ কোটি ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫ কোরিয়ান ওন এবং স্যামসাং বীমা কোম্পানি থেকে ৪৬ লাখ ২ হাজার ৭৩০ কোরিয়ান ওন প্রতারণার মাধ্যমে তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন আজিজুল হক।

অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রয়াত শহীদুল ইসলামের ব্যাংকের গোপন নম্বর, এটিএম কার্ড হস্তগত করেন আজিজুল হক। এরপর শহীদুলের স্ত্রীর ছবি ব্যবহারসহ সই জাল করার মাধ্যমে আমমোক্তারনামা বীমা কোম্পানিতে উপস্থাপন করেন আজিজুল।

নিয়মানুযায়ী বীমা কোম্পানিতে উপস্থাপিত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে সত্যায়িত করার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এক্ষেত্রে তা করেননি তিনি।

জানা গেছে, ক্ষতিপূরণ পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের একটি তালিকা পাঠিয়ে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দূতাবাসের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু পরিবার সেগুলো না পাঠিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে। পরবর্তীতে বীমা কোম্পানিতে যোগাযোগ করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে।

এদিকে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বীমা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষতিপূরণের বাকি অংশ পরিশোধ প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সিউলে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মকিমা বেগম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর কোরিয়ার স্থানীয় সিহং থানায় আজিজুল হকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ দূতাবাস। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

এদিকে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ভুক্তভোগী নাজমিন আক্তার বাংলাদেশ দূতাবাস ও কোরিয়ান প্রশাসনের কাছে আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধারসহ আজিজুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি তার পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আজিজুল হক বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সত্য উদঘাটনের জন্য ইতোমধ্যেই আমি সমস্ত কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠিয়েছি।

সিটি নিউজ/ডিটি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.