জামাল জাহেদ, কক্সবাজারঃ কক্সবাজার জেলার মহেশখালি উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাংগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শহিদুল আলমকে প্রায় দুবছর আগে শাস্তিমুলক অন্যত্রে বদলি করলেও, দীর্ঘ দুবছর যাবৎ প্রধান শিক্ষক বিহীন জোড়াতালি দিয়ে কোনমতে লাইফ সাপোর্টে বেচে আছে ১৪শত ছাত্রছাত্রীর পড়ালেখার একমাত্র কেন্দ্রস্থল ঘটিভাংগা সরকারী প্রাঃ বিদ্যালয় ও জুনিয়র মডেল হাই স্কুল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল হাই স্কুল করার নির্দেশনা দেন,এবং ঝড়ে পড়া ছাএছাত্রী যাতে বন্ধ হয়,ও প্রতিটি মডেল হাই স্কুলে যেনো সার্বক্ষণিক প্রধান শিক্ষক থাকে,কিন্তু মহেশখালী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশিষ চিরান যোগদানের পর থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সম্পুর্ণ অনিয়ম ভাবে ঘটিভাংগা সঃ প্রাঃ বিঃ এর সহকারী শিক্ষিকা শুক্লাদে কে চন্দনাইশ বদলি করেন,এবং আরেক সহকারী শিক্ষকা পারভিন আকতারকে দৈলারপাড়া বদলি করে প্রধানশিক্ষক বিহীন স্কুলকে পঙ্গু করে তোলেন। যদিও সরকারের নিয়ম অনুযায়ী একই উপজেলার বাহিরে বদলির আদেশ না থাকলেও,কোন নিয়মে এসব বদলি আদেশ গ্রহন করেন তা বোধগম্য নয়।মহেশখালীর একমাএ মডেল হাই স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থাকে,আশিষ চিরান কোন মুল্যায়ন না করেন বার বার কমিটির আবেদন ও গুরুত্ব না দিয়ে,এড়িয়ে যাচ্ছে। অতঃপর কোমলমতি ছাতছাত্রীদের পড়ালেখাকে গভীর খাদে ফেলে রাখছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।অন্যদিকে অএ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব না দিয়ে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে অমান্য করে, বহাল তবিয়তে দুর্নীতিপরায়ণ মনোভাব পোষন করে দায়িত্ব অবহেলা সম্পুর্ণ প্রাথমিক শিক্ষার আইন পরিপন্থী বলে মনে করেন এসএমসি কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন খোকা।
গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একাধিকবার উপজেলা থানা নির্বাহী অফিসার, উপরোক্ত অফিসার কে বিষয়টি অবহিত করলেও কোন সুরাহা হয়নি জানান প্রতিকার প্রত্যাশী জনগণ। উল্টো স্বল্প শিক্ষক থেকেও দুজন শিক্ষককে ভিন্ন কৌশলে টাকার বিনিময়ে বদলি করে,অকেজো করে রেখেছেন ঘটিভাংগার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতকে,যেনো দেখার কেউ নেই।
এভাবে দুবছরের অধিক সময় ধরে চলছে ঘটিভাংগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এই একমাএ উপজেলার মডেল হাই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম। এতে করে শিক্ষক সংকট ও অব্যবস্থাপনায় বিদ্যালয়টি পরিচালিত হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাভাবিক পড়াশোনা নিয়ে অভিভাবক মহলের কাছে সংশয় তৈরী হয়েছে।বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোখতার আহমদ দায়িত্ব নিলে তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছেনা বরং স্থানীয় জনগন প্রতিমাসে মাসে বিভিন্ন চাদা দিয়ে হয়রান,সরকারী স্কুলে এভাবে কি কারনে টাকা তুলে স্কুলের চক ডাস্টার বা কারেন্ট বিল,ও প্যারা টিচার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া কি প্রাথমিক শিক্ষার অব্যবহার নয় বলে মন্তব্য করেন অভিভাবক শাহেদ খান।
নিয়ম অনুযায়ী ১৪জন শিক্ষক নিয়োগ পাবার সুযোগ থাকলেও, বর্তমানে মাত্র ৭জন শিক্ষক হিমশিম খাচ্ছে। তাদের মধ্যেও দ্বন্দ্ব ও বিরোধ প্রতিনিয়ত পাঠদান না করা নিয়ে,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোখতার আহমদ নিজের ইচ্ছে মতো দপ্তরী দিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে টাকা তুলে চলে যায়,অফিসের কাজ আছে বলে।যার কারনে কোন পাঠদান হয়না বলে নিয়মিত অভিযোগ করেন এসএমসি কমিটির সহ সভাপতি রবিউল আলম।
ফলে হ-য-ব-র-ল ভাবে চলছে ঘটিভাংগা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। অনেক অভিভাবক অভিযোগ তুলেন এভাবে বাংলাদেশের কোন সরকারী বিদ্যালয় চলেনা।বর্তমানে সরকার শিক্ষা ও গ্রামীন উন্নয়নে এগিয়ে গেলেও চরম অবহেলার স্বীকার হচ্ছে ঘটিভাংগা তাজিয়াকাটা ছেলেমেয়েরা।সাথে স্কুলের শিক্ষার্থীর সরকারী উপবৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে নানা জটিলতা উপবৃত্তি ও আত্বসাৎের মতো নানা অপকর্মের সৃষ্টি হচ্ছে বারবার। প্রতিমাসে বিভিন্ন বাহনায় ছাএছাত্রীদের কাছ থেকে চাদা আদায় করে,বিদ্যুৎ বিল,পেরা শিক্ষকেরা মাসিক বিল বলে কৌশলে এসএমসি কমিটির কিছু অসাধু সদস্য ভাগ ভাটোয়ারা করে হজম করে বলে নিশ্চিত করেন স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রওশন আলী।
অএ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহকে ১৬ই জুন ২০১৪ইং তারিখে বদলি করেন। এভাবে প্রধান শিক্ষক বিহীন বিদ্যালয় কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুশীল সমাজ।স্থানীয় অভিভাবক মহল জানিয়েছেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এসএমসি পরিচালনা কমিটিকে ম্যানেজ করে সব প্রধান শিক্ষককেই নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে,কারন কমিটির কোন এ ব্যাপারে মাথাব্যথা নেই,বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্বে অবহেলা থাকায় বিদ্যালয়ের যাবতীয় স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় রীতিমত হুমকিতে পড়েছে বলে উক্ত বিদ্যালয়ের অন্যান্য সহকারী শিক্ষকগণ জানান।
প্রধান শিক্ষক বিহীন বিদ্যালয়ের কার্যকর সম্পুর্ন ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে,চরম অযত্নে অবহেলায় ব্যাপক হারে দুর্নীতি কাজে জড়িত পড়েছে স্কুলের ম্যানেজমেন্ট,প্রতিমাসে সমালোচিত হয় উপবৃতি বিতরনে দুর্নীতি, নতুন বই বিতরনে টাকা উত্তোলন,উচ্চমুল্যে ভর্তি ফি আদায়,৬ষ্ট,৭ম,৮ষ্ট শ্রেণীতে ভর্তি পরীক্ষার ফি আদায়ে অনিয়ম,সার্টিফিকেট বিতরনে কমিশন বানিজ্য,সিলিপ কমিটি সহ সরকারি নানা বরাদ্দকৃত টাকা আত্বসাৎ সহ অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে,স্কুল প্রতিষ্টানকে ব্যবসা প্রতিষ্টানে রুপান্তরিত করেছে বর্তমান কমিটিও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
সহকারী শিক্ষকেরা জানায়,তারা অসহায় ১৪শত ছেলেমেয়েদের জন্য মাএ ৭জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা খুবই কষ্টের, আর দুর্নীতির বিষয়টা তারা স্বীকার করে বলেন,আসলে সবেই সত্য কিন্তু আমাদের সাথে আলোচনা করেনা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।তারা আরো জানান একাধিকবার প্রতিবাদ করলেও কোন সমাধান হয়নি,বরং বিদ্যালয়ে যে যার মতো আসে যায় এ অবস্থায় চলে যায়।
নতুন কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন খোকা জানান” তিনি সব জেনেছেন অন্যান্য সহকারীদের কাছ থেকে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কে সতর্ক করেছি, ভবিষ্যতে প্রশাসনকে ও জানিয়েছেন বিষয়টি। অন্যদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বদলি প্রদান করে,নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে, স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট্র কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা অফিসার ও মাননীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবক সহ এলাকার শিক্ষিত সমাজ।নাহয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মমনত্রানালয়ে স্মারকলিপি প্রদান সহ স্কুলে তালা লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়ে স্থানীয় জনতা।