পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে এগিয়ে – সাকিব

দুর্দান্ত প্রতাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ও টোয়েন্টি২০ ম্যাচ জয় করেছে টাইগাররা। ছোট ফরম্যাটের এই ২ ভার্সনেই আজহার আলী-আফ্রিদিদের গুঁড়িয়ে দিয়ে ‘বাংলা ধোলাই’ করেছেন মাশরাফি-সাকিবরা। এবার মিশন ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। আগামী মঙ্গলবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে টেস্ট সিরিজের প্রথমটি। এই লক্ষ্যে ২ দলই খুলনায় প্রথম দিনের মতো অনুশীলন করেছে। বাংলাদেশের অনুশীলনের শুরুতেই সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ওয়ানডে ও টোয়েন্টি২০ ক্রিকেটের সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি সরাসরি জয়ের লক্ষ্যের কথা না জানালেও বলেছেন, পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে। অন্যদিকে, চলতি সিরিজে ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স তাদের টেস্ট সিরিজেও আত্মবিশ্বাস যোগাবে। সেক্ষেত্রে ৩ বিভাগে সেরাটা দিতে পারলে রেজাল্ট পক্ষে আসবে বলে মনে করছেন সাকিব।

টেস্টের লক্ষ্যের কথা জানতে চাইলে সরাসরি এর উত্তর দেননি সাকিব। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘বিশেষ কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করে টেস্ট খেলা উচিত নয় আমাদের। আমরা যদি ওয়ানডে পারফরম্যান্সের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারি তবে টেস্ট সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’

সাকিব আরও যোগ করেছেন, ‘যদিও ওদের (পাকিস্তান) ব্যাটিং বিভাগে কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। কিন্তু আমাদের বোলিং আক্রমণ ওদের চেয়ে ভাল। অভিজ্ঞতার দিক থেকে ওদের ব্যাটিং সাইডটা অনেক ভলে হতে পারে। কিন্তু আমাদের ব্যাটসম্যানরা এখন ভাল ফর্মে আছে। আমরা যদি আমাদের বর্তমান পারফরম্যান্সের বিচারে চিন্তা করি, তাহলে আমাদের ব্যাটিংও ভাল। এ ছাড়াও আমার বিশ্বাস, ফিল্ডিংয়ে আমরা ওদের চেয়ে এগিয়ে। এই ৩ বিভাগে ভাল খেলতে পারলে আমার প্রত্যাশা, টেস্ট সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৮টি টেস্ট খেলেছে। এর সবগুলোতেই পরাজয় বরণ করেছে। এর মধ্যে ৪টি টেস্টে ১০ উইকেটও ফেলতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। এবার অবশ্য প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তার পরও প্রশ্নটা ঘুরে ফিরে আসছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা এখনো ২০ উইকেট নিতে পারিনি; এটা নিয়ে এবার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা— এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি না পিচ কেমন হবে। সবকিছু নির্ভর করবে পিচের ওপর। অনেক টেস্ট ম্যাচ আছে ১০ উইকেটও কেউ নিতে পারে না, এগুলো আসলে নির্ভর করে উইকেট কেমন তার ওপর। অবশ্য আমাদেরও ভাল বোলিংও করতে হবে। বোলাররা যদি উইকেটে থেকে কোনো সাহায্য নিতে পারে; সেক্ষেত্রে সুযোগ থাকবে ওদের ২০ উইকেট তুলে নেওয়ার।’

এই দলটা নিয়ে কতটা আশাবাদী টেস্ট মিশনে নামতে? এই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আমি তো বিশ্বাস করি, অবশ্যই সম্ভব। দলে কয়েকটা চেঞ্জ আছে। কিছু নতুন খেলোয়াড় দলে এসেছে। দলে যারা ওয়ানডে খেলেছে; তাদের মনের মধ্যেও বিশ্বাস আছে। পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণের বেশিরভাগই আমরা খেলেছি। খুব কঠিন মনে হচ্ছে না। যারা দলে নতুন এসেছে তাদেরও বিশ্বাস থাকবে, দলটা যেহেতু ভাল করছে আমাদেরও ভাল কিছু করতে হবে। এবং তারা ভাল খেলার প্রেরণা পাবে সেখান থেকেই।’

মাশরাফি চলতি সিরিজে অসাধারণ অধিনায়কত্ব করেছেন। মুশফিক টেস্টে অধিনায়কত্ব করবে। এটা কি মুশফিকের মধ্যে কোনো চাপ সৃষ্টি করবে? মাশরাফি-মুশফিকের অধিনায়কত্বের মধ্যে পার্থক্য কতটুকু মনে হয়েছে আপনার কাছে? এ প্রশ্নে সাকিব বলেছেন, ‘আমরা কখনো দলের ভেতরে এগুলো নিয়ে চিন্তা করি না। টেস্ট এক ধরনের খেলা; ওয়ানডে ভিন্ন ধরনের খেলা। এগুলো নিয়ে আসলে তুলনা করার কিছু না। ২ জনই ভাল করছে দলের হয়ে; ২ জনই দলের জয়ে ভূমিকা রাখছে। এটাই একটি ভাল দলের লক্ষণ।’

অনেক দিন পর টেস্ট খেলবেন; এটা কি কোনো প্রভাব ফেলবে দলের মধ্যে? এমন প্রশ্নে সাকিব বলেছেন, ‘আমি ছাড়া সবাই লংগার ভার্সন খেলেছে। আমার মনে হয় না, কোনো সমস্যা হবে। চেষ্টা করব এই ২ দিনে যতটা প্রস্তুতি নেওয়ার।’

এক সময় বাংলাদেশ ৫ দিন খেলার চেষ্টা করত; এখন লড়াই করার জন্য মাঠে নামে; এই পরিবর্তনটা আপনি কিভাবে দেখছেন? এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘যত দিন যাবে তত উন্নতি আসবে। উন্নতি আসাটাই স্বাভাবিক। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে, আমরা কমপক্ষে ঘরের মাটিতে যেকোনো দলের সঙ্গে ফাইট করতে পারি।’

আপনি কেমন উইকেট চান? এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘আমি কেমন উইকেট চাই এটা বড় ব্যাপার নয়। টিম ম্যানেজমেন্ট কেমন উইকেট চায় সেটাই বড় ব্যাপার। এটা টিম ম্যানেজমেন্টই ভাল বলতে পারবে।’

নিজের বোলিং নিয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী? এ প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘একটু বেশি বোলিং করার অনুশীলন করছি। এটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ইনিংসে বোলিং করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

সাকিব আরও যোগ করেছেন, ‘অনেকক্ষণ বোলিং করতে চাই না। অনেকক্ষণ বোলিং করলে ওরা অনেকক্ষণ ব্যাটিং করার সুযোগ পাবে। চেষ্টা থাকবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওদের অলআউট করার।’

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.