তারেক রহমানের অর্থদাতা শামসুজ্জোহার সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

0

ঢাকা অফিস, সিটিনিউজবিডি  :      ‘হাওয়া ভবনের’ কর্মচারী শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক সাবেক  শামসুজ্জোহা ফরহাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে চিঠি পাঠিয়ে ফরহাদের পাসপোর্ট নম্বর জানিয়ে দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। ফরহাদের স্ত্রী রোজিনা জোহার দেশত্যাগে ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুদকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকের (বিশেষ) কাছে চিঠি পাঠায় দুদক। শামসুজ্জোহা ফরহাদের বিরুদ্ধে দুদকের একটি অনুসন্ধান চলছে।
দুদক সূত্র জানায়, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে নিয়মিত অর্থ পাঠাচ্ছেন শামসুজ্জোহা। হাওয়া ভবনের সাবেক এই কর্মচারীর বিপুল পরিমাণ অর্থের আসল মালিক তারেক রহমান বলে দুদকের কাছে তথ্য রয়েছে। প্রায় শত কোটি টাকার ওই সম্পদের মধ্যে রয়েছে বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, মেয়াদি আমানতসহ (এফডিআর) অন্যান্য স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। ওই সব সম্পদ থেকে তারেক রহমানকে নিয়মিত টাকা পাঠান শামসুজ্জোহা।
এ বিষয়ে দুদকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, তারেক রহমানের কাছে হুন্ডির মাধ্যমে নিয়মিতভাবে অর্থ পাঠাচ্ছেন হাওয়া ভবনের সাবেক একজন সাধারণ কর্মচারী। তাঁর নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। সে অর্থের উৎস খুঁজে বের করার জন্য অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে দুদকের একজন কর্মকর্তা বলেন, নিজের অবৈধ সম্পদ নিরাপদ রাখতে অফিসের একজন সাধারণ কর্মীর নামে সম্পদ রেখেছেন তারেক রহমান। এ বিষয়ে দুদকের কাছে তথ্য রয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি শামসুজ্জোহা ফরহাদের সম্পদ এবং তারেক রহমানকে অর্থ পাঠানোর অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। অভিযোগটি অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপপরিচালক হারুনুর রশীদ। তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ-২ এর পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে তারেক রহমানের কাছে অর্থ পাঠানোর তথ্য এরই মধ্যে দুদক পেয়েছে। ফরহাদের নামে রাখা ফ্ল্যাট, বাড়ি, ব্যাংক হিসাব, মেয়াদি আমানতসহ অন্যান্য স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের দলিলপত্র ও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, রূপনগর, পূর্বাচলসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ফরহাদের নামে ৬-৭টি বাড়ি, ৯-১০টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। হাওয়া ভবনের অল্প বেতনের কর্মচারী ফরহাদের নামে এসব সম্পদ কেনা হয়েছে সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের সময়। সরকারি-বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংক বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা আছে। রয়েছে অনেকগুলো মেয়াদি আমানত (ফিক্সড ডিপোজিট)। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুরে আছে রাইস মিল, মৎস্য খামার, ইটের ভাটা। এ ছাড়া মিঠাপুকুরে কেনা হয়েছে প্রচুর জমি।
দুদক সূত্র জানায়, শামসুজ্জোহা ফরহাদ বর্তমানে মিরপুরের রূপনগরে একটি ছয় তলা বাড়িতে থাকেন। ফরহাদ ১৯৯৪ সালে তারেক রহমানের মামা প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের মালিকানাধীন মার্শাল ডিষ্টিলারিতে কাজ করেন। সে সুবাদে তারেক রহমানের সঙ্গে পরিচয় হয়। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে তাঁকে হাওয়া ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে খুবই অল্প বেতনে হাওয়া ভবনে চাকরি করতেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.