উন্নয়ন কাজে গতি নেই রাজউক

0

ঢাকা অফিস : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল প্রকল্পের প্লট তৈরির কাজ বহু আগেই সম্পন্ন হয়েছে। এমনকি তিন শতাধিক ব্যক্তিকে প্লটও বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে গতি নেই। এর ফলে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসসহ নাগরিক সুবিধাগুলো নিশ্চিত না হওয়ায় প্লটপ্রাপ্তরা আবাসিক স্থাপনা তৈরি করতে পারছেন না।

১৯৯৫ সালে ঢাকা-মাওয়া সড়কের কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া, বাঘৈর ও তেঘরিয়া মৌজার ৩৮১ একর জমিতে ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প গ্রহণ করে রাজউক। এরই মধ্যে সেখানে এক হাজার ৭০০ প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের অভ্যন্তরীণ রাস্তার কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে শতভাগ। খুঁটি পুঁতে প্লটের সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০০১ সালে। দীর্ঘদিনেও কার্যত মাটি ভরাট করে প্লটের সীমানা নির্ধারণ ছাড়া কোনো কাজই করতে পারেনি রাজউক। গ্যাসের ব্যবস্থা করার কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। খুঁটি পুঁতে রাখা হলেও সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ নেই। ড্রেনেজ সিস্টেমেরও কোনো অগ্রগতি নেই। ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য নির্ধারিত প্রকল্প এলাকায় কোনো রাস্তার কাজও এখনো করা হয়নি। এ অবস্থায় আবাসিক প্রকল্পে বরাদ্দপ্রাপ্তদের প্লট বুঝিয়ে দিচ্ছে রাজউক। এছাড়া যারাই প্লট বুঝে নিতে চাইছেন, রাজউক তাদেরই প্লট বুঝিয়ে দিচ্ছে। বাড়ি তৈরিতেও এখন আর কোনো বাধা নেই, এ তথ্যও আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজউক।

এদিকে ২০০১ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে কয়েক দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেটা না হওয়ায় নতুন করে আরো এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে দ্রুতগতিতে অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শেষ করার জন্য অবশেষে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের উন্নয়ন ও সেখানে ফ্ল্যাট নির্মাণের বিষয়ে মালয়েশিয়ার বিএনজি গ্লোবাল হোল্ডিংয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে রাজউক।

বিদেশি ওই প্রতিষ্ঠানটি ঝিলমিল প্রকল্পে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন কাজ করছে। এছাড়া তারা প্রকল্প এলাকায় ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। অথচ এসব কাজ রাজউকেরই করার কথা ছিল। কিন্তু মালয়েশিয়ার ওই প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়ন কাজ সন্তোষজনক নয় বলে অভিযোগ রয়েছে। প্লট গ্রহীতারা সরেজমিন ঘুরে এসে জানান, পুরো প্রকল্প এলাকা ঘাস ও কাশবনে ভরে গেছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় গবাদিপশুগুলো সারাদিন চরে বেড়ায়। আর ফাঁকা মাঠের মতো প্রকল্প এলাকায় স্থানীয় যুবকরা ক্রিকেট বা ফুটবল খেলে।

প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শফিউদ্দিন মোল্লা জানান, ‘গ্যাসের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। পানির পাইপলাইন স্থাপনের বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আর স্যুয়ারেজ ও পানির ব্যবস্থা করার কাজ এখন বিদেশি অর্থায়নে হবে। মালয়েশিয়ার ওই কোম্পানি ফ্ল্যাট নির্মাণের ব্যাপারেও সহযোগিতা করতে পারবে।’
এখন কেউ বাড়ি তৈরি করে সোলার প্যানেল স্থাপন করে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারেন। সিলিন্ডার গ্যাস নিয়ে রান্নার কাজ চালাতে পারেন। আর একটি নলকূপ বসিয়ে নিলে পানির সমাধানও হয়ে যাবে। এছাড়া প্রতিটি প্লটের সঙ্গে পরিকল্পিত রাস্তা থাকায় যাতায়াতেও কোনো সমস্যা হবে না। কাজেই বাড়ি তৈরি করতে আর কোনো বাধা নেই।’

তবে প্রকল্প এলাকায় গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে আরো এক-দুই বছর সময় লাগবে বলে জানান তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.