মহেশখালীতে ২টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ বন্ধ, আশ্রয়হীনদের চোখে পানি 

0

জামাল জাহেদ, কক্সবাজার:: মানবসেবাই ধর্ম, আশ্রয়ণের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার এই শ্লোগানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয় থেকে পরিচালিত গৃহিত নান্দনিক পদক্ষেপ সারাদেশের মতো কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমে ভূমিহীনদের জন্য আশ্রয়ন-২ প্রকল্পে ২টি মাটি ভরাট কাজ হঠাৎ বন্ধ,পুর্বের ককাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ এবং বাস্তবায়ন কমিটির সাথে স্থানীয় এমপির অন্তরদ্বন্ধ কঠিন রুপ নিতে শুরু করেছে।

স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক বার বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সরকারের সুনাম নষ্ট হয় এমন কাজ না করার সতর্ক দিলেও,তা পালন করছেনা বলে কুতুবজোম ইউনিয়নের একাধিক সূত্রথেকে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়,এবং প্রকল্পের কাজে দুর্নীতির ফলে বন্ধ বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।ফলে আশ্রয়ন প্রকল্পে যারা মাথা ঠাই গোজার স্বপ্ন দেখেছিলো,বর্তমানে তাদের চোখে হতশায় পানি।

অভিযোগে জানা যায়,মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ১৫০টি ভূমিহীন পরিবারের ১০টি ব্লক করে,মোট ৩টি আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অনুদান দেয়া হয় এবং এ প্রকল্পের নাম দেয় আশ্রয়ন প্রকল্প২।সর্বমোট পুরা মাটি ভরাট সহ কাজটা সমপুর্ন করার বাজেট স্বরুপ প্রধানমন্ত্রী কার্যলয় বাজেট রাখেন,একটি প্রকল্পের বাবদে ৫০০০মেট্রিক টন কাবিখা এবং টিআর বাবদ চাউল ও গম বরাদ্দ দেয়।

আশ্রয়ন প্রকল্পে এক হাজার ৮শ’ ফুট দৈর্ঘ্য, ৭৫ ফুট প্রস্থ ও ৭ফুট উচ্চতায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু করার শর্তে সরকার বাস্তবায়ন কমিটিকে নির্দেশ দেয়,সেই মোতাবেক কুতুবজোমের ৩টি প্রকল্পের ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলমকে সভাপতি করে।এসব কাজের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের দৈনিক ৭ ঘন্টা কাজের বিনিময়ে ৮ কেজি করে গম দেয়ার কথা থাকলেও মাটি কাটার কাজ চলছে এক্সাভেটর মেশিন বা উত্তরবঙ্গ ভাড়া করা থেকে আধুনিক ড্রেজার।

যা দিয়ে নির্ধারিত জায়গার পাশ থেকে মাটি তুলে একই জায়গায় পতিত করে কোনমতে একটা প্রকল্প শেষ করে দেয় কমিটি পরে নৌবাহিনী কতৃক আবাসন তৈরি করে দিলেও,নির্মানের ৪মাস না যেতেই ছাঁদ বেয়ে পানি পড়াতে চরম বেকায়দায় উপকারভোগীরা।অন্যদিকে বাকি দুটি প্রকল্পের কাজে মাটি ভরাটে দুর্ণীতির অভিযোগে কাজ বন্ধ এবং পরিত্যক্ত মরুভুমি হিসাবে পড়ে রয়েছে।স্থানীয় শ্রমিক নিয়োগ না করে,মেশিন ব্যবহার করায় বেকার হয় কাবিখা ও টিআর শ্রমিক নিয়োগ।যদিও বড় অভিযোগ উঠেছে দায়িত্ব অবহেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিউল আলমের বিরুদ্ধে।

নদী বহুল গ্রামের ১শ গজের বাহিরে আশ্রয়ণ আবাসন করার নিয়ম থাকলেও কক্সবাজারের সব প্রকল্পের কাজ নদী গর্ভে বলা যায়,প্রকল্পের কাজটি যেন পলিমাটি দিয়ে ভরাট করা হয় কিন্তু সেটি না করে ওই প্রকল্প সংলগ্ন ঘটিভাংগা খালের পাশ থেকে বালি মিশ্রিত মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে যা সম্পুর্ন অনিয়ম।ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম বলেন, সরকার ওই প্রকল্পে মাটি ভরাট কাজের জন্য প্রয়োজনমতো হাজার মেট্রিক টন গম বরাদ্দ দিয়েছে,তবে কাজটা তারচেয়ে বেশি টাকার হয়নি বা করেনি বাস্তবায়ন কমিটি।

কুতুবজোম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিউল আলম, ও উপজেলার পিআইও শফিউল আলম শাকিব,সাবেক থানা নির্বাহী অফিসার আনোয়ারুল নাসের , পিডিসহ সকলে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করার তাগিদ দিলেও কোন কাজ হচ্ছেনা। বর্তমানে কাজ বন্ধ করে হাত গুটিয়ে নিয়েছে বাস্তবায়ন কমিটি।২টি প্রকল্পের কাজ কেন বন্ধ তা কেউ সহজে বলতে পারেনা,ঘটিভাংগার ইউপি সদস্য খোকা জানান,হয়তো কাজ ২টা সম্পুর্ণ করা আর সম্ভব হবেনা সরকার পদক্ষেপ না নিলে।

যদিও বিগত আগষ্ট মাসের ৭তারিখ প্রধানমন্ত্রীর কার্যলয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ৯জন সচিব ঘুরে দেখেন প্রকল্পের কাজ। বিশ্বস্ত বেশ কয়েক’টি সূত্র বলেন, প্রকল্পের কাজ ২টি যখন শুরু করার জন্য দেড় বছর আগে সরকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর অধীনে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাংগাতে জায়গা নির্বাচন করে,২টি বেরিবাধের ভেতরে অন্যটি বেরিবাধের বাহিরে সাগর বক্ষে।তখন কৌশলে স্থানীয় এমপিকে না জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান তার মন মতো কমিটি দিয়ে কাজ শুরু করে।কিন্তু বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।

কমিটির নির্দেশে চট্রগ্রাম থেকে আনা ভাড়ায় চালিত ১টি ড্রেজার এনে কাজ শুরু করে নিজেদের উদ্যেগে,পরে অবস্থা বেগতিক থেকে দুটো কাজেই বন্ধ করে বরাদ্দকৃত টাকা তুলে নেয় বলে অনেকের অভিযোগ।সঠিক সময়ে পালন না করাতে কাজ হচ্ছেনা বলে সত্যতা নিশ্চিত করেন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য এখতিয়ার মেম্বার।

অন্যদিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দপ্তর থেকে লিখিত তথ্য চাওয়া হয়, থানা নির্বাহী অফিসার সহ উপজেলা পিআইও এবং বাস্তবায়ন কমিটির উপর।আদৌ কোন সঠিক তথ্যপুর্ন রিপোর্ট করেছে কিনা কেউ জানেনা। ইউপি চেয়ারম্যানকে যেহেতু বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি করেছে তিনি ভালো জানাবেন বলে এড়িয়ে যান বাকি সদস্যেরা।যদিও কাজে কোন দুর্নীতি হয়নি বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম।চেয়ারম্যান কমিটি ৩টা ড্রেজার দিয়ে কোন মতে একটি কাজ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও ২টি প্রকল্পের কাজ এখনো সরকারকে বুঝিয়ে দিতে পারেনি বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানা যায়।অনেকে মনে করেন কাজে দুর্নীতির কারনেই কাজ বন্ধ রয়েছে।

গোপন অনুসন্ধানে জানা যায়,প্রতি টন গম ও চাউল থেকে ২/৩হাজার টাকা নেয় উপজেলা অফিস,ইতিমধ্যে হাজারের ১০০০মেট্রিক টন চাউল ৯শমেট্রিকটন গম বাবদে কোটি কোটি টাকা সরকার প্রকল্পের কাজে বরাদ্দ দিলেও মুলত কতো টাকার কাজ হয়েছে তার হিসাব পাচ্ছেনা স্বয়ং বাস্তবায়ন কমিটির।এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কতৃক পরিচালিত প্রকল্পের কাজে যদি এতো অনিয়ম হয়,দুর্নীতির কারনে কাজ বন্ধ হয়।তাহলে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন জাগে,কি পরিমান দেশে দুর্নীতি হয় তার হিসাব কে জানে।এমপি বার বার নির্দেশ দেয় বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদের সততার সাথে কাজ করতে,সরকারের সুনাম যাতে নষ্ট না হয়।তার পরেও কাজ বন্ধ কেন ভূমিহীন মানুষ জানেনা।

কুতুবজেমের আব্দুল জলিল জানান,সরকার সময় বেধে দেয় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ বুঝে দিতে।কিন্তু কিছু মাটি ভরাট করে কাজ বন্ধ রেখে,বড় গ্যাঁড়াকলে বর্তমান পরিস্থিতিতে কুতুবজোম ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম,যিনি প্রকল্পের সভাপতি।এ ব্যাপারে কুতুবজোম চেয়ারম্যানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে,ফোন বন্ধ পাওয়ায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মহেশখালী কুতুবদিয়ার এমপি জনাব আশেক উল্লাহ রফিকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,বর্তমান সরকার অতি সফলতার সাথে শাপলাপুর ও ডেমবনি এলাকায় আশ্রয়ন প্রকল্পপ তৈরি করেছেন।তবে জানিনা কুতুবজোমের ২টি আশ্রয়নের কাজ বন্ধ কিনা,মনেহয় কাজ চলমান।প্রশাসন থেকে আমি খবর নিয়ে বিস্তারিত ব্যবস্থা নেবো।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.