সিটিনিউজবিডি : বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় পরিচয় গোপন রেখে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভূক্তি ঠেকাতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রোহিঙ্গা অধ্যুষিত হিসেবে ১৪ উপজেলাকে আগে থেকেই বিশেষ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, কক্সবাজার সদর, চকোরিয়া, টেকনাফ, রামু, পেকুয়া, উখিয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী, বান্দরবানের সদর, আলিকদম, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি এবং রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি ও কাপ্তাই। নতুন করে আরও অন্তত ৩০ উপজেলায় বিশেষ নজরদারি করা হবে। এগুলো হল চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, পটিয়া, চন্দনাইশ, সীতাকুণ্ড, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, রাউজান, সাতকানিয়া, আনোয়ারা, বোয়ালখালী, রাঙগুনিয়া, সন্দ্বীপ, হাটহাজারী ও মিরসরাই, খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, মহালছড়ি, রামগড় ও মাটিরাঙ্গা, বান্দরবানের রুমা, থানছি ও রোয়াংছড়ি এবং রাঙ্গামাটি সদর, জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, কাউখালী, লঙগদু, নানিয়ারচর, বরকল, রাজস্থলী।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বিগত বছরগুলোতে কক্সবাজার, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলায় ইসির নজর থাকলেও এবার চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়িকেও টার্গেট করেছে ইসি। এর অংশ হিসাবে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলায় ইসির উপ সচিব পর্যায়ের চার কর্মকর্তাকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
জানা যায় , মিয়ানমার থেকে দুই যুগ আগে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়ার পর তাদের অনেককে বাংলাদেশে ভোটার তালিকায় নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করার নজির পাওয়া গেছে। এসব রোহিঙ্গা পরে বিভিন্ন দেশে গিয়ে অপরাধমূলক তৎপরতায় অংশ নিয়ে ধরা পড়ার পর তাদের পরিচয় ফাঁস হয়। এরপর থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সরকার। গত বছর ২৩ অক্টোবর গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানায় এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করে।
এরপর সম্প্রতি কক্সবাজারে এরকম ৯৮ জন রোহিঙ্গাকে সনাক্ত করে তাদেরকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ভৌগলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক পরিবেশ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার কারণে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবৈধভাবে বাসকারী রোহিঙ্গারা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। অবৈধভাবে বসবাসকারী এই রোহিঙ্গারা ১৪ উপজেলা ছাড়াও বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণেই বৃহত্তর চট্টগ্রামের উপর বিশেষ নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।