পুলিশি পাহারায় চুমু : শাম্মী-অনন্যকে একহাত নিলেন আরিফ

0

সিটিনিউজবিডিঃ শাম্মী হক, অনন্য আজাদ ও আরিফ নূর। তিনজনই গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী। একসময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শ্লোগান দিয়েছেন উত্তাল শাহাবাগ চত্বরে। সময়ের ফোড়নে অনন্য আজাদ এবং শাম্মী হক এখন জার্মানির বাসিন্দা।

এবার ভ্যালেন্টাইন’স ডেতে শাম্মী হক এবং অনন্য আজাদ মিলে ফেসবুকে একটি ইভেন্ট খুলেছেন ‘ভালোবাসা দিবসে পুলিশি পাহারায় প্রকাশ্যে চুমু খাব।’ এই শিরোনামে। এরপরই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পক্ষে-বিপক্ষে আসে নানান যুক্তি।

বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকেই স্ট্যাটাস দিয়েছেন গণজাগরণকর্মী আরিফ নুর। তিনি লিখেছেন, ‘শাম্মী ও অনন্য, বাংলাদেশে কি আর কোন সমস্যা আপনারা খুঁজে পেলেন না! প্রকাশ্যে চুমু খেতে না পারাটাই এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা? যে দেশের মানুষ তার মৌলিক অধিকারগুলোই এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি। যেখানে রাস্তা-ঘাটে হাজার হাজার শিশু না খেতে পেয়ে মারা যায়। যেখানে মেয়দের শিক্ষার হার ৫০ শতাংশ এর কম। যে দেশের ধর্মান্ধ মানুষ গুলো এখনও সাঈদীর মত রাজাকারকে চাঁদে দেখতে পায়। যেখানে বই লেখা ও প্রকাশের দায়ে লেখক প্রকাশককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তেমন একটি দেশে আপনারা এমন একটি ইভেন্টের ডাক দিয়েছেন এটা সত্যি হাস্যকর। তাও যদি নিজেরা এ ইভেন্টে উপস্থিত থাকতে পারতেন তবে ভাবতাম, আপনারা অনেক সাহসী, অনেক বড় দেশ প্রেমিক। দুই একদিন রাস্তায় কে আপনাদের পিছনে হেঁটেছে আর অমনি লেজ গুটিয়ে জার্মানি চলে গেলেন। ওখানে বসে হয়তো বাঘের মত গর্জন করছেন তা আমাদের কানে আসতে আসতে শেয়ালের হাক হয়ে যাচ্ছে।’

আরিফ নূর তার স্ট্যাটাসে মুক্তচিন্তা নিয়েও কথা বলেছেন, ‘মুক্তচিন্তা মানে নিজের আচার নিজের ঐতিহ্য অস্বীকার করা নয়। হাজার বছর ধরে বাঙ্গালির যে অসাপ্রদায়িক ঐতিহ্য রয়েছে তাতে আমি কখনই আমার বাবা মায়ের সামনে আমার প্রেমিকার ঠোঁটে চুমু খেতে পারবো না। আমি এও জানি তা আপনাদের পক্ষেও স্বম্ভব নয়। যে কাজে নিজের ভেতর থেকে সমর্থন নেই তা অন্যকে করতে বলা মানে প্রতারণা করা। কে কখন কাকে কিভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করবে তা একান্ত তাদের নিজের ভাবনা হয়েই থাক না। আপনি-আমি কে? যে, কে কখন কাকে কিভাবে চুমু খাবে তা বলে দেয়ার!’

শাম্মী এবং অনন্য আজাদকে উদ্দেশ করে তিনি লেখেন, ‘প্রতিদিন এমন অসখ্য ইভেন্ট খুলে বসে থাকা যায় কিন্তু একটা ধর্মান্ধের চাপাতির সামনে দাঁড়িয়ে ওর ছানি পড়া চোখে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে থাকতে বুকে সাহস লাগে। এ দেশ তোর নয় এদেশ আমাদের- চিৎকার করে এ কথা বলতে বুকে দম লাগে যা আপনাদের নেই। পালিয়ে গিয়ে ভাল থাকেন এই কামনাই করি। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্যদের হুমকির মুখে ঠেলে দিবেন না দয়া করে।’

স্ট্যাটাসের শুরুতেই অবশ্য আরিফ নূর এই ইভেন্টের দুই আয়োজকের একজনকে গালাগালির জন্য মন্তব্যকারীদের সমালোচনা করেন। তিনি লেখেন, ‘ইভেন্ট খুললো অনন্য আর শাম্মী। কিন্তু যত গালাগালি, হুমকি-ধমকি, ধর্ষণ, জুতাপেটা সবই যাচ্ছে শাম্মীর উপর দিয়ে। কেন ভাই শুধু শাম্মীর দোষ দেখছো? এখানে অনন্য আজাদের কোন দোষ নাই? পুরুষ বলে তার সব দোষ মাফ! দোষ যদি হয়ে থাকে তবে দুজনেই সমান দোষী। এদেশে নারীর প্রতি তথাকথিত পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি কি তা ওই ইভেন্টের কমেন্ট গুলো পড়লেই বোঝা যায়।’ হুমকি-ধামকির তীব্র সমালোচনা করে তিনি সহনশীলতা বাড়ানোরও আহ্বান জানান।

তিনি লেখেন, ‘এ দেশ যতটুকু পুরুষের ঠিক ততটুকুই নারীর। সবাই এক সাথে হাতে হাত রেখে পথ চলতে চাই। আর কোন সহযোদ্ধা কে যেন এ দেশ ছেড়ে চলে যেতে না হয় আসুন তার জন্য লড়াই করি। সে লড়াইয়ে আমরাই জয়ী হব।
জয় বাংলা।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.