যে কারণে গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি থাকে

0

লাইফস্টাইল ডেস্ক :: গর্ভকালীন কিছু জটিলতা থাকতে পারে। নূন্যতম প্রস্তুতি এবং সচেতনতা থাকলেও এগুলো মোকাবিলা করা তেমন কোন সমস্যা নয়। তবে জানা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

lরক্ত স্বল্পতা, জন্ডিস, খিঁচুনি, পা ফুলে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত বমি হওয়া, পেটে ব্যথা, বিশেষ করে তলপেটে ও শ্বাসকষ্ট হওয়া।

lপ্রায়ই জবর হওয়া

lডায়াবেটিস ধরা পড়া বা রক্তে সুগার পাওয়া

lপ্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া হওয়া

lপ্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া

lদিন যাচ্ছে কিন্তু তলপেটের আকার বাড়ছে না

lযোনিপথে রক্ত ক্ষরণ, রক্তস্রাব, দুরগন্ধযুক্ত স্রাব

lজরায়ুর ভিতরে সন্তানে চড়াচড়া অনুভব করতে না পারা।

উপরোক্ত এই সমস্যাগুলো দেখা দিলে কোন রকম চিন্তা না করে চিকিত্সকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী।

কি কি কারণে গর্ভধারণ

ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে

আগেই বলেছি মা হওয়ার জন্য বয়সটা খুব জরুরি।

l১৮ বছর বয়স না হতেই গর্ভধারণ

l৩০ বছরের পর প্রথম সন্তান নেয়া

l৪০ বছরের পর সন্তান ধারণ

lচতুর্থ সন্তানের পর আবারও সন্তান ধারণ

lআগের গর্ভের সময় জটিলতা হওয়া

lঅস্ত্রোপচারের পর নির্দিষ্ট সময় পার না হতেই আবার গর্ভধারণ করা।

lমেয়েদের উচ্চতা, তুলনামূলক বেঁটে বা খাটো মেয়েদের গর্ভধারণ

lরক্তস্বল্পতা ও যমজ সন্তান ধারণ।

গর্ভাবস্থায় প্রিএক্লামশিয়া

এটি একটি অন্যতম জটিলতা। এক্ষেত্রে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, প্রস্রাবে প্রোটিন, উপরের পেটে ব্যথা, বমি হওয়া, মাথা ব্যথা ইত্যাদি দৃশ্যত বেশ কিছু জটিলতা এসময় তৈরি হয়। গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার কিছু সমস্যা এবং রক্ত সরবরাহের ঘাটতির কারণে দেখা দেয় এই এক্লামশিয়া। এগুলে া সাধারণত: হয় তখনই যখন আপনি প্রথম বারের মত মা হচ্ছেন, আপনার ওজন বেশি, বয়স ৪০ এর বেশি, আপনার উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অথবা কিডনির সমস্যা আছে। আপনার পরিবারের অন্য কারো এক্লামশিয়া ছিলো অথবা আপনি বহুবার অন্তসত্মা হয়েছেন।

গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা সমস্যা

সাধারণত: এর কোন লক্ষণ দেখা যায় না। একমাত্র স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমেই এটা ডায়াগনসিস করা সম্ভব হয়। তবে যোনিপথে রক্তক্ষরণ হলে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। গর্ভফুল সাধারণত আংশিক বা পুরোপুরি ঢেকে ফেলে জরায়ুর মুখকে। প্রস্রব ব্যথা শুরুর পর জরায়ুর মুখ যখন খুলে যায়, তখন গর্ভফুল ক্রমেই সরে আসতে থাকে গর্ভাশয়ের দেয়াল থেকে। এসময়টা তাদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ যারা অধিক সন্তান জন্ম দিয়েছেন, জরায়ুতে এর আগে অপারেশন করা হয়েছে অথবা আগের সন্তান যদি সিজারিয়ান-এর মাধ্যমে হয়ে থাকে।

গর্ভাবস্থায় রিলাক্সিন হরমোন জয়েনগুলোকে অনেকটাই শিথিল করে দেয়। কিন্তু এটা যদি বেশি পরিমাণে হয়, তখন তা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন-কোমরের জয়েন্টের ওপরে ব্যথা, পিউবিক হাড় এবং পিঠের নিচে ব্যথা হতে পারে এ কারণে। গর্ভাবস্থায় যে কোনো সময়ে এটি হতে পারে। তবে প্রথম তিন মাসের পর এটি হতে দেখা যায়।

গর্ভাবস্থায় চুলকানি

অনেকের গর্ভাবস্থায় হাতে-পায়ে চুলকানি হতে পারে। এটা সাধারণত যকৃতের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। এটা যে কারও হতে পারে। তবে পরিবারের মা বা বোনের এরকম ইতিহাস থাকলে এটা হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন

এটি একটি অন্যতম বিবেচ্য বিষয়। নির্দিষ্ট অনুপাতে ওজন না বাড়া হচ্ছে সন্তানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যহত হওয়া বা মায়ের সঠিক পুষ্টির অভাব। এর মানে মাকে প্রয়োজনীয় খাবারগুলো সুষম খাবার খাওয়া একান্ত আবশ্যক। একজন নারীর স্বাভাবিক অবস্থায় যে পরিমাণ সুষম খাবার প্রয়োজন, সেই তিনিই যখন সন্তান ধারণ করেন তখন তার চাহিদা আরও বেড়ে যায়। প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রেই খাবারটা খুবই জরুরি। গর্ভবতী নারীর অতিরিক্ত খাবার প্রয়োজন হয় প্রধানত: দুটি কারণে। এক-নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে, অর্থ্যাত্ আসন্ন সন্তান প্রসবের জন্য নিজেকে তৈরি করতে। দুই-গর্ভস্থ ভ্রুণের গঠন ও বৃদ্ধি ঠিক রাখতে। মা যদি খাবার কম খান তাহলে সন্তানের ওজনও বাড়বে না, প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবে। শেষ পর্যন্ত একটি অপরিণত শিশুর জন্ম হবে। একটা কথা মনে রাখতে হবে, যেকোন জটিলতা এড়াতে নিয়মিত চিকিত্সকের কাছে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই। যেকোন কিছুই হোক না কেন, তা চেক-আপে ধরা পড়বেই। আর তাহলে চিকিত্সাও সম্ভব হবে। আর রোগীর মনকেও অনেকখানি প্রশান্তি দেওয়া সম্ভব হবে। সুতরাং একটি সুস্থ-সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে মায়েদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার কোন বিকল্প নেই।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.