বিজয়ের রঙে সেজেছে আজিজ স্টেডিয়াম

0

চট্রগ্রাম অফিস:: লাল-সবুজের বিজয়ের রঙে সেজেছিল এমএ আজিজ স্টেডিয়াম। গ্যালারিতে শোভা পাচ্ছিল ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’, ‘স্বাধীন এ বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় মাতৃভূমি’ ইত্যাদি। তার মাঝে হাজারো শিশু-কিশোর, দেশপ্রেমী মানুষের মিলনমেলা। বাদ্যের তালে তালে কুচকাওয়াজ, অভিবাদন আর মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে উপভোগ করেন অতিথি ও সমবেত দর্শকরা।

সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এরপর জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে শুরু হয় মূল পর্ব।

বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল্লাহ প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় চার নেতা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, নাম জানা-না জানা সব মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনা, মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ককে।

ছবি- মোহাম্মদ হানিফ/সিটিনিউজবিডি
ছবি- মোহাম্মদ হানিফ/সিটিনিউজবিডি

তিনি বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সামনে রেখে এগিয়ে চলছে দেশ। বিপুল জনসংখ্যা এখন জনশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়াই বাংলাদেশের একমাত্র লক্ষ্য নয়, ২০৪১ সালে উন্নত ও ধনী রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের মধ্যদিয়ে প্রমাণ হয়েছে আমরা পারি, আমরা পারবো। এর জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি।

সরকারের বিভিন্ন সাফল্য, অগ্রগতি ও চলমান উন্নয়ন প্রকল্প তুলে ধরে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে টেকসই উন্নয়ন ধারা সূচিত হয়েছে। বিজয়ের ৪৫তম বর্ষে এসে ছিটমহলে লাল-সবুজের পতাকা উড়ছে, বইছে আনন্দের বন্যা।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সমৃদ্ধির দুয়ার। বাংলাদেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত চট্টগ্রামের উন্নয়ন। মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আমাদের এ স্বাধীনতা কারও অনুগ্রহে পাওয়া নয়। এ জাতি বীরের জাতি। এক সাগর রক্ত দিয়ে এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি আমরা। বাঙালি জাতি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম ও চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার।

প্যারেড কমান্ডার আবদুল ওহাবের নেতৃত্বে কুচকাওয়াজে অংশ নেয় জেলা পুলিশ, নগর পুলিশ, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কারারক্ষী দল, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস, কমিউনিটি ভলান্টিয়ার্সের দল।

ছবি- মোহাম্মদ হানিফ/সিটিনিউজবিডি
ছবি- মোহাম্মদ হানিফ/সিটিনিউজবিডি

অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেয় জেলা নৌ স্কাউট, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন স্কুল স্কাউট, গালর্স গাইড, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ডা. খাস্তগীর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজি মুহাম্মদ মহসিন উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, অংকুর সোসাইটি স্কুল, মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল, নাসিরবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কদম মোবারক এমওয়াই, রেলওয়ে পাবলিক, বন গবেষণাগার, বাকলিয়া আদর্শ বালিকা, হাতেখড়ি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কাজীর দেউড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোটমণি নিবাস, রেলওয়ে স্টেশন কলোনি, সরকারি শিশু পরিবার, লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পোস্তারপাড়, কাপাসগোলা, চট্টগ্রাম বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, ফুলকুঁড়ি আসর, চিটাগাং পুলিশ ইনস্টিটিউট, বিজিএমইএ স্কুল, দক্ষিণ কাট্টলী প্রাণহরি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মোহাম্মদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি মূক বধির বিদ্যালয়, সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছে।

বেলা সোয়া ১১টায় শুরু হয় ডিসপ্লে। উদ্বোধনী ডিসপ্লে ছিল শুভ্রা সেনগুপ্তার পরিচালনায় শিশু একাডেমির শিশুদের। এরপর শিশু পরিবারের বালিকাদের পরিবেশনা ছিল অসাধারণ। ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘একি অপরূপ রূপে মা তোমায়’, ‘তীরাহারা এ ঢেউয়ের সাগর’, ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ইত্যাদির সমন্বয়ে শিহরণ জাগানো পরিবেশনা ছিল দলটির। কুচকাওয়াজে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন মো. মমিনুর রহমান ও নাসরিন
সুলতানা।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ শেষে সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত হয় মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা। এতে ১২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ৭ সদস্যকে সংবর্ধনা জানাবে জেলা প্রশাসন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.