রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলতেে অনকে মূলধন ঘাটতি

0

সিটি বিশেষ :  বভিন্ন সময় অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় মূলধন ঘাটতি বড় আকার ধারণ করেছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা। আর মূলধন ঘাটতি পূরণে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গতকাল বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ বরাদ্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুসরণ শুরু করেছে ব্যাংকগুলো। এতে দেখা গেছে, গত মার্চ ভিত্তিতে অগ্রণী ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৯৩ কোটি টাকা, রূপালীর ৩৫৫ কোটি, সোনালীর ৫৯৯ কোটি, বেসিকের ৩ হাজার ৬৩৪ কোটি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ৬ হাজার ১৫ কোটি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৫৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা।

জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতে মার্চ শেষে মূলধন পর্যাপ্ততার হার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এটি ছিল ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসে মূলধন পর্যাপ্ততার হার হ্রাস পেয়েছে দশমিক ৬২ শতাংশ। এ সময়ে সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, কমার্স, আইসিবি ইসলামিক, বেসিক, বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি।

উল্লেখ্য, মূলধন পর্যাপ্ততা ব্যাংকের সার্বিক অবস্থার ওপর আলোকপাত করে এবং সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে আমানতকারীদের রক্ষা করে। তিন ধরনের মূলধনকে পর্যাপ্ততার হিসাবের মধ্যে নেয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে ঋণ দেয়ার পর সেই ঋণ আদায়ের বিভিন্ন ঝুঁকি, বাজার ঝুঁকি, ব্যবস্থাপনা বা কার্যক্রমজনিত ঝুঁকি। আবার আছে পরিশোধিত মূলধন, বিধিবদ্ধ সংরক্ষণ, রিটেন আর্নিং, ঋণের প্রভিশনিং বা সঞ্চিতিসহ অন্যান্য মূলধন। সব বিবেচনা করে এ মূলধন সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়।

এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলো ৭১ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা মূলধন সংরক্ষণ করলেও মার্চ শেষে সংরক্ষণ করেছে ৬৯ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ মূলধন সংরক্ষণ হ্রাস পেয়েছে ২ হাজার ৪২০ কোটি টাকা।

এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন ধরে মূলধন ঘাটতি পূরণে সরকারের কাছ থেকে সহায়তা দাবি করে আসছে ব্যাংকগুলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকগুলোর মূলধন জোগানের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে এ সময়ে ব্যাংকগুলোকে ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা জোগান দেয়া হয়।

গতকাল বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় ৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছে সরকার।

যদিও এভাবে অর্থসহায়তা দিতে থাকলে ব্যাংকগুলো অনিয়মে আরো উৎসাহিত হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এ বিষয়ে সাবেক ব্যাংকার আবু নাসের বখতিয়ার বণিক বার্তাকে বলেন, ব্যাংকগুলোর লুটপাটের জোগান দেয়া হচ্ছে আমাদের ট্যাক্সের অর্থে। এর জন্য কোনো জবাবদিহিতা নেই, বড় কারো শাস্তিও হচ্ছে না। এভাবে বারবার মূলধন জোগান দিতে থাকলে ব্যাংকগুলোয় অনিয়ম আরো উৎসাহিত হবে। এসব না করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে পুরোপুরি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া উচিত। বণিকবার্তা

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.