অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি কেমন?

0

স্পোর্টস ডেস্ক :: ২০১৫ সালটি দারুণ কেটেছে ক্রিকেট দলের। বছর খানেক আগেই ধুঁকতে থাকা একটি দলের এমন সাফল্য বিস্মিত করেছে সবাইকে। বাংলাদেশের এমন সাফল্যের নানা কারণ থাকতে পারে, তবে সবচেয়ে বড় কারণটি সবার জানা – মাশরাফি বিন মুর্তজা। ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ ওয়ানডে দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ দল বদলে গেছে। কেবল অধিনায়কত্ব দিয়েই যে দলকে জেতানো যায় সেটি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে প্রথম দেখিয়েছেন মাশরাফি। গতকাল দেখালেন আবার। আক্ষরিক অর্থেই কেবল অধিনায়ক হিসেবেই কাল কুমিল্লা দলে খেললেন মাশরাফি!

বিপিএল শুরু হওয়ার আগেই হালকা চোট পেয়েছিলেন। প্রথমে এতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও টুর্নামেন্ট যত গড়িয়েছে ততই যেন মাশরাফিকে ক্লান্ত মনে হচ্ছিল। আগের ম্যাচে তো মাঠ থেকে উঠে গিয়ে সবার মনে আতঙ্কই ছড়িয়েছেন। কালকের ম্যাচে তাই না নামার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু কুমিল্লা দল চেয়েছিল বোলার মাশরাফি যদি নাও পাওয়া যায়, অন্তত অধিনায়ক মাশরাফি যেন মাঠে থাকেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্ট চেয়েছিল আমি অন্তত মাঠে থাকি। এ মুহূর্তে মাঠ চালানোর মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় নেই দলে, সবাই তরুণ। জিততে হলে বিদেশি কাউকে হয়তো দিতে হয়। তাই দল চেয়েছিল ঝুঁকি না নিয়ে অন্তত মাঠে থাকি। নিজেরও ভালো লেগেছে মাঠে থাকতে পারে।’

কুমিল্লার দর্শকেরাও ব্যাপারটি বুঝেছেন খুব দ্রুত। তাই ব্যাটিং বা বোলিং কোনো ক্ষেত্রেই মাশরাফিকে দেখা না গেলেও একটু পর পর স্লোগান দিয়েছেন তারা ‘মাশরাফি-মাশরাফি’ বলে। দর্শকদের এমন সমর্থন দারুণ লেগেছে মাশরাফির, ‘দর্শকদের ধন্যবাদ সমর্থন করার জন্য। প্রয়োজন হলে ব্যাটিং করতে হতো। বোলিং করব না আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। বোলিং করাটা আমার কাজ। ওটা না করতে পারলে ভালো লাগার কথা নয়। দিন শেষে জিতেছি। তাই ভালো লাগছে।’

দলের বোলিংয়ের পুরোটা সময় অধিনায়ক মাশরাফির দেখা মিলেছে। বোলিং পরিবর্তন করিয়েছেন, তরুণ বোলারদের বুদ্ধি পরামর্শ দিয়েছেন, মাঠ সাজিয়েছেন। ব্যাটিংয়ের সময়ও যে অধিনায়ক মাশরাফি চোখের আড়ালে ব্যস্ত থাকেন সেটিও জান গেল কাল। অন্যদিনের মতো নিজে আগে না নেমে অলক কাপালিকে আগে পাঠানোর কারণ জানানোর সময় বোঝা গেল সেটি, ‘ম্যাচে এমন একটা পরিস্থিতি ছিল, ওখানে আসলে ব্যাটসম্যানদের দরকার ছিল। এ কারণে অলককে পাঠানো হয়েছিল। এর পর আমি না গিয়ে আরিফকে পাঠাতাম। আমি মারতে গিয়ে মিস করলে দলে চাপে পড়ে যেত।’

শুধু অধিনায়ক হিসেবে খেলেছেন। সে জন্য পুরো মনোযোগটাও দিতে পেরেছেন অধিনায়কত্বে। এমন বিরল এক সুযোগ দেওয়ার জন্য কিছুটা কৃতিত্ব পেতেই পারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস টিম ম্যানেজমেন্ট, ‘ধন্যবাদ জানাই টিম ম্যানেজমেন্টকে। আজ কেবল অধিনায়কত্বের জন্য আমাকে মাঠে চেয়েছিল তারা। কাজটা একটু সহজ হয়েছে, ঠান্ডা মাথায় ঠিকভাবে চিন্তা করতে পেরেছি।’

এত কিছুর পরও কথা থেকে যায়, পুরোনো ‘বন্ধু’ চোট আবারও ফিরে আসছে না তো! ঢাকার বিপক্ষেও তো বল করার কথা ছিল না মাশরাফির। কিন্তু দলের প্রয়োজনে বল করেছেন। কালও খেললেন কেবল অধিনায়ক হিসেবে। কিন্তু মাশরাফি গুরুত্ব দিলেন না ব্যাপারটিকে, ‘আমার চোট সিরিয়াস নয়। হলে শেষ ম্যাচে যেভাবে বোলিং করেছি, ওভাবে করতে পারতাম না। ঢাকায় গিয়ে জাতীয় দলের ফিজিও, চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করে এমআরআই করে দেখব পেশির কোথাও চিড় ধরেছে কি না।’

চোটকে মাশরাফি যেভাবে উড়িয়ে দিলেন, ঠিক সেভাবেই শঙ্কাটা উড়ে গেলেই ভালো। শুধু কুমিল্লা দলেরই নয়, জাতীয় দলেরও যে খুব বেশি দরকার অধিনায়ক মাশরাফিকে। মাশরাফিই যে বাংলাদেশ দলের জিয়ন কাঠি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.