মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচারণা

0

আর দুই দিন বাকি। এর পরই ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের ২০১৫-১৭ মেয়াদের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন। বিভিন্ন পদের জন্য নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের মনে জয় করতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে প্রার্থীদের প্রচার।

 

ব্যবসায়ীদের সংগঠনের কার্যালয়গুলো এখন নির্বাচনী আমেজে সরগরম হয়ে উঠেছে। প্রার্থীরা ভোটারদের সমর্থন পেতে জোর জনসংযোগ করছেন। নানা ধরনের উপহার নিয়ে হাজির হচ্ছেন ভোটারদের কাছে। ভোটার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মাথায় রেখে দিচ্ছেন উপহার।

 

প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। রাজধানীর তারকা হোটেল-ক্লাবগুলোতে এখন উৎসবের আমেজ। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই হোটেলে বিভিন্ন পার্টির নামে চালানো হচ্ছে প্রচার। অনেক প্রার্থী সমর্থন আদায়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দৌড়ঝাঁপ অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে।

 

আগামী ২৩ মে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।  প্যানেলগুলো হলো- নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদের নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন পরিষদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসাইন-ড. কাজী এরতেজা হাসান ও শাফকাত হায়দারের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ (অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ) এবং বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলীর নেতৃত্বাধীন স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদ (চেম্বার গ্রুপ)। প্রতিটি প্যানেলে রয়েছে নতুনদের আধিপত্য। নতুনদের ইমেজকে কাজে লাগিয়ে প্রতিটি প্যানেল জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

 

মাতলুব আহমাদের নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন পরিষদের প্যানেলে চেম্বার গ্রুপ থেকে মনোনীত প্রার্থীরা হলেন মো. বজলুর রহমান, প্রবীর কুমার সাহা, হাসিনা নেওয়াজ, এ কে এম সাহিদ রেজা, নাগিবুল ইসলাম দিপু, শেখ ফজলে ফাহিম, মো. হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, আমিনুল হক শামীম, মো. আবুল খায়ের মুরসালিন পারভেজ, মাহবুবুর রহমান খান, গাজী গোলাম আসরিয়া, নূরুল হুদা মুকুট, মো. নিজাম উদ্দিন, দীলিপ কুমার আগরওয়াল, আনোয়ার সাদত সরকার ও রেজাউল করিম রেজনু। অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে উন্নয়ন পরিষদের প্রার্থীরা হলেন- মো. হেলাল উদ্দিন, আবু মোতালেব, মো. সফিকুল ইসলাম ভরসা, মো. আবু নাসের, মো. নিজাম উদ্দিন রাজেস, রাব্বানী জব্বার, শোয়েব চৌধুরী, মো. মুনতাকিম আশরাফ, হারুন-অর রশিদ, মো. হাবিবুল্লাহ ডন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এনায়েত হোসেন চৌধুরী, কে এম আকতারুজ্জামান, মো. আমীন হেলালী, শামীম আহসান ও আবদুর রাজ্জাক।

 

স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদ : এই প্যানেলে মনোয়ারা হাকিম আলীর চেম্বার গ্রুপের প্রার্থীরা হলেন চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার থেকে মনোয়ারা হাকিম আলী, আবুল কাশেম আহমেদ, লক্ষ্মীপুর চেম্বারের দেওয়ান সুলতান আহমেদ, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, মোহাম্মদ কোহিনুর ইসলাম, তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু, মোহাম্মদ মাসুদ, হাসিন আহমেদ, মো. আমিনুল বারী, মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, মাসুদ পারভেজ খান (ইমরান), তানজিল আহমেদ, হুমায়ূন রশিদ খান পাঠান, মোহাম্মদ আবুল ওয়াহেদ সরকার, আঞ্জুমান সালাউদ্দিন ও রেজা শাহ ফারুক।

 

ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ : এই পরিষদের প্রার্থীরা হলেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, ড. কাজী এরতেজা হাসান, শাফকাত হায়দার চৌধুরী, খন্দকার রুহুল আমিন, মো. মিজানুর রহমান বাবুল, মো. জামিউল আহম্মেদ, মো. আলি জামান, ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ, আবুল আয়েস খান, হাজি মোয়াজ্জেম হোসেন, মো. আসলাম আলী, এমজিআর নাসির মজুমদার, তাহের আহম্মেদ সিদ্দিক, মো. ইব্রাহিম, মোহাম্মদ উল্লাহ পলাশ ও মাহমুদা মুস্তাকিম রুবি।

 

ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের পরিচালক প্রার্থী তরুণ উদ্যোক্তা ও আইনজীবী ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাদের প্রথম বিজয় হলো আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনেছি। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ প্যানেল ঘোষণা না হলে নির্বাচনেরই প্রয়োজন হতো না। এখন একজন ভোটার তার পছন্দনীয় ব্যক্তিকে ভোট দিতে পারবেন।’

 

নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তরুণ এ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘এফবিসিসিআইকে আদর্শের মূল জায়গায় ফেরানো, জবাবদিহি ও  ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা ও ব্যবসাসংক্রান্ত আইনি জটিলতা নিরসনে কাজ করব। এটিকে আদর্শের মূল জায়গায় ফেরানো গেলে নামে নয়, প্রকৃত অর্থে এটি ব্যবসায়ীদের পার্লামেন্ট হবে। এফবিসিসিআইকে একটি বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান ও কার্যকর সংগঠন হিসেবে ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোক্তাদের স্বার্থ রক্ষাসহ ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। ’

 

এদিকে, এবার ভোটারদের মাঝেও ব্যাপক সচেতনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। যোগ্যতা বিচারে ভোট দেবেন তারা। অনেক ভোটারই পরিবর্তন ও নতুনদের নির্বাচিত করার ব্যাপারে মতামত দিচ্ছেন। যাদের সহজে পাওয়া যায় এবং সমস্যার কথা বলা যায়, তাদের এফবিসিসিআইতে আনতে চান অনেকে।

 

নির্বাচনে পরিচালক পদপ্রার্থী শেখ ফজলে ফাহিম। তরুণ এই ব্যবসায়ী গোপালগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি থেকে মনোনীত হয়েছেন। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এফবিসিসিআইয়ে এককভাবে কিছু করা যায় না। এখানে টিম ওয়ার্ক করতে হয়। ঐক্যবদ্ধভাবে জেলা চেম্বারগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কাজ করব। একই সঙ্গে দেশের সব শ্রেণির ব্যবসায়ীর উন্নয়নে কাজ করতে চাই।’

 

ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নে সরকারকে সাহায্য এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ী চেম্বার ও ব্যবসায়ী কমিউনিটির মধ্যে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে যা যা করা দরকার তা ঐক্যবদ্ধভাবে করবেন বলে জানান তিনি।

 

উল্লেখ্য, এবার চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপে ১৬টি করে মোট ৩২ পদে সরাসরি নির্বাচন হবে। সর্বমোট ৫২ জন পরিচালক নিয়ে এফবিসিসিআইয়ের বোর্ড গঠন হবে। এর মধ্যে ৩২ জন পরিচালক সরাসরি নির্বাচন করবেন। বাকি ২০ জন পরিচালক দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে মনোনীত হয়ে আসবেন।

 

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৩ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ মে সভাপতিসহ একজন সিনিয়র সহসভাপতি ও একজন সহসভাপতি পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হবেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.