সিটিনিউজবিডি : মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে অন্যান্য বারের মত আগামী ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের বাজেটেও ব্যাংকিংখাতের ওপর নির্ভর করতে হবে।
যদিও বলা হচ্ছে আসন্ন বাজেটে ঘাটতি ৫ শতাংশের বেশি হবে না।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগামী ৪ জুন যে বাজেট জাতিকে দিতে যাচ্ছে তাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
অর্থমন্ত্রী প্রাক-বাজেট আলোচনাগুলোতে বাজেটের আকার নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন। এ ছাড়াও রাইজিংবিডিকে বাজেট নিয়ে বিশেষ সাক্ষাতকারে বাজেটের আকার ৩ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এর কারণ হিসেবে বলেছিলেন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বড় হওয়ায় সামাগ্রিক বাজেটের আকারও বেড়ে গিয়ে ৩ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
একই সঙ্গে তিনি ঘাটতি বাজেট সম্পর্কে বলেন, বাজেটের আকার বড় হলেও বাজেট ঘাটতি পাঁচ শতাংশের মধ্যেই থাকবে। ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। তবে আমি তা মনে করিনা। ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকবে।
সূত্র জানায়, বাজেটের আকার বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি গিয়ে দাঁড়াবে ৮৮ হাজার কোটি টাকা। বড় বাজেটে এ ঘাটতি মোকাবিলায় সিংহভাগই নির্ভর করতে হবে ব্যাংক ঋণের ওপর। এর পাশাপাশি সরকারকে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়াতে হবে। এতে করে শেষ মুহূর্তে করের হারও আওতা বেশ খানিকটা বাড়ানো হচ্ছে।
করের আওতা বাড়ানোর প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, কর দেওয়ার যোগ্য কিন্তু তারা এখনো করের আওতার বাইওে রয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এমন কয়েকটি নতুন খাত চিহ্নিত করেছে। আশা করছি রাজস্ব আদায় অনেকটাই বাড়ানো যাবে।
এ প্রসঙ্গে এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বলেন, রাজধানিসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোতে বাড়ির মালিকরা বাড়ি ভাড়া দিয়ে অনেক আয় করেন। কিন্তু তারা আয়কর দেন না। চলতি অর্থবছর ব্যাংক হিসাবখুলে বাড়িভাড়া পরিশোধের কথা বলা হলেও তা ঠিকমত অনুসরণ করা হয়নি। এবার বাড়ির মালিকদের করের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া আরো কয়েকটি খাত চিহ্নিত করা হয়েছে। আশা করছি রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব হবে। ফলে ব্যাংকের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে বলে মনে হয় না।
অর্থ মন্ত্রণালযের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত আগামী অর্থবছরে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা হয়েছে দুই লাখ ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর থেকে আয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা।
এনবিআর বহির্ভূত কর ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত প্রাপ্তি ধরা হয়েছে (এনটিআর) ২৭ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা।
আগামী বাজেটে ৮৮ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি মোকাবিলা করা হবে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি সূত্র থেকে ঋণ নিয়ে। বিদেশি সূত্র থেকে প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর দেশী খাত থেকে নেওয়া হবে ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নেওয়া হবে সঞ্চয়পত্র থেকে।
বাকি ৩৮ হাজার কোটি টাকা নেওয়া ব্যাংকিং খাত থেকে দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদি ঋণ হিসাবে।