নিজস্ব প্রতিবেদক : শহীদ জায়া ও লেখক বেগম মুশতারী শফী বলেছেন, জ্ঞান ভিত্তির প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ বিনির্মাণে আজকের শিশু কিশোরদের সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঘরে তুলতে হবে। তাদেরকে কালিমা ও দুষণের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে হবে। তাদের বোধ শক্তিকে প্রখর ও মানবিকতায় সংবেদনশীল করতে না পারলে ভবিষ্যৎ অনুজ্জল হয়ে থাকবে। তিনি আজ শুক্রবার সকালে নগরীর ডিসি হিল নজরুল স্কোয়ার প্রাঙ্গণে অমর একুশে বই মেলার শিশু কিশোর চিত্রাংকন- সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও শিশু-কিশোর সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ৫২-এর একুশে ফেব্রুয়ারীর ও ভাষা আন্দোলনে বাঙালির রাষ্ট্র চিন্তার মূল সূত্র। তাই আর একুশ শুধু ক্যালেন্ডারের নির্দ্দিষ্ট তারিখই নয়, একুশ মানে বাঙালির মনোজগতের পরিশুদ্ধির প্রতিদিনের অবলম্বন। তিনি আজকের শিশু-কিশোরদের মনোজগতের বিকাশের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আজ আমরা তাদের পিঠে শরীরের ওজনের চেয়ে ভারী পাঠ্য বইয়ের বোঝা চাঁপিয়ে দিচ্ছি। শুধু পরীক্ষায় ভালো ফলের জন্য মানষিক নিপীড়ন চালাচ্ছি। মনে রাখতে হবে পরীক্ষায় ভালো ফল করলেই মেধাবী হওয়া যায় না। মেধাবী হতে হলে সুকুমারবৃত্তির চর্চার মাধ্যমে মনোজগতের উন্নত ঘটাতে হবে।
উদ্ধোধকের ভাষণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও মেলা পরিষদের মহাসচিব চৌধুরী হাসান হাসনি বলেন, পাকিস্তান নামক উদ্ভট ও অবৈজ্ঞানিক রাষ্ট্রের কবর রচনার পথ সুগম করে বাঙালির সফল ভাষা সংগ্রাম। আজ এই সংগ্রামের ফলক একুশে ফেব্রুয়ারী। বিশ্বের ৬ হাজার মাতৃত্বের অস্তিত্ব রক্ষার প্রেরণা ।
বিশেষ অতিথির ভাষণে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মহসীন চৌধুরী বলেন, ৭৫-এর পরবর্তীতে নতুন প্রজন্মকে বাঙালীর জাতি সত্ত্বা বিরোধী অপশক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে ইতিহাস বিকৃতি ও ভুল পাঠ দিয়েছে। তাই তাঁদের শোধরানোর দায়িত্ব আমাদের সকলের। চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও লেখক মিজানুর রহমান বলেন, আকাশ সংস্কৃতির কুপ্রভাব থেকে শিশু-কিশোরদের মুক্ত রাখতে হবে।
তাই আমাদের সংষ্কৃতি ও ঐতিহ্যের শিকড়ের রস আস্বাদানে তাদের উৎসাহি করতে হবে। স্বাধীন বাংলা বেতার ও টেলিভিশন শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা সুজিত রায়ের সভাপতিত্বে ও একুশ মেলা পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায়ে অনুষ্ঠিত শিশু সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শিল্পী অঞ্জন রায়, নারী নেত্রী ও শিক্ষাবীদ রিংকু ভট্টাচার্য, নৃত্য শিল্পী রতœা দাশ গুপ্ত। এই সময় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক সংগঠক নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, কবি সজল দাশ, দিলীপ সেন গুপ্ত,রতন চক্রবর্তী, সূচনা বণিক, শ্রাবণী দে, অন্তরা দে, তৃষ্ণা চৌধুরী, সাজু দাশ, অদীর দাশ, আবুল মিয়া, মো: আলমগীর প্রমুখ।
শিশু-কিশোর চিত্রাংকন, দেশের গান, লোক সংগীত, লোক নুত্য, সাধারণ নৃত্য, প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুল ওশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।