প্রেমের বলি ফটিকছড়ির শান্তা

0

জাহাঙ্গীর উদ্দিন মাহমুদ, ফটিকছড়ি : মেয়েটি কারো মন ভাঙ্গতে চায়নি। নিজের দু:খ নিজের ভেতর চাপা রেখেইে চলে গেল পরাপারে। পরিবারের বাবা নয়, ‘মা’ ই ছিলেন হর্তাকর্তা। মায়ের সম্মতি কোনভাবেই পাবে না সে, সেটা বুঝেই চলে গেল যেখানে গিয়ে আর সম্মতির কিংবা স্বীকৃতির প্রয়োজন লাগেনা সেই না ফেরার দেশে। ক‘টা দিন পর ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসার মানুষটার জন্য বলি হতে সেই দিবসের মাসটাকেই বেঁচে নিলো ফটিকছড়ির আসমা পারভীন শান্তা (২২)। তার এমন আত্মহুতির কারণ নিজেই লিখে যায় মাকে লেখা শেষ চিরকুটটিতে।

শান্তা উপজেলার পৌর সদরের করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন হামজার টিলা এলাকার গোলাফ রহমানের কন্যা। ৫ ফেব্র“য়ারী (শুক্রবার) সকালে তার শয়নক্ষে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তার লাশ। মায়ের কারণে নিজের ভালোবাসার মানুষকে কখনও আপন করে পাবে না শান্তা। অপরদিকে বাবা-মাকে কষ্ট দিয়ে পালিয়ে বিয়েও করতে চায় না সে। এ উভয় সংকট থেকে বাঁচতে শান্তা নিজে নিজেই বলিদান হলো প্রেমের কাছে।

শান্তার মৃত্যুর আগে চিরকুটে শেষ লেখা ছিল- ‘আম্মু আমাকে মাফ করে দিও, আমি এ গুলা কিছু করতে চাইনি। আমি শুধু আমার ভালবাসার মানুষটাকে কাছে পেতে চেয়েছি। আব্বুকে বলু (বল) আমাকে মাপ (মাফ) করে দিতে। আল্লাহর কাছে বলু (বল) আমাকে মাপ (মাফ) করে দিতে । সবাইকে বলু (বল) আমাকে মাপ (মাফ) করে দিতে। আমি যানি (জানি) কখনও আমার ভালবাসার মানুষটাকে আমি পাব না কারণ, তুমি মেনে নিবে না। আর তোমার মনেও আমি কষ্ট দিতে পারব না। আগেও দিতে পারিনি। আমার কথা ভেবে মন খারাপ করো না। তোমার আরও দুটা সন্তান আছে। তাদের কথা ও তোমাকে ভাবতে হবে। আমার ভালবাসার মানুষটাকে কষ্ট দিও না। প্লিজ টাকা গুলা মসজিদে দিও।’

চিরকুটটিতে শান্তা তার ভালোবাসার মানুষটিকে কষ্ট না দিতে অনুরোধ করলেও সেখানে প্রেমিকের নাম ঠিকানা উল্লেখ ছিল না। মাত্র ৪৫ টাকা রাখা ছিল সেখানে, যা চিরকুটে মসজিদে দিয়ে দিতে উল্লেখ করেছিল শান্তা। এ ব্যাপারে থ্নাায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, শান্তার ৬ বছর পূর্বে রাঙ্গামাটিয়া এলাকায় অপর একটি বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই তার এ বিবাহের বিচ্ছেদ ঘটেছিল। তখন থেকেই সে বাপের বাড়িতে থাকতো। পরেই জড়িয়ে পড়েন নতুন এক প্রেমে, যে প্রেম তাকে নিয়ে গেছে অচিনপুরে…

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.