ধরা পড়লেও উৎস এবং কোথায় যাচ্ছে তা নিয়ে রহস্যের শেষ নেই

0

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী : চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের বিকল্প সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ইয়াবা পাচারকারী আটক হচ্ছে বাঁশখালী থানা পুলিশের জালে। কিন্তু এই ইয়াবা কারা পাচার করছে অথবা কোথায় যাচ্ছে তার কোন সুরাহা হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

জানুয়ারী থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ইয়াবা নিয়ে কম পক্ষে ২০-২৫ টি মামলা হয়েছে বাঁশখালী থানায়, উদ্ধার হয়েছে কয়েক হাজার ইয়াবা। ইয়াবা গ্রেফতারের পর গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা হলেও তারা কখন কিভাবে জামিন নেয় সে ব্যাপারে কোন খোঁজ খবর রাখা হয় না। ফলে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আটককৃতদের নানা কৌশলে জামিন নিয়ে পুনরায় একই কাজে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাঁশখালীর প্রধান সড়ক ইয়াবা পাচারকারীরা ৩শ, ৪শ, ৫শ করে ইয়াবা নিয়ে পাচারকালে আটক হয় নানা ভাবে পুলিশের হাতে। এমনকি অনেক সময় হাজার দুয়েক ইয়াবাও আটক করা হয়েছে। পুলিশ ইয়াবা পাচারকারীদের আটক করে পরবর্তীতে মামলার মাধ্যমে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও পরবর্তীতে তারা কোন উপায়ে কিভাবে বের হয়ে যায় সেটার কোন হদিছ মিলেনা শুনা যায় বাঁশখালীতেও বেশ কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসার সাথে নানা ভাবে জড়িয়ে এই বিকল্প পথে ইয়াবা আনায়ন করে থাকে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের বাঁশখালী পেকুয়া হয়ে সড়কটি সহজ হওয়ায় এ সড়ক দিয়ে প্রায় সময় ইয়াবা পাচারের নিরাপদ রুট ভেবে পাচারকারীরা দেদারছে ইয়াবা দেশের সর্বত্র পাচার করছে। সর্বশেষ পুলিশ কুতুবদিয়ার কৈয়ার বিল এলাকার আবদুর রাজ্জাকের পুত্র মোঃ জসীম (২৫)কে ১৫০টি এ্যামফিটামিন যুক্ত ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে। এর আগে পুলিশ কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ছাবরাং ইউপির আলীর ডেইল ১নং ওয়ার্ডের মৃত কাদের হোসেনের পুত্র আবদুল হাফেজ (৩২)কে তল্লাশী চালিয়ে ৫শ পিচ ইয়াবাসহ আটক করে, একই ভাবে মোস্তাক আহমদ নামে এক যাত্রীর কাছে তল্লাশী চালিয়ে ২৩০০ পিচ ইয়াবা পাওয়া যায়। মোস্তাক আহমদ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের খানকার ডেইল এবং মোজাহের মিয়ার পুত্র, সীতাকুন্ড উপজেলার ছিন্নমূল রোহালপুর জঙ্গল ছলিমপুর গ্রামের মোঃ আবদুল জলিলের পুত্র মোঃ হৃদয় হাছান (৩২)কে হাতেনাতে ইয়াবাসহ আটক করে। এসময় তার কাছ থেকে ৪শ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ, পেকুয়া উপজেলার দক্ষিণ মেহেরনামা গ্রামের সৈকত পাড়া এলাকার মৌলভী মাহামুদুর রহমানের পুত্র আবু তাহের (৪০) কে তল্লাশী করে ১ হাজার পিচ ইয়াবাসহ আটক করে থানা পুলিশ, কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার ‎‎নয়াপাড়া গ্রামের মৃত আবুুল মঞ্জুরের পুত্র অলি আহমদ (৫০) কে আটক করেছে বাঁশখালী থানা পুলিশ। উপরোক্ত ইয়াবা পাচারকারীসহ আরো বেশ কয়েকজনকে থানা পুলিশ বিভিন্ন সময়ে ইয়াবাসহ আটক করলেও তাদের গডফাদারদেরকে চি‎িহ্নত করতে পারেনি। বিশেষ করে বাঁশখালী-পেকুয়া সড়কে যে দিনই ইয়াবা উদ্ধারের লক্ষ্যে পুলিশ চৌকি বসানো হয় সেদিনই কিছু না কিছু আটক হয়ে থাকে। অনেকের মতে উখিয়া টেকনাফ থেকে যেসব যাত্রী বাঁশখালী হয়ে চট্টগ্রাম শহরে যায় তাদের অধিকাংশই ইয়াবা পাচারকারী। ইয়াবা পাচার রোধ এবং তাদের গড ফাদারদের আইনের আওতায় আনা সময়ের দাবী হলেও সে ব্যাপারে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাধারণ জনগণের অভিমত। না হয় ইয়াবার মত মরণ নেশা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বিকল্প রুট বাঁশখালী প্রধান সড়ক দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ছোট খাট পাচারকারীরা ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আসলেও পাচারকারীদের বড় চালান যাচ্ছে সাগর পথে। এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে ইয়াবা চালান প্রতিরোধে দিন দিন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আটক যুবকের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা ও রিমান্ডের আবেদন দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছে থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন দৈনিক আজাদীকে জানান।

তিনি আরো বলেন, মরণ নেশা ইয়াবা থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে হলে ইয়াবা পাচার ও বেচাবিক্রি বন্ধ করতে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। সম্প্রতি বাঁশখালী উপজেলা আইনশৃংখলা সভায় ইয়াবাসহ মাদক পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধির পক্ষ থেকে জোর দাবী তোলা হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.