লক্ষ্মীপুরে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে বিএনপি-জাপার শঙ্কা

0

সিটিনিউজবিডি :: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে লক্ষ্মীপুরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। লক্ষ্মীপুর পৌর সীমানা সম্প্রসারিত এলাকার নতুন ভোটার তালিকা না হওয়ায় এটি ছাড়া জেলার অন্য ৩টি পৌরসভায় আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব পৌরসভায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগসহ সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয় করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। তবু ভোটযুদ্ধে জনমত যাচাই করতে মাঠে রয়েছেন সব দলের প্রার্থীরা। আনুষ্ঠানিকতা না হলেও চলছে প্রচার-প্রচারণা। ভোট প্রার্থনায় প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা। তবে ভোটাররা বলছেন, দল বিবেচনা করে নয়, সৎ, যোগ্য ও এলাকার উন্নয়নে যে কাজ করবে, এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন তারা।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর পৌর সীমানা সম্প্রসারিত এলাকার নতুন ভোটার তালিকা না হওয়ায় এটি ছাড়া জেলার রায়পুর, রামগতি ও রামগঞ্জ পৌরসভায় ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। ইতিমধ্যেই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ সমাপ্ত করেছে নিজ নিজ এলাকার রিটার্নিং অফিসাররা।

১৯৯৪ সালের ২০ জানুয়ারি ৯ দশমিক ০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তন ও ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয় রায়পুর পৌরসভা। বর্তমানে এখানে ৪৫ হাজার লোক বসবাস করছে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা এটি। ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ২১১ জন। পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৩৬৯, নারী ভোটার ৯ হাজার ৮৪২ জন। এখানে মেয়র পদে ৬ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৭ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

১৯৯১ সালের ৩০ নভেম্বর ১৭ দশমিক ০৫ বর্গকিলোমিটার আয়তন ও ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে স্থাপিত হয় রামগঞ্জ পৌরসভা। প্রায় ৭৩ হাজার ১০০ মানুষ বসবাস করছেন পৌর এলাকায়, এটিও প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। এখানে ভোটার সংখ্যা ২৯ হাজার ৫১৬ জন। পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৮৬৬ জন, নারী ভোটার ১৪ হাজার ৬৫০ জন। এখানে মেয়র পদে ৬ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মেঘনার কোল ঘেঁষে ১১ দশমিক ৮১ বর্গকিলোমিটার আয়তন ও ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে ২০০০ সালে গঠিত হয় রামগতি পৌরসভা। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি ও জেলে সম্প্রদায় হওয়ায় শিক্ষার হার ৪০ ভাগ। ফলে তৃতীয় শ্রেণিতেই রয়ে গেল পৌরসভাটি। এখানে ভোটার সংখ্যা ১৭ হাজার ৩৭৬ জন। পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৯০৯ জন, নারী ভোটার ৮ হাজার ৪৬৭ জন। মেয়র পদে ৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ইতিমধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি, বিগত দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে ও ভোট প্রার্থনায় ভোটারদের শরণাপন্ন হচ্ছেন তারা। তবে ভোটাররাও তাদের নাগরিক অধিকার আদায়ে সচেষ্ট রয়েছেন এবার। তারা বলছেন, দল বিবেচনা করে নয়, সৎ, যোগ্য ও এলাকার উন্নয়নে যে কাজ করবে এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন, আবার কেউ বলছেন ভোটের পরেও যেন জনগণের সঙ্গে থাকেন এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন, এমন প্রার্থী বেছে নেবেন তারা। আবার সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানের দাবি জানান কেউ কেউ।

এ তিনটি পৌরসভায় মূলত আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সরকার দলের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগসহ সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবু নোমান। তাদের মতে, সুষ্ঠু ভোট হলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের প্রার্থীরা জয়ী হবেন।

অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন তাদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার সফলতা ও বিরোধী দল পরিচালনায় খালেদা জিয়ার ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে ৩টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হবে। কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে না। লক্ষ্মীপুরের জনগণ শেখ হাসিনার পক্ষে রয়েছে।

জেলা নির্বাচন অফিসার সোহেল সামাদ জানান, এখন পর্যন্ত কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘনে কোনো অভিযোগ করেনি, যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.