দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা ক্ষমতার শীর্ষে, জেলা-উপজেলা নিয়ন্ত্রণ করে ধ্বংস করছে দেশকে : কর্ণেল অলি

0

মো: দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ প্রতিনিধি : লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, প্রাক্তন মন্ত্রী আলহাজ্ব ড. কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, দেশ এখন ক্লান্তিকাল অতিক্রম করছে। সাধারণ মানুষ ঘর থেকে নিরাপদে বের হতে পারছেনা। মসজিদ, মন্দির, গীর্জায় শরীর চেক করে ঢোকানো হচ্ছে। এর জন্য দায়ী রাজনীতিবিদরা। বাংলাদেশ গরীব দেশ নয়, ধনী দেশ। দূর্ভাগ্য হলো রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেশ প্রেম না থাকায় মানুষের দেয়া টাকা যথাযথভাবে ব্যবহার করা হচ্ছেনা। আমাদের দেশ মালয়েশিয়ার মত উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে পরিচিতি হতো। মাত্র ১ হাজার লোকের দূর্নীতির কারণে দেশ এ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এদের মধ্যে কিছু ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও সরকারী কর্মকর্তা রয়েছে, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী। যারা মানুষের রক্ত শোষন করে বিদেশে ব্যবসা ও বাসসস্থান তৈরী করেছে এসকল দূর্নীতিবাজদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকেও বলেছিলাম। কিন্তু তারা এ তালিকা প্রকাশ করে নাই। কারণ তাদের স্বজনদের নাম এ তালিকায় থাকবে বলে। নিজের সম্পদ, গদি রক্ষার জন্য অনেক রাজনীতিবিদ অবৈধ পথ অবলম্বন করেছে। দেশে অনেক সম্পদ আছে, সুশাসন নেই। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা ক্ষমতার শীর্ষে, জেলা, উপজেলা নিয়ন্ত্রণ করে ধ্বংস করছে দেশকে।
তিনি বলেন, ১৯৫৯ সালে পাকিস্তানে গিয়ে তাদের আচরণ দেখে শপথ নিয়েছিলেন একদিন সুযোগ পেলে অস্ত্র হাতে নিয়ে এদেশকে স্বাধীন করবেন। ৩১ বছর বয়সে সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ আসলে ক্যাপ্টেন অলির নেতৃত্বে মেজর জিয়া ও তার এক বন্ধু মুজিবসহ বিদ্রোহ ঘোষণা করে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন এবং দেশ স্বাধীন করেছিলেন। সেদিন দেশ স্বাধীন না হলে আজকে যারা মন্ত্রী, এমপি তারা কেউ মন্ত্রী এমপি হতেন না। আমি আমার অবস্থানে আসতে পারতাম না। হয়তো সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন পদেই অবসর নিতে হতো। এ সুযোগটাকে সৎ পথে, জনগণ এবং মানুষের জন্য কাজে লাগিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলাম। এজন্য প্রয়োজন অবাধ, সুষ্ট, দল নিরপেক্ষ ও মধ্যবর্তী নির্বাচন। বর্তমান সরকারের শাসন আমলে জনগণের কোন অধিকার নেই। বর্তমান এমপিরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি না হওয়ায় তাদের কাছে জবাবদিহিতা নেই। এ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পুলিশ দ্বারা দেশ শাসন করছেন, থানা একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্টানে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কেউ নেই। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ পিস ইয়াবা, হাজার পিস ফেনসিডিল উদ্ধার হলেও তা বন্ধ হচ্ছেনা। এ ব্যাপারে সরকার পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বা মিয়ানমারের সাথে কোন রকম এ মাদক বন্ধ করার জন্য সমঝোতা বৈঠকে বসেন নাই। উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদকে উষ্কানী দিয়ে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে একটি মহল।
তিনি বলেন, সত্যকে ধারণ করে অসত্যকে পরিহার করতে হবে। সরকারের ভাল কর্মকান্ডের মধ্যে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রয়েছে, বাজেট অনেকগুন বৃদ্ধি হয়েছে। আমরা নিজেদের দেশে নিজেরা পরাধীন নাগরিক হিসেবে বসবাস করছি। পাকিস্তান শাসন আমলের চেয়েও খারাপ অবস্থানে রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। নাগরিক অধিকার না থাকলে আমাদের কোন মূল্য নেই। আজ হোক কাল হোক মধ্যবর্তী নির্বাচন হবেই, জনগণ এবং মানুষের শাসন কায়েম হবে।
গতকাল ২৭ আগষ্ট শনিবার বিকেলে দক্ষিণ জেলা গণতান্ত্রিক যুবদলের কর্মী সভা চন্দনাইশ সদরস্থ আমানত ছফা বদরুন্নেসা মহিলা ডিগ্রী কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্টিত হয়। দক্ষিণ জেলা গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি সাহাব উদ্দীন রাশেদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ড. কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমদ বীর বিক্রম। প্রধান বক্তা ছিলেন গণতান্ত্রিক যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি তমিজ উদ্দীন টিটু, বিশেষ বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারি রাজু, বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় এলডিপি নেতা এবিএম শাহজাহান, দক্ষিণ জেলা এলডিপির যুগ্ম সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া সুমন, উপজেলা এলডিপির সভাপতি মোতাহের মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আকতার আলম, অধ্যাপক আবু তাহের ছিদ্দিকী।
দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক একরাম হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন দক্ষিণ জেলা যুবদল নেতা এডভোকেট ইকবালুর রহমান, যুবদল নেতা যথাক্রমে সাইফুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মহিউদ্দীন, মাষ্টার আবু তাহের প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.