অযত্নে বাঁশখালীর পাউবো অফিস

0

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী: বাঁশখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসে দীর্ঘদিন যাবৎ জাতীয় পতাকা তোলা হয় না। জাতীয় কোন দিবসে কিংবা কোন কর্মকর্তা তদন্তে এলে সেই খবর পেলে অফিসে পতাকা তোলা হলেও একটি সরকারী অফিসে অন্য কোন সময় জাতীয় পতাকা তোলা হয় না। তাছাড়া অফিসের পিয়ন প্রতিদিন অফিস খোলা এবং বন্ধ করলেও কোন কর্মকর্তা ঐ অফিসে বসে কখনও কাজ করার সময় হয় না। ফলে অফিসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে।

সূত্রমতে, বাঁশখালীতে কয়েকশ কোটি টাকার কাজ পানি উন্নযন বোর্ড এর কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট টিকাদারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাঁশখালীর গুনাগরীতে অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুবিশাল অফিস ও কর্মকর্তা এবং অফিস সহকারীদের জন্য দুইটি সুবিশাল কোয়ার্টার। অফিস সহকারীরা কোয়ার্টারে থেকে অফিসের দেখভাল করলেও কর্মকর্তারা প্রায় সময় নানা কাজের অজুহাতে চট্টগ্রাম শহর সহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেন। তাছাড়া অফিসে কখনও আসলেও অফিস সহকারীদের নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে তেমন অফিসে বসার সময়ও তাদের হয়না বলে অভিযোগ কর্মচারীদের। বাঁশখালী পানি বোর্ডের কর্মকর্তাদের এ ধরনের অফিস বিমুখতা সাধারণ জনগণকে বিষ্মিত করলেও কেউ প্রয়োজনের তাগিদে তাদের খোঁজ খবর নিলে তারা চট্টগ্রাম অথবা ঢাকায় অফিসের কাজে রয়েছে নতুবা প্রকল্পের সাইটে রয়েছে বলে সাব জবাব দেন। বর্তমান বাঁশখালীর বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ মাটি এবং ব্লকের কাজ চলছে বর্তমান সাংসদের নেতৃত্বে ২১০ কোটি টাকার বরাদ্দের অনুকূলে।

এসব কাজের তথ্য স্থানীয় সাংাবিদকরা সংগ্রহের জন্য বাঁশখালী পাউবো অফিসে বারবার ধর্ণা কর্মকর্তাদের পাওয়া যেন দূরহ ব্যাপার। গত রবিবার এ ব্যাপারে দৈনিক আজাদীর প্রতিনিধি অন্যান্যরা পাউবো অফিসে গেলে প্রথমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ধীমান চৌধুরীর সাথে মোবাইলে (১১ টা ৩৬ মিনিট) যোগাযোগ করা হলে তিনি অফিসের কাজে চট্টগ্রাম শহরে রয়েছে বলে এই প্রতিনিধিকে জানান। পরবর্তীতে দীর্ঘক্ষণ অফিসে অবস্থান করলেও এক বয়োবৃদ্ধ কর্মচারী এসে অফিসের কোন তথ্য দেওয়া যাবে না বলে জানালেও অফিসের কর্মকর্তারা কখন আসে কখন যায় সে ব্যাপারে সে কোন তথ্য দিতে পারেনি। তবে সে স্বীকার করে প্রতিদিন সকালে অফিস খোলা এবং বিকালে অফিস বন্ধ করা নিয়মিত কাজ হলেও কর্মকর্তারা তেমন অফিসে বসেন না।

তাছাড়া জাতীয় পতাকা বিশেষ কোন দিবস ছাড়া উত্তোলনও করা হয় না। দুপুর ২ টা ১২ মিনিটে পাউবোর সার্ভেয়ার লিটন চৌধুরীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি বিশেষ কাজে ছনুয়া যাচ্ছেন বলে এই প্রতিনিধিকে জানান। বাঁশখালী পাউবো অফিসে একজন এসইডি, ৩ জন এসও সহ কয়েকজন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ও একজন সার্ভেয়ার সহ অসংখ্য কর্মকর্তা কর্মচারী থাকলেও অফিস যেন তাদের জন্য হারাম হয়ে গেছে।

তাছাড়া বিগত দিনে কর্মকর্তারা এই অফিসে যথাযথ না আসায় এবং নিয়মিত অফিস না করায় স্থানীয় মাদক সেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলে পাউবোর পক্ষ থেকে ডায়েরীও করা হয়েছিল। সুবিশাল এলাকা জুড়ে পাউবো অফিস ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের কোয়ার্টার থাকলেও সেটা কার্যত অলস পড়ে আছে। বাঁশখালীর ১৯৯১ এর পর থেকে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ জুড়ে কোটি কোটি টাকার কার্যক্রম হলেও বাস্তবে উত্তর একটাই পাওয়া যায় জোয়ার ভাটায় ভেসে গেছে বেড়িবাঁধ। বর্তমান সরকারের প্রতিক্ষিত এবং বাঁশখালীর উপকূলবাসীর প্রাণের দাবী উপকূলীয় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত কাজ যদি সেই পূর্বের মত হয় বাঁশখালীবাসী আবারও জোয়ার ভাটার পানিতে ভাসবে এবং পিছিয়ে পড়বে আরো কয়েক যুগ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.