আজ সরকারের দুবছর, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সন্ধ্যায়

0

সিটিনিউজবিডি  :    দুবছর আগে এদিন আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বারের মত সরকার গঠন করে।  সরকারের দুবছর পূর্ণ হলো আজ ১২ জানুয়ারি বাংলাাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন    । ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশের সাধারণ নির্বাচনে দলটি জোটগত ভাবে বিজয়ী হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৩৪টি , জাতীয়পার্টি ৩৪টি এবং আওয়ামী লীগের শরিক ওয়াকার্স পার্টি ৬ এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ পাঁচটি আসনে বিজয়ী হয়ে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করে। এদিকে, সরকারের দুই বছরপূর্তি উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

 দেশব্যাপী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিএনপি-জামায়াত জোট। দেশজুড়ে ভয়াল নাশকতা, ধ্বংসযজ্ঞ, নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা ও লাগাতার অবরোধ-হরতালের নামে ব্যাপক সহিংসতা চালিয়ে পুরো দেশকেই চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয় তারা। দৃঢ়তার সাথে এসব মোকাবেলা করে শান্তি ফিরিয়ে আনা ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও দৃঢ় নেতৃত্ব সেই চ্যলেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করে। নানা কারণেই সরকারের গত দু বছর ছিল ঘটনাবহুল। দেশীয়-আন্তর্জাতিক রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এই দুটি বছরে শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় ঘোষিত এবং কার্যকর হয়েছে।
দু’বছরের অন্যতম বড় অর্জন হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গ্লোবাল সাউথ সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ এর ভিশনারী এওয়ার্ড অর্জন। এ ছাড়াও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিও) নির্বাচনে বাংলাদেশের দুই প্রার্থী স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর বিজয়। ১৮৮টি দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন।
ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল স্যাটেলাইট অর্গানাইজেশন-এর মহাপরিচালক এবং হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল ও ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন-এর নির্বাচনেও বিজয়ী হয় বাংলাদেশ।
গত বছর ২০১৫ সালও ছিল অর্জনের বছর। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরষ্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য জাতিসংঘ ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালে জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে।
নোবেল পুরস্কার যে ছয়টি বিষয়ে দেয়া হয়, সেখানে পরিবেশ নেই। তবে জাতিসংঘের পরিবেশ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ আখ্যা পেয়ে থাকে পরিবেশের নোবেল হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বছর পরিবেশ বিষয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ সেই পুরস্কার অর্জন করেন।
শুধু তাই নয় , গত বছর (২০১৫) ভারতের সাথে স্থল সীমানাচুক্তি বাস্তবায়ন ছিল এই সরকারের অন্যতম অর্জন। এর আগে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলায়ও বিজয়ী হয় বাংলাদেশ । শিক্ষা , বিদ্যুৎ, আইসিটি, কৃষি , অর্থনীতি সবক্ষেত্রেই সরকারের অগ্রযাত্রা গতবছরও অব্যাহত থকে
আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, টানা দ্বিতীযবার সরকার গঠনের পর উন্নয়ন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশী-বিদেশী নানা ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, বিশ্ব মন্দার মধ্যেও দেশের অর্থনীতিকে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছেন।।
তিনি বলেন, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি সহ বিশ্ব মন্দা সত্ত্বেও সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিটি সূচক ইতিবাচক। ছয় শতাংশের মত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রপ্তানিতে ভাল প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সরকাররর দুই বছর মেয়াদের শুধূ একবছ্রই ১৫ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে ‘একটি বিশাল অর্জন’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
বহুল আলোচিত পদ্মাসেতুর কাজ সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে শুরু হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ২০১৮ সালের মধ্যেই পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত শুরু হবে, খুলে যাবে স্বপ্নের দুয়ার।
দেশের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দুর্নীতি-সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের তকমা মুছে ফেলে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। কৃষি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতিসহ সার্বিক প্রেক্ষাপটে অনেক প্রত্যাশার বীজও বনে গেছে সরকারের টানা দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দুই বছর।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.