অর্থবাণিজ্য ডেস্ক : শুধু বাণিজ্য সুবিধার ইঙ্গিত নয়, আগের চুক্তিগুলোর বাস্তবায়ন চেয়েছে স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি)। গতকাল বুধবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডবিল্গউটিও) দশম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে উন্নত দেশগুলোর প্রতি এই বার্তা দেন এলডিসির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। উন্নত দেশের বাজারে পণ্য রফতানিতে অর্থবহ শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেওয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য দোহা উন্নয়ন এজেন্ডা এবং বালি প্যাকেজে উন্নত দেশগুলোর অনেক অঙ্গীকার থাকলেও তার অনেকটাই কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় স্বল্পোন্নত দেশগুলো আগের চুক্তিগুলোর বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাচ্ছে।
কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত প্রথম এই প্লেনারি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন কেনিয়ার বৈদেশিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী আমিনা মোহাম্মদ। এ সময় ডবিল্গউটিওর মহাপরিচালক রবার্তো আজেভেদোসহ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নত দেশগুলোর এত অঙ্গীকার সত্ত্বেও বিশ্ব বাণিজ্যে এলডিসির অংশীদারিত্ব মাত্র ১ দশমিক ২৪ শতাংশ। তেল বাদ দিয়ে এ সুবিধা মাত্র দশমিক ৭২ শতাংশ। এলডিসি দেশগুলোর ৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। সেবা খাতে এলডিসির অংশীদারিত্ব মাত্র দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ অবস্থায় এলডিসিগুলো বাণিজ্যিকভাবে অর্থবহ বাজার সুবিধার অঙ্গীকার চাচ্ছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘উন্নত দেশের কাছে আমরা কোনো ইঙ্গিত চাই না, চাই বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার। তিনি আরও বলেন, এলডিসি দেশগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে নীতি গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। নাইরোবির এ সম্মেলনে তা নিশ্চিত করতে হবে।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী নির্মলা শিতারাম বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বক্তব্য সমর্থন জানিয়ে বলেন, দোহা চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। ভারত হংকং ঘোষণা অনুযায়ী প্রথম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এলডিসিগুলোকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ট্রিপস চুক্তি অনুযায়ী এলডিসিগুলোকে ছাড় দেওয়া হলেও দোহা রাউন্ডের অন্য অনেক বিষয় এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এলডিসি দেশগুলো দোহা এজেন্ডার কার্যকর সমাপ্তি চায়। তিনি বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্যের বড় ধরনের অংশীদারিত্ব তৈরি হচ্ছে। এতে এলডিসি দেশগুলোর বাণিজ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। এ ক্ষেত্রে দোহা রাউন্ড বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে এলডিসিগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে ।