মামলা করবেন কাদের সিদ্দিকী

0

সিটিনিউজবিডি : টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) উপ-নির্বাচনে তার এবং স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীর মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখায় প্রার্থিতা পেতে আদালতে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি মামলা করার এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় তাদের আপিল করার সুযোগ দেয়া হয়েছে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রার্থিতা বাতিলের পর আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি। ইসির আপিল শুনানিতে আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেয়নি তারা।’

বঙ্গবীর বলেন, ‘কিছুদিন আগে অগ্রণী ব্যাংক বোর্ড সভায় সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থাকে ১০ শতাংশ সুদে ১০ বছর মেয়াদে ঋণ পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যা অশ্রেণীকৃত তালিকায় ছিল। ফলে মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরদিন পর্যন্ত ব্যাংকের কাগজপত্রে আমি ঋণখেলাপি ছিলাম না। পরবর্তীতে অগ্রণী ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখা ঋণখেলাপি বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি চিঠি দেয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা পরে নির্বাচন কমিশনের কাছে সে চিঠি পাঠায়। এভাবে আমার ও আমার স্ত্রীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমি ঋণ খেলাপি না হলেও ব্যাংকের ছলনায় এখন আমি ঋণ খেলাপি।’ আর এধরনের ছলনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে অগ্রণী ব্যাংক কে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিজের ও স্ত্রীর প্রার্থীতা বাতিল হওয়ার পরও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে জানান তিনি।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘পাকিস্তানের প্রতি বাংলার জনগণের একটা ক্ষোভ ছিল আর সেটা হলো ভোটাধিকার। আর সেই ভোটাধিকার বর্তমান সরকার কেড়ে নিয়েছে। তাই এ সরকারের ওপর মানুষের আস্থা নেই।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধানে স্পষ্ট লিখা আছে, জনগণের ভোটে সাংসদ নির্বাচিত হবেন। আর সেইসব সাংসদের নিয়ে সরকার গঠন করা হবে। কিন্তু বেশির ভাগ সাংসদ অনির্বাচিত। তাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, দেশে যত উপনির্বাচন হবে সেগুলোতে অংশগ্রহন করবে।’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি টাঙ্গাইল ৪ (কালিহাতি) থেকে উপনির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে চাইনি। কিন্তু রামপুরের জনসভায় জনগণের ভালবাসার চাপে আমি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেই। এরপর শুদ্ধভাবে আমি ও আমার স্ত্রী নির্বাচন কমিশন বরাবর মনোনয়নপত্র পূরণ করে জমা দেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যাবেন।’ এ সপ্তাহের মধ্যেই তিনি আদালতে যাবেন বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপনির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে ঋণ খেলাপীর দায়ে তাদের দু’জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এরপর গত শুক্রবার এ দুই প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। কিন্তু ইসির আপিল বিভাগ গতকাল রোববার এ দুই প্রার্থীর উপস্থিতিতে শুনানি করে মনোনয়নপত্র বাতিলের রায় বহাল রাখে।

এ বিষয়ে ইসির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান আরজু সাংবাদিকদের বলেন, ‘টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপনির্বাচনে কাদের সিদ্দিকী ও নাসরিন সিদ্দিকীর মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদনের শুনানি শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তার রায় বহাল রাখা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.