ঢাকা অফিস: বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে- এমন আলোচনা আগেই চাউর ছিল। আসন্ন সিটি নির্বাচন সেটিকেই প্রকট করে তুলেছে।
জোটের শরিক দলের সঙ্গে আলোচনা না করে বিএনপি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে কাউন্সিলর প্রার্থী ঘোষণা করেছে।তাদের জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীও মহিলা কাউন্সিলরসহ অর্ধশতাধিক প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে।
জামায়াত নেতাদের দাবি, কাউন্সিলর প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে কোনো আলোচনা বা সমন্বয় না করায় এ টানাপোড়েনের সৃষ্টি হয়েছে।আগামী ২৮ এপ্রিল হবে দুই সিটির ভোটগ্রহণ। এবার বিএনপি এই নির্বাচনে ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’র ব্যানারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, যে ব্যানারের নেতৃত্বে আছেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ।সম্প্রতি ঢাকার দুই সিটির সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট-সমর্থিত ১১৪ জন প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করে আদর্শ ঢাকা আন্দোলন। তবে জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক জামায়াতে ইসলামীও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরসহ অন্তত ৫০ জন প্রার্থী দিয়েছে।
তবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে মেয়র প্রার্থী নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও জামায়াত সমঝোতা করে প্রার্থী দিয়েছে। ৫৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলে ১০টি ওয়ার্ড জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি।তবে এর একটিতে বিএনপির একজন বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। পাল্টা হিসেবে জামায়াতও তিনটি ওয়ার্ডে বিএনপির পাশাপাশি তিন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে।আদর্শ ঢাকা আন্দোলন গত শুক্রবার ২০-দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে। তাতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের ৯৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৮৫ জন এবং দুই সিটির ৩১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ২৯ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়।তালিকায় দেখা গেছে, জামায়াত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরসহ অন্তত ৫০ জন প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জনের মত প্রার্থী সরাসরি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং নেতৃত্বস্থানীয়। এর বাইরে অন্যদের নিজেদের প্রার্থী বলে দাবি করলেও কৌশলগত কারণে প্রকাশ্যে আনতে চাচ্ছেন না।এ বিষয়ে জামায়াতের ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারি ও ঢাকা সিটিতে জামায়াতের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম বুলবুল আরটিএনএন- কে বলেন, ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’র ব্যানারে বিএনপি জোটের বরাতে যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে, সে সম্পর্কে আমরা অবহিত নই। এ সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নেই।’তিনি বলেন, জোটের কাউন্সিলর প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে তাদের সঙ্গে বিএনপির নেতাদের কোনো যোগাযোগ বা আলোচনা হয়নি। একক সিদ্ধান্তে তারা প্রার্থী দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকেই জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের কোনো যোগযোগ নেই। এতে করে তৈরি হয়েছে দূরত্ব। আর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের কৌশল ও প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে জামায়াত একাধিকবার বৈঠকের আগ্রহ দেখিয়েছে।
তবে বারবারই বিএনপি তা এড়িয়ে গেছে। এ অবস্থায় জামায়াত তাদের কোনো কাউন্সিলর প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বলেনি। প্রচারণা শুরুর পর তারা জোরেশোরেই তা করে চলেছেন।
এ বিভাগের আরও খবর