চার সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে জুনে

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

0

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশঃ চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভায় শঙ্খ নদীর উপর সেতুসহ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ছয় লাইন বিশিষ্ট ৪টি নতুন সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে আগামী জুন মাসে। এ চারটি সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ক্রমান্বয়ে দৃশ্যমান হচ্ছে সেতুগুলো।

সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চন্দনাইশের দোহাজারী শঙ্খ নদী, বরুমতি খাল, পটিয়ার ইন্দ্রপুল, চকরিয়ার মাতামুহুরিসহ ৪টি সেতু ছয় লাইন বিশিষ্ট হলেও যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে শঙ্খ, মাতামুহুরি ও ইন্দ্রপুল সেতু প্রথমে তিন লাইনে কাজ সম্পন্ন করে আগামী জুন মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হবে। পরে বিদ্যমান পুরনো সেতুগুলো ভেঙে বাকি তিন লাইনের কাজ করা হবে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঐ তিনটি সেতুর বাকি তিন লাইনের কাজও সম্পন্ন হবে বলে জানা যায়।

তবে চন্দনাইশ উপজেলার বরুমতি খালের উপর মাজার পয়েন্ট সেতুর ছয় লাইনের কাজ সম্পন্ন করে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হবে। চারটি সেতুর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে স্পেক্টা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে ঘিরে অনেক মেগা প্রকল্প অত্যন্ত দ্রুততার সহিত বাস্তবায়ন করছে বর্তমান সরকার। এসব প্রকল্পকে ঘিরে দেশী-বিদেশীদের পদচারণা বেড়ে চলেছে। তাদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। পর্যটন খাতের ব্যবসার প্রায় পুরোটাই নির্ভরশীল এ সড়ক পথ।

জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বেশির ভাগ আর্থিক সহায়তায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহসড়কে ছয় লাইনের চারটি নতুন সেতু নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। সরকার ও জাইকার যৌথ অর্থায়নে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের অধীনে নির্মাণাধীন চারটি ছয় লাইনের সেতু হচ্ছে মহাসড়কের পটিয়া ইন্দ্রপুল সেতু ৬০ মিটার লম্বা ও পাশে ৩১.২০ মিটার, চন্দনাইশের বরুমতি খালের ওপর মাজার পয়েন্ট সেতু ৬০.১৫ মিটার লম্বা ও পাশে ৩১.২০ মিটার, একই উপজেলার দোহাজারীতে শঙ্খ নদীর ওপর সেতুটি ২৩৮ মিটার লম্বা ও পাশে ৩১.২০ মিটার, এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর ওপর মাতামুহুরী সেতু, ৩২১ মিটার ও পাশে ৩১.২০ মিটার। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এসব সেতু ও কালভার্টের দুই পাশে হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. জাহেদ হোসেন মুঠোফোনে জানান, “চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় শঙ্খ নদীর উপর সাংগু সেতুর সাতটি পিলারের মধ্যে পাঁচটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী দুইটির মধ্যে ১টি ৭০ শতাংশ, অপরটি ৩০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাঁচটি পিলারের উপর গার্ডার বসানো শেষে স্ল্যাব বসানোর কাজও সম্পন্ন হয়েছে।

ব্রীজ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত একজন সহকারী প্রকৌশলী জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দুইটি পিলারের কাজ সম্পন্ন হবে। গার্ডার তৈরি করা রয়েছে। পিলারের কাজ সম্পন্ন হলে গার্ডার স্থাপন করা হবে। একই উপজেলায় বরুমতি খালের ওপর মাজার পয়েন্ট সেতুর পিলার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পুরোদমে চলছে গার্ডার ও স্ল্যাব বসানো এপ্রোচ সড়কের কাজ।

অপরদিকে পটিয়া উপজেলার ইন্দ্রপুল সেতুর তিন লেনের পাইলের কাজ শেষে এখন চলছে পিলার নির্মাণের কাজ। কক্সবাজার জেলার চকরিয়া মাতামুহুরি নদীর ওপর মাতামুহুরি সেতুর আটটি পিলারের মধ্যে সাতটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে গার্ডার ও স্ল্যাব বসানোর কাজ। আগামী সপ্তাহে বাকি থাকা পিলারটির নির্মাণ কাজও সম্পন্ন হবে।

আগামী জুন মাসের মধ্যে শঙ্খ, মাতামুহুরি ও ইন্দ্রপুল সেতুর তিন লাইন যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। পরে বিদ্যমান পুরনো সেতুগুলো ভেঙে বাকি তিন লাইনের কাজ শেষে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তিন সেতুর ছয় লাইন দিয়েই যানচলাচল করবে যানবাহন। অপরদিকে চন্দনাইশ উপজেলার মাজার পয়েন্ট সেতুর ছয় লাইনের কাজ একেবারে সম্পন্ন করে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিটি নিউজ/ডিটি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.