নাটোরে চেয়ারম্যান হত্যায় ১১ জনের যাবজ্জীবন

0

সিটিনিউজবিডি : নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান ফনু (৫৯) হত্যা মামলায় ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম আহমেদ খলিলুর রহমান সোমবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আদালত দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে ১৩ আসামি উপস্থিত ছিলেন। সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়। পাঁচ আসামি এখনও পলাতক আছেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ফরিদুল ইসলাম ফর্দু, আব্দুল করিম, ময়েন উদ্দিন, মোহাম্মদ তালেব, শামসুল ইসলাম (পলাতক), রায়জুল হাসান রিপন, মোহাম্মদ আলী, নাজিম, নয়ন হোসেন, কলম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিল ফটিক ও আলমগীর হোসেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফজলার রহমান ফনু উপজেলা সদরে সভা শেষে ভাতিজা জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে কলম ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছিলেন। উপজেলার সাওল গ্রামের শাহপাড়া কালিমন্দিরের পেছনে পৌঁছালে প্রতিপক্ষ করিম ও তার অনুসারীরা ফনুকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। তিনি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। পরে তাকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। মোটরসাইকেল চালক জাহিদুল ইসলামকেও (২৫) কুপিয়ে গুরুত আহত করা হয়।

পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে দু’জনকে নাটোর জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক চেয়ারম্যান ফজলার রহমান ফনুকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরের দিন কলম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল ফটিকসহ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছোট ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনু।

মামলাটির তদন্তভার পান এসআই ওসমান গনি। ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলাটি র্যাবের কাছে স্থানান্তর করা হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম ২০১৪ সালের ৫ জুন ১৮ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। চলতি বছরের ১৮ মে মামলাটি রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। মামলার ২২ জনের সাক্ষগ্রহণ শেষে সোমবার দুপুরে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট অঙ্কুর সেন ও মিজানুর রহমান।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নিহত ফনু চেয়ারম্যানের ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, তারা আশা করেছিলেন ইব্রাহিম খলিল ফটিকসহ কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড দেবেন বিচারক। কিন্তু তা না হওয়ায় হতাশ তারা।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অঙ্কুর সেন এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডটি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে সংঘটিত হয়। এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিকল্পিতভাবে জড়ানো হয়েছিল। এ রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.