নেইমার-সুয়ারেসের নৈপুন্যে বার্সার জয়

0

স্পোর্টস ডেস্ক : চমক দেখানো এইবারের প্রতিরোধ ভেঙে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে বার্সেলোনাকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন লুইস সুয়ারেস। ৩-১ গোলের এই জয়ে বড় অবদান রেখেছেন পুরো ম্যাচে দারুণ খেলা নেইমার।

রোববার রাতে কাম্প নউতে ম্যাচের শুরুর দিকে পিছিয়ে পড়া বার্সোলোনাকে একটু পরেই সমতায় ফেরানোর পর দ্বিতীয়ার্ধে নেইমারের সহায়তায় আরও দুটি গোল করেন সুয়ারেস।

গত মৌসুমে মাত্র লা লিগায় খেলার স্বাদ পাওয়া এইবার যে এখন আর দুর্বল দলটি নেই তা বোঝা গেল দ্রুতই। ম্যাচের প্রথম সেভটা করতে হয় বার্সেলোনার গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভোকে। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে আন্দের কাপার দূরপাল্লার একটি শট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঠেকান চিলির এই গোলরক্ষক।

পরের মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর বাঁ পাশ থেকে সুয়ারেসের নেওয়া ভলিটা লক্ষ্যে থাকেনি।

পুরো স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দিয়ে এইবার এগিয়ে যায় দশম মিনিটেই। প্রতি আক্রমণ থেকে কেকোর শট ভালোমতো ঠেকাতে পারেননি ব্রাভো। বল পেয়ে ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে কোনাকুনি শটে জালে পাঠিয়ে দেন ফরোয়ার্ড বোর্হা বাস্তন।

ক্যাম্প নউতে প্রথম তো বটেই, বার্সেলোনার জালেই এটা এইবারের প্রথম গোল।

এই মৌসুমে লিগে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচেই নিজেদের জাল অক্ষত রাখতে পারল না লা লিগা চ্যাম্পিয়নরা। রক্ষণভাগ নিয়ে কোচ লুইস এনরিকের ম্যাথা ব্যথাটা তাই বাড়ারই কথা।

পিছিয়ে পড়ে গোলের জন্য মরিয়া স্বাগতিকদের অবশ্য বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ২১তম মিনিটে সের্হিও বুসকেতসের লম্বা পাস থেকে বল সান্দ্রো রামিরেস দারুণ ভলিতে পাঠান ঠিক গোলের সামনে। অরক্ষিত সুয়ারেসের লাফিয়ে উঠে জোরাল হেড করতে কোনো সমস্যাই হয়নি। উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার বলের নাগাল না পেলেও সমস্যা হতো না; ঠিক পেছনেই হেডের জন্য তৈরি ছিলেন নেইমারও।

বার্সেলোনার জার্সিতে অভিষেকের ঠিক বর্ষপূর্তিতে গোল পেলেন এই এক বছরে আরও পরিণত হয়ে ওঠা সুয়ারেস।

৩০তম মিনিটে দূরপাল্লার শটে ভাগ্য পরীক্ষা করেছিলেন সিমোনে ভার্দি। বল পোস্ট ছাড়িয়ে জড়ায় সাইড নেটে। বার্সেলোনার রক্ষণভাগকে তখন নড়বড়ে মনে হয় আবারও।

৩৫তম মিনিটে বার্সেলোনার একটি ভালো আক্রমণকে সফল করতে পারেননি সান্দ্রো রামিরেস। ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে ঠিক মতো শট নিতে পারেননি স্পেনের এই ফরোয়ার্ড।
৪০তম মনিটে আবার বার্সেলোনার রক্ষণের পরীক্ষা নেয় এইবার। কেকোর শট শুয়ে পড়ে ঠেকান ডিভেন্ডার মার্ক বার্ত্রা।

বিরতির আগে ফ্রি-কিক থেকে সাফল্য পাননি নেইমার। তবে বিরতির পর দেখা গেল তার কারিশমা।

৪৮তম মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে একজনকে কাটিয়ে আরও দুই জনের মাঝ দিয়ে নেইমার বল বাড়ান সুয়ারেসকে। ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বাঁ পোস্ট ঘেঁষে বল জালে পাঠিয়ে দেন উরুগুয়ের এই তারকা ফরোয়ার্ড।

ভিআইপি বক্সে বসে সুট-টাই পরে খেলা উপভোগ করা মেসির মুখে তখন হাসি। চোটের জন্য দীর্ঘসময় ধরে মাঠের বাইরে থাকা আর্জেন্টিনা তারকার অভাবটা অনেকটাই যে পুষিয়ে দিচ্ছেন নেইমার-সুয়ারেস।

৫৭ মিনিটে নেইমারের সহায়তায় হ্যাটট্রিকের সুযোগ এসেছিল সুয়ারেসের; কিন্তু ডি-বক্সের মাঝ থেকে নেওয়া তার ভলিতে জোর ছিল না। গোলরক্ষককে বল ঠেকাতে বেগ পেতে হয়নি।

৬৬তম মিনিটে নেইমারের ফ্রি-কিক রক্ষণ দেয়ালে প্রতিহত হয়। ৭৫তম মিনিটে নেইমার তাই সুযোগ দিলেন রাকিতিচকে। তবে ক্রোয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডারের বাঁকানো ফ্রি-কিকও লক্ষ্যে থাকেনি।

৮৩তম মিনিটে রেফারির সঙ্গে তর্ক করায় বার্সেলোনা মিডফিল্ডার হাভিয়ের মাসচেরানোকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়। ম্যাচে ফেরার একটা সুযোগ তৈরি হয় এইবারের।

দুই মিনিট পরেই অবশ্য সমর্থকদের সব শঙ্কা দূর করে দেন সুয়ারেস। আবারও পেছন থেকে নেইমারের দুর্দান্ত পাস। ডি-বক্সের ভেতর বল আয়ত্মে নিয়ে বাঁ কোনা দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করে নেন সুয়ারেস। লিগে এই মৌসুমে এটা তার সপ্তম গোল।

এই জয়ে শীর্ষে থাকা রিয়াল মাদ্রিদকে পয়েন্টে ধরে ফেলল বার্সেলোনা। নয় ম্যাচে দুই দলেরই পয়েন্ট ২১।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.