মুমতাজ কাদরির মৃত্যুদণ্ডে স্তব্ধ পাকিস্তান

0

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পাকিস্তানের প্রাদেশিক গভর্নর সালমাল তাসিরের ঘাতক মুমতাজ কাদরির দাফন হওয়ার কথা রয়েছে মঙ্গলবার। তাই কোনো রকমের অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ওই রাজ্যের রাজধানী রাওয়ালপিন্ডি শহরটিকে। রাজধানী ইসলামাবাদসহ অন্যান্য শহরেও নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন।

রাওয়ালপিণ্ডির এক কারগারে সোমবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে চারটার দিকে তার মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হয়েছিল।

ব্লাসফেমি আইনের সংস্কার চাওয়ায় পাঞ্জাব প্রদেশের তৎকালীন গভর্নর সালমান তাসিরকে ২০১১ সালে ইসলামাবাদে গুলি করে হত্যা করেছিল তারই দেহরক্ষী মুমতাজ কাদরি। এ হত্যাকাণ্ড তাকে ‘নায়ক’ বানিয়ে দিয়েছিল। কেননা পাকিস্তানের ধর্মভীরু লোকজন তার এ খুন নিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল। তাই সোমবার তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে এসেছিল হাজার হাজার মানুষ। এ ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, লাহোর ও করাচিসহ বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। তারা টায়ার জ্বালিয়ে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে রাখে এবং সরকার বিরোধী শ্লোগান দেয়। তবে ওই বিক্ষোভ ঘিরে কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার সালমান তাসিরের ঘাতেকের দাফনকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক রয়েছে প্রশাসন। তারপরও দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের চাপা আতঙ্ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে আশ্চর্য রকমের নীরবতা বিরাজ করছে রাজধানী ইসলামাবাদে। শহরের স্কুল ও মার্কেটগুলো বন্ধ রয়েছে। সেখানকার প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। মুমতাজের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইসলামাবাদের আইনজীবিরা।

মুমতাজ কাদরির জানাজাতে বিপুল সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ ঠেকাতেই ইসলামাবাদে অতিরিক্ত নিরাপত্তা আরোপ করা হয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে। কেননা রাজধানীর পাশেই রয়েছে রাওয়ালপিন্ডি শহরটি। দেশের অন্যান্য বড় বড় শহরগুলোতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোনো রকমের সহিংস হামলা এড়াতে করাচিতে গত শুক্রবার থেকেই মোটরবাইক চালানো নিষিদ্ধ রয়েছে।

এরপরও কাদরির জানাজায় বিপুল লোক সমাগম হবে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা তার মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ঘটনাটি গণরোষে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ধর্মভিত্তিক দলগুলো এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ‘সোমবার’ দিনটিকে ‘কালো দিবস’ ঘোষণা করেছে জামায়েতে ইসলামি দলটি। তার ফাঁসির দিন ধার্য করার পর গত শুক্রবার থেকেই চলছে বিক্ষোভ। যদিও ওইসব বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে। বিভিন্ন চ্যানেলগুলো থেকে বার বার দেশবাসীকে শান্ত থাকার ঘোষণা প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.