“সেলিম ভাইয়ের দুই নয়ন পৌরসভার উন্নয়ন, রাখে আল্লাহ মারে কে কামরুল ভাইকে ঠেকায় কে”

0

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী:: বাঁশখালী পৌরসভা নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে পৌর এলাকা। বাঁশখালীর প্রাণকেন্দ্র সাবেক জলদী ইউনিয়নকে ২০০২ সালের ডিসেম্বরে পৌরসভা এলাকায় হিসেবে ঘোষনা করা হয়। একদিকে বাঁশখালীর প্রাণ কেন্দ্র, অপরদিকে পৌরসভা সব মিলিয়ে বাঁশখালীবাসীর মূল সংযোগস্থলে পরিণত পৌর এলাকাটি।

পৌরসভার বয়স এক যুগ পেরিয়ে গেলেও আশানুরূপ উন্নয়ন ছোঁয়া বঞ্চিত পৌরবাসী নতুন করে স্বপ্ন দেখছে আগামীতে যে পৌর পিতা হিসাবে আসবে তারই হাতে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগে আধুনিক পৌরসভায় পরিণত হবে বাঁশখালীটি। এই প্রতিক্ষায় এখন দিনরাত সরগরম হয়ে উঠেছে পৌর এলাকায় নির্বাচনী আমেজ।2b936b56-ea4e-4c58-b74d-3fca5528bb73

আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী সেলিমুল হক চৌধুরী বর্তমান সরকারের নানা মুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড সহ পৌরসভার মেয়র পদে বিজয়ী হলে বাঁশখালীতে আধুনিক এবং মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গিকার করছেন। অপরদিকে সাবেক পৌর মেয়র এবং বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী কামরুল ইসলাম হোছাইনী বিগত দিনে যারা মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারা বাঁশখালীর পৌর এলাকাকে গর্তে পরিণত করেছেন।

সেই গর্ত ভরাট সহ আধুনিক পৌরসভা নিশ্চিত করতে ধানের শীষ মার্কায় ভোট প্রার্থনা করছেন। প্রচার-প্রচারণায় “সেলিম ভাইয়ের দুই নয়ন পৌরসভার উন্নয়ন, রাখে আল্লাহ মারে কে কমরুল ভাইকে ঠেকায় কে” এই ভাইে চলছে বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। তবে সাধারণ ভোটাররা বিগত এক যুগ আগে বাঁশখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পৌরবাসী নানা উন্নয়নের আশায় আশ্বানিত হলেও পৌর এলাকায় শুধু জায়গা জমির দাম বৃদ্ধি ছাড়া তেমন কিছু হয়নি। অপরদিকে জায়গা জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণ তাদের নালা নর্দ্দমা থেকে শুরু করে পুকুরটি পর্যন্ত ভরাট এমনকি বেচাবিক্রি করেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পৌর এলাকায় জলমগ্নসহ অফিস আদালত ভবনে পানি উঠে। সেই হিসাব করছে এখন সাধারণ ভোটাররা।

বাঁশখালী পৌর এলাকা হিন্দু বৌদ্ধ অধ্যুষিত হলেও সবাই চায় পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজ করবে সেই ধরনের একনিষ্ট মেয়র। যার ছোঁয়ায় আধুনিক পৌরসেবা পাবে জনগণ। মেয়রদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরা থেমে নেই প্রচার-প্রচারণা থেকে। সারা বাঁশখালীর উৎসুক জনগণ এখন পৌরসভা এসে সময় কাটাচ্ছে নির্বাচনীক আলাপ আলোচনায়। তবে পৌরনির্বাচনে রাজনৈতিক দলের ব্যানারের পাশাপাশি ব্যক্তিত্বকে প্রধান দেবে সাধারণ ভোটাররা। বাঁশখালী পৌরসভায় মেয়র পদের জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইছমাইল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও পরবর্তীতে তা জমা প্রদান করেননি। বিগত নির্বাচন গুলোতে বিএনপি’র সাথে জামায়াতের একটি সুসম্পর্ক থাকলেও এবার পৌরসভাও সেই সম্পর্ক অটুট থাকবে কিনা তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

কারণ জামায়াতের বিগত দুর্দিন গুলোতে বিএনপি’র পক্ষ থেকে অসহযোগিতার কথা বলছে বার বার জামাত কর্মীরা। অপরদিকে জাতীয় পার্টির পক্ষে উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ইব্রাহিম আল্ হোছাইন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদান করলেও পরবর্তীতে তা প্রত্যাহার করে। জাতীয় পার্টি বর্তমান সরকারের সাথে কর্মকান্ড পরিচালনা করলেও বাঁশখালীর চিত্র হচ্ছে ভিন্ন। কারণ বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী কামরুল ইসলাম হোছাইনী ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থী ইব্রাহিম আল হোছাইন দুই জনই চাচাতো জেঠাতো ভাই। সেই সুবাদে জাতীয় পার্টির সমর্থন কোন দিকে তা এখনো বলা মুশকিল বলে অভিমত ব্যক্ত করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। এদিকে বাঁশখালী পৌরসভায় নির্বাচনে এবার ১১টি ভোট কেন্দ্রে ১২ হাজার ১শ ৪৭ জন পুরুষ ভোটার এবং ১১ হাজার ৬শ ৪৬ জন মহিলা ভোটার ভোট প্রদান করছেন।

বাঁশখালী পৌরসভার ১১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে জলদী ভাদালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭টি বুথে ২ হাজার ৭শ ২০ জন, জলদী কেয়াং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪টি বুথে ১ হাজার ২শ ৬৯ জন , উত্তর জলদী হলস্যা পাড়া রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩টি বুথে ১ হাজার ৩৪ জন, বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭টি বুথে ২ হাজার ৭শ ৩৬ জন, পূর্ব জলদী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬টি বুথে ২ হাজার ৩শ ২৯ জন, রুহুল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭টি বুথে ২ হাজার ৬শ ৫৮ জন, উত্তর জলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৭টি বুথে ২ হাজার ৪শ ৭৮ জন, দক্ষিণ জলদী আস্করিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮টি বুথে ২ হাজার ৯শ ৪৯ জন, দক্ষিণ জলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮টি বুথে ৩ হাজার ৪৪ জন, রংগিয়াঘোনা মনছুরিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪টি বুথে ১ হাজার ২শ ২০ জন, দোসারী পাড়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪টি বুথে ১ হাজার ৩শ ৫৬ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

অপরদিকে প্রতীক পেয়ে মাঠে নেমে পড়েছে সংরক্ষিত ও সাধারণ আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী ১নং ওয়ার্ডে সারবান তাহেরা ফেরদৌসী (ভ্যানিটি ব্যাগ), ফাতেমা বেগম (গ্যাসের চুলা), রুজিনা আক্তার (মৌমাছি), হামিদা বেগম (কাঁচি), সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী (আঙ্গুর), ২নং ওয়ার্ডে নিলুফা আক্তার (আঙ্গুর), রোজিনা সুলতানা (কাঁচি), ঝর্ণা সুশীল (হারমোনিয়াম), ৩নং ওয়ার্ডে ছাদেকা নুর খানম বিউটি (কাঁচি), নারগিস আক্তার (আঙ্গুর), সাধারণ আসনে ১নং ওয়ার্ডে আবদুর রহমান (উট পাখি), নজরুল ইসলাম (টেবিল ল্যাম্প), মোঃ আবদুল হাকিম (পাঞ্জাবী), ২নং ওয়ার্ডে মিলন বড়–য়া (ডালিম), তপন কান্তি বড়–য়া (পাঞ্জাবী), হারুনুর রশিদ (উট পাখি), উত্তম কুমার বড়–য়া (টেবিল ল্যাম্প), ৩নং ওয়ার্ডে মানিকুল আলম (ডালিম), আবদুল অদুদ লেদু (উট পাখি), আনছুর আলী (ব্লাক বোর্ড), ফিরোজ শাহী (টেবিল ল্যাম্প), জমশেদ আলম (ফাইল কেবিনেট), এইচএম মিজানুর রহমান (ব্রিজ), মৌলভী ছাবের আহমদ (ঢেরশ), ৪নং ওয়ার্ডে মোঃ শামশুল ইসলাম হেলাল (পানির বোতল), নুরুল আবছার (পাঞ্জাবী), ছৈয়দ আহমদ (ডালিম), মোঃ আজগর হোসেন (উট পাখি), ৫নং ওয়ার্ডে নজরুল কবির (পাঞ্জাবী), রেজাউল করিম কালু (ডালিম), মোঃ ইছহাক (উট পাখি), মোঃ আলীমুল্লাহ (গাজর), ৬নং ওয়ার্ডে দিলীপ চক্রবর্ত্তী (টিউব লাইট), আক্তার হোসেন (ব্রিজ), সুদেব চন্দ্র সুশীল (পাঞ্জাবী), পুলিন শীল (ডালিম), ৭নং ওয়ার্ডে মোঃ হারুন (পাঞ্জাবী), মোঃ কিবরিয়া আজম (উটপাখি), ৮নং ওয়ার্ডে প্রণব কুমার দাশ (উট পাখি), ব্যোমপতি দাশ (পাঞ্জাবী), বাবলা কুমার দাশ (ডালিম), বিকাশ চন্দ্র দেব (টেবিল ল্যাম্প), ৯নং ওয়ার্ডে মোঃ জসিম উদ্দিন (গাজর), বদিউল আলম (ডালিম), দেলোয়ার হোসেন (পাঞ্জাবী), বিপন কান্তি বড়–য়া (উট পাখি), মোঃ মহিবউল্লাহ (পানির বোতল)। দিন রাত হারাম করে ভোটারদের ধারে ধারে ভোট চেয়ে সাধারণ কাউন্সিলররা। তবে নির্বাচন শতভাগ শান্তিপূর্ণ করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.