বান্দরবান: দশ কোটি টাকা ব্যয়ে বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজ নগর-গজালিয়া সড়ক সংস্কার কাজে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজ নগর-গজালিয়া সড়কটি ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮ কি.মি. সংস্কার কাজের বিপরীতে টেন্ডার আহ্বান করে বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কাজটি পায় অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা এবং র্যাব আরসি নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজও শুরু করেছে। কিন্তু সড়কটি সংস্কার কাজে ঠিকাদার চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার কারণে প্রতিবাদ জানিয়ে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিত্বে সরেজমিনে পরির্দশন করে দেখা যায়, সড়কটি সংস্কার করতে গিয়ে পুরাতন ইটগুলো তুলে তার ভেতর ভালো ও মজবুত ইট অবৈধভাবে অন্যত্রে বিক্রয় করে দিচ্ছে ঠিকাদার। সড়ক সংস্কার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট। নির্মাণ কাজে ৮ ইঞ্চি নদীর বালি ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও নামেমাত্র পাহাড় কাটা মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও নির্মাণ কাজে মানা হচ্ছে না কোনো নিয়ম। সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্য সহকারী আবুল বাশার স্বয়ং উপস্থিত থেকে দুর্নীতি ও অনিয়মে ঠিকাদারদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
আজিজ নগর ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল হাসেম এবং স্থানীয় আব্দুল গফুর ও নুরু মিয়া জানান, রাস্তার পুরাতন ইটগুলো তুলে ফেলে ভালো ও মজবুত ইটগুলো আজিজ নগর চেয়ারম্যান পাড়া কারিতাস অফিসের মোড়ে (কক্রবাজারের হারবাং) এলাকায় একটি জায়গা ভাড়া করে সেখানে স্টক করে রেখেছে। প্রত্যেক রাতে ঠিকাদাররা ট্রাকে করে এসব সরকারি ইট বিভিন্ন জায়গায় বিক্রয় করছে। নিম্নমানের ইটের খোয়া রাস্তায় ব্যবহার করা হচ্ছে। একটু জোরে পায়ের চাপ পড়লেই গুড়ো হয়ে যাচ্ছে এসব ইটের খোয়া।
ওয়ার্ক অর্ডারে যে পরিমাণ ইটের খোয়া, বালি ফিলিং, বেইজ ও সাব বেইজ করার নিয়ম রয়েছে তার কিছুই মানা হচ্ছে না। নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করে ঠিকাদার যেনতেনভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে সামনের বর্ষা মৌসুমে এই সড়কটি ভেঙে গিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোকশান যাবে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউছুফ জানান, সড়ক সংস্কার কাজে কোনো প্রকারের দুর্নীতি ও অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। এই কাজে কোনো দুর্নীতি হয়ে থাকলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভালো ইটগুলো অবৈধভাবে বিক্রয় করার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, এ ব্যাপরে ঘটনাস্থলে ইঞ্জিনিয়ার পাঠানো হয়েছে। স্টক করা সরকারি ইটগুলো কক্রবাজার এলাকা থেকে সরিয়ে বান্দরবানের সীমানায় নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাস্তার পুরাতন ভালো ইট অবৈধভাবে বিক্রয় করায় ঠিকাদারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে।