প্রাণ ফিরে পাচ্ছে কক্সবাজার মহাসড়ক

0

জামাল জাহেদ, কক্সবাজার : দীর্ঘদিন পর কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করতে যাচ্ছে সরকার। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়ককে চার লেন প্রকল্পের আওতায় এনে যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়। শীঘ্রই এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে। এর আলোকে মহাসড়কের কক্সবাজারের চকরিয়া অংশের ৩২ কিলোমিটার এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণকৃত জমি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হবে অচিরেই। ইতোপূর্বে যারা সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি দখলে রেখে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাদের স্ব–উদ্যোগে এসব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে । সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগ কক্সবাজারের চকরিয়া সড়ক উপ–বিভাগীয় প্রকৌশলী স্বাক্ষরিত নোটিশ দুই দফায় ৫৯৩ জন অবৈধ দখলদারকে প্রদান করা হয়।সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়,চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের মাঝখান থেকে দুই দিকের ৫২ ফুট করে ১০৪ ফুট জায়গা সওজের অধিগ্রহণকৃত।

বর্তমানে এই সড়কের দুই পাশের বিপুল পরিমাণ অধিগ্রহণকৃত জায়গা পার্শ্ববর্তী ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অবৈধ দখলে নিয়ে স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে তুলেছে । এতে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে যাত্রীরা। মূল্যবান এসব জমি উদ্ধারে ভূ–সম্পত্তি ও ঘরবাড়ি আইনের ১৯৫২ (অ্যাক্ট অফ ১৯৫৩ইং)অনুচ্ছেদ–২ মূলে এ নোটিশ প্রদান করা হয়।নোটিশে বলা হয়, নোটিশ প্রাপ্তির সাতদিনের মধ্যে অবৈধ দখল ছেড়ে দিতে হবে।

এই নির্দেশ অমান্য করা হলে আইনের অনুচ্ছেদ ৫ ও ৬ এর ক্ষমতাবলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও পাশাপাশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ–সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মো. শহীদুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কক চারলেন কর হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এমন পরিকল্পনার আভাস পাওয়া গেছে। চারলেন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করার পর যাতে কোন সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য আগেই অবৈধ দখলে থাকা জমি উদ্ধার করা হবে।সওজের চকরিয়া–উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) এমদাদ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কটির চকরিয়া অংশের ৩২ কিলোমিটারের (আজিজনগর থেকে ডুলাহাজারা পর্যন্ত) অধিগ্রহণকৃত জায়গা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে অনেক স্থানে বহুতল ভবন,বসতবাড়িসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করে দখলদারেরা।

এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা রয়েছে। স্ব–উদ্যোগে স্থাপনা সরিয়ে নিতে এজন্য প্রথমধাপে ৩৫০জন এবং দ্বিতীয় দফায় আরো ২৪৩ জনসহ সর্বমোট ৫৯৩ জনকে অবৈধ দখলদার চিহ্নিত করে তাদের ঠিকানায় নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যদি স্থাপনা সরিয়ে না নেয় তাহলে একযোগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে অধিগ্রহণকৃত জায়গা পুনরুদ্ধার করা হবে।’এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কক্সবাজার’র নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া বলেন, ‘সরকার সকল জাতীয় মহাসড়ককে চারলেন প্রকল্পের আওতায় আনবে। একইভাবে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ককেও এই প্রকল্পের আওতায় আনতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারই আলোকে মূলত নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যে কোন সময় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।’অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, যদি কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকে তাহলে ওইসব প্রতিষ্ঠান আপাতত উচ্ছেদ করা হবে না। বাংলাদেশ লবন চাষী সমিতির সদর উপজেলা সভাপতি হান্নান মিয়া বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারের “ট্যুরিজম ইকোনমি” আরো সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি জেলায় উৎপাদিত লবন, চিংড়ি/মৎস্য, শুঁটকি ও পানসহ অপরাপর পণ্য পরিবহনে বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচিত হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.