অনুদান নয়, ক্ষতিপূরণ চান অর্থমন্ত্রী

0

সিটিনিউজবিডি :: জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থছাড় করেনি। তাই এই টাকা অনুদান হিসেবে নয়, সফট লোন (স্বল্প সুদে ঋণ) হিসেবে চান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তজার্তিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড হতে অর্থপ্রাপ্তির সুযোগ, প্রাপ্যতা ও চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক দিনব্যাপী কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) উদ্যোগে এবং জিআইজেড, আইসিসিএডি, ব্র্যাক এবং ইউএনডিপি এরর সহযোগিতায় কর্মশালাটির আয়োজন করা হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের কোপেনহেগেন সম্মেলনে ইংল্যান্ডের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের সভাপতিত্বে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য ২০২০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের চুক্তি হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত উন্নত দেশগুলো প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থছাড় করেনি।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ বাংলাদেশ। কিন্তু আমরা ক্ষতিপূরণ বাবদ কোনো অর্থ পাইনি। কোপেনহেগেন সম্মেলনের পর আরও অনেক সম্মেলনে আমি ক্ষতিপূরণের টাকা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছি। আমার ৬০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনুদান হিসেবে নয়, আমাদের এ টাকা সফট লোন হিসেবে পেলেই হবে।

কর্মশালায় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, পরিবেশ দূষণ আলোচিত বিষয়। উন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মেরুকরণ ও পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে সুনামি, আইলা, নার্গিসের মতো দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবের কথা বলে উন্নত দেশগুলো অর্থছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করে না। এ কারণে আমাদের ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। জিসিএফ ফান্ডের টাকা আমরা আদায় করবো। এর জন্যে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা অর্জন করা জরুরি।

আমির হোসেন আমু বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হয়- এমন কোনো কাজ সরকার করবে না। এ কারণে সরকার পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশবান্ধব শিল্প কারখানা তৈরি করার উদ্যোগ নিচ্ছে। রাজধানীকে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে সাভারে ট্যানারি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

জাতিসংঘের প্রতিনিধি ওয়ার্ড কিনসন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ বেশি ঝুঁকিতে আছে। এ ঝুঁকি মোকাবেলায় আদ্দিস আবাবা জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে উন্নত দেশগুলোর অর্থায়নের জন্য রূপরেখা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি অনুসারে এ অর্থায়ন করেনি। ওই সম্মেলনে বাংলাদেশ এ ঝুঁকির কথা বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে। এখন তাদের কাছ থেকে কীভাবে অর্থ আদায় করবে এসব নিয়ে কৌশল ঠিক করতে হবে।

পল্লী সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কাজী খালেকুজ্জামান বলেন, জলবায়ুর প্রকল্পগুলো পেতে হলে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, ডিসিসিআইয়ের সভাপতি মতলুব আহমেদ প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.